ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রথম ম্যাচ সহজে জিতলেও বাকি ম্যাচগুলো নিয়ে আমরা সিরিয়াস

জয় ছাড়া কিছু ভাবছি না ॥ তামিম

প্রকাশিত: ০৬:২৪, ৯ নভেম্বর ২০১৫

জয় ছাড়া কিছু ভাবছি না ॥ তামিম

মোঃ মামুন রশীদ ॥ এতটা সহজে আত্মসমর্পণ করবে জিম্বাবুইয়ে সেটা ভাবনাতেও ছিল না বাংলাদেশ দলের। ক্রিকেটাররা প্রস্তুত ছিলেন কঠিন লড়াইয়ের। কিন্তু ১৪৫ রানের বড় ব্যবধানে জিতে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। তবে চ্যালেঞ্জটা সহজ হবে এটা ভাবতেই পারেনি বাংলাদেশ। তবে সে কারণে পরবর্তী দুই ওয়ানডে নিয়ে সিরিয়াসনেস কমেনি ক্রিকোটারদের। এসবই দাবি করলেন বাংলাদেশী ওপেনার তামিম ইকবাল। রবিবার বিকেলে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুশীলন করতে নামে টাইগাররা। এর আগেই সংবাদ সম্মেলনে কথা বলার সময় তামিম আরও জানান র‌্যাঙ্কিং বিষয়ক কোন চিন্তা করছে না বাংলাদেশ। সবাই ম্যাচ জেতার প্রতি মনোযোগী দল। এর আগে আজকের দ্বিতীয় ওয়ানডে জিতে আগে সিরিজ নিশ্চিত করতে চায় বাংলাদেশ। প্রস্তুতি ম্যাচে দারুণ এক জয় তুলে নিয়ে স্বাগতিকদের কঠিন এক চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল জিম্বাবুইয়ে। কিন্তু প্রথম ওয়ানডেতে এর ছিটেফোঁটাও দেখা গেল না। কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতাই গড়তে পারেনি। এ বিষয়ে তামিম বলেন, ‘এত সহজে জিততে পারব, এটা আমরা ভাবিনি। ম্যাচের আগেই আমরা একটা বিষয় জানতাম যে, এদের সঙ্গে কষ্ট করেই জিততে হবে আমাদের। আমাদের চিন্তা ছিল পদ্ধতিগত দিকগুলোতে ঠিক থাকা, ভাবনায় সঠিক থাকা। সব সময় আমরা খুবই সিরিয়াস ছিলাম।’ সিরিজের আরও দুটি ম্যাচ। প্রথম ম্যাচে সহজে জিতে গেলেও চিন্তাভাবনা আগের মতোই থাকছে। এমন দাবি করে তামিম বলেন, ‘বাকি দুই ম্যাচেও আমরা তাই থাকব। পরের দুই ম্যাচে এত সহজে আমরা নাও জিততে পারি। খুব কষ্ট করেই জিততে হতে পারে। আমাদের কাজ হবে পদ্ধতিগত দিকগুলো ঠিক রাখা।’ অবশ্য সিরিজের প্রথম ম্যাচটাকে বাড়তি একটা গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি। যেকোন দল সিরিজের প্রথম ম্যাচ জিতলে মানসিক দিক থেকে অনেক এগিয়ে যায়। এ বিষয়ে তামিম বলেন, ‘যেকোন সিরিজের প্রথম ম্যাচটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম ম্যাচে খেলোয়াড়রা একটু দ্বিধায় থাকে, একটু নার্ভাস থাকে। প্রথম ম্যাচের ফলাফল যাদের পক্ষে যায়, তাদের আত্মবিশ্বাস স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে যায়। সেই আত্মবিশ্বাস এখন আমাদের আছে। আমরা জানি পরের দুটি ম্যাচ জিততে হলে সমানভাবে পরিশ্রম করতে হবে, শুরুটা ভাল করতে হবে; ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই।’ অবশ্য প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশের শুরুটা ভাল হয়নি। টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে রানের গতি মন্থর যেমন ছিল তেমনি দলীয় ৩০ রানের মধ্যেই দুটি উইকেট খুঁইয়েছিল বাংলাদেশ। তামিম জানান প্রথম ১০ ওভার পেসাররা উইকেট থেকে বাড়তি বাউন্স আদায়ের পাশাপাশি সুবিধাও পাচ্ছিল। তবে দলের লক্ষ্য ২৫০-২৬০ থাকলেও সেটা পেরিয়ে গেছে বাংলাদেশ এবং সেটাকে মিরপুরের উইকেটে অনেক ভাল সংগ্রহ বলে দাবি করেন তিনি। পরবর্তী ওয়ানডেগুলোতে আরও রান করা সম্ভব বলে দাবি তামিমের। তিনি বলেন, ‘যদি আমাদের প্রত্যেকেই ঠিকঠাক খেলি, মিডলে প্রয়োজন মতো স্কোরবোর্ড সচল থাকে এবং সবকিছু পরিকল্পনা মতো যায়; করতে পারব। এটা জিম্বাবুইয়ে হোক বা যে কোন দল হোক। প্রতিপক্ষের বোলিংটাও খেয়াল রাখতে হবে। যদি ওরা বেশি ভাল বল করে, তাহলে আমাদেরও চ্যালেঞ্জ নিয়ে খেলতে হবে।’ চলতি বছর দারুণ কেটেছে বাংলাদেশের। আর সেটার সূত্রপাত হয়েছে গত বছর শেষদিকে জিম্বাবুইয়েকে হোয়াইটওয়াশ করে সিরিজ জয়ের মাধ্যমে। এ বছর ঘরের মাটিতে তিন পরাক্রমশালী পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টানা ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে দল। এবার ষোলো কলা পূর্ণ করার সুযোগ চলতি সিরিজ জিতে। এ বিষয়ে তামিম বলেন, ‘এ বছরটা বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য খুবই ইতিবাচক। সিরিজ জেতা বা রেকর্ড নিয়েও খুব চিন্তা করছি না। আমাদের চিন্তা কেবল কালকের (আজ) ম্যাচটি নিয়ে। ম্যাচটি আমরা জিততে চাই। ওইটা জিতলে সিরিজও জেতা হয়ে যাবে, এটা ঠিক।’ তামিম ভাল খেলতে খেলতেই বাজে একটি শটে আউট হয়ে গেছেন। আরও বড় ইনিংস খেলার চেষ্টা চালাবেন আজ এমন প্রত্যয়ই জানালেন তিনি। তবে দলের দুয়েকজন ব্যর্থ হলেও কেউ না কেউ রান করে দিচ্ছে এটা দলের জন্য খুবই ভাল বলে মনে করেন তামিম। কিন্তু চলতি সিরিজে জিতলে বা হারলে র‌্যাঙ্কিংয়ে কি ঘটবে সেটা নিয়ে চিন্তা নেই কারও। এ বিষয়ে তামিম বলেন, ‘কেউ না কেউ রান করে দিচ্ছে দলের জন্য এ রকম হলে ভাল। তবে এটা আসলে ভাবা উচিত না কারও। এটা অন্যের ওপর ছেড়ে দেয়া ঠিক না। এখনকার পরিস্থিতি যে, এই সিরিজ থেকে আমাদের পাওয়ার সম্ভাবনা কম, কিন্তু হারানোর শঙ্কাটা অনেক। এই বিষয়টা নিয়ে আমরা চিন্তিত না। আমাদের কাজ সিরিজটা আগে জেতা। রেটিং নিয়ে, পয়েন্ট নিয়ে সত্যি কথা এ বিষয়ে কেউ কথা বলে না, কেউ চিন্তাও করে না।’
×