ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জিয়ার মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন

স্থানীয় নির্বাচনে বিএনপির অংশ নেয়ার ইঙ্গিত দিলেন মওদুদ

প্রকাশিত: ০৫:১৭, ৮ নভেম্বর ২০১৫

স্থানীয় নির্বাচনে বিএনপির অংশ নেয়ার ইঙ্গিত দিলেন মওদুদ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অবশেষে দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এ অবস্থানের কথা জানান দেন। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে শনিবার সকালে ‘বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীকে নিয়ে শেরেবাংলা নগরে সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ফাঁকা মাঠে গোল দিতে দেয়া হবে না। ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে আমরা এখনও আনুষ্ঠানিক কোন সিদ্ধান্ত নেইনি। দলীয় ফোরামে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। খুব সম্ভব আমরা নির্বাচনে যাব। এটা নির্ভর করবে খালেদা জিয়া দেশে আসার পর উনার সিদ্ধান্তের ওপর। আমরা আশা করছি, খালেদা জিয়া শীঘ্রই দেশে ফিরে আসবেন। এরপর আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব। কাউকে ফাঁকা মাঠে গোল দেয়ার সুযোগের প্রশ্নই আসে না। আমরা এখন সরকারের ব্যবহার দেখেছি। বর্তমানে যে ব্যবহার করছে তা অব্যাহত থাকলে আমাদের তা প্রতিহত করতে হবে। মওদুদ বলেন, বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। অতীতে আমরা ঢাকা সিটি কর্পোরেশনসহ সব সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। আমরা চেষ্টা করছি দেশের সমস্ত গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনকে জোরদার করতে। তিনি বলেন, দেশে এখন গণতন্ত্র নেই, রাজনীতিও নেই। যতটুকু আছে তা নিয়ন্ত্রিত। এই স্বপ্ন থেকে দেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেনি। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনা যে গণতন্ত্রের মধ্যে নিহিত আমরা সে গণতন্ত্র ফিরে পেতে চাই। মওদুদ বলেন, আমাদের আন্দোলন হলো গণতন্ত্রকে ফিরে পাওয়ার আন্দোলন। আমরা এ আন্দোলন জোরদার করব। ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে সম্মিলিত করে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এ আন্দোলন চলবে; যাতে আমরা আইনের শাসন ফিরে পাই, মৌলিক অধিকার ফিরে পাই, সুষ্ঠু সমাজ ও গতিশীল রাষ্ট্র ফিরে পাই। মওদুদ বলেন, আজকের এদিন সিপাহী-জনতার, এটা আমাদের ইতিহাসের টার্নিং পয়েন্ট। এর আগে একটি দলীয় সরকার দেশকে কুক্ষিগত করে রেখেছিল। ৭ নবেম্বরের তাৎপর্য হলো, এ দিবসের মাধ্যমে দেশে আবার গণতন্ত্র ফিরে আসে। সেদিন সিপাহী-জনতার এ দাবি জিয়াউর রহমান বাস্তবায়ন করেছিলেন। তিনি একদলীয় শাসনের পরিবর্তে বহুদলীয় শাসনের প্রবর্তন করেন। এ ছাড়া জিয়াউর রহমান বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে আমাদের সংবিধানের মৌলিক অধিকার পুনর্বহাল করেন। দেশে একটি আইনের শাসন বহাল করার জন্য একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনেন। আজকের প্রেক্ষাপটে শুধু এটুকু বলা প্রয়োজন, আমরা সে গণতন্ত্র ফিরে পেতে চাই, যে গণতন্ত্রের চর্চা আমরা করেছি গত ২০ বছর। এক প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য লন্ডনে আছেন। শীঘ্রই তিনি দেশে ফিরে আসবেন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে মওদুদ বলেন, সংলাপ করে সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে কে কী বলল সেটা যায়-আসে না; আমরা চেষ্টা করছি দেশের সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন জোরদার করতে। চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতে দলের কোন প্রভাব পড়ছে কিনা জানতে চাইলে মওদুদ আহমদ বলেন, উনি চিকিৎসার জন্য লন্ডন গেছেন। উনার অনুপস্থিতিতে নেতাকর্মীদের মধ্যে স্বতঃস্ফূর্তার কোন অভাব দেখিনি। আগে যে রকম ছিল এখনও সে রকম আছে। জিয়ার মাজারে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব) মাহবুবুর রহমান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস-চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, এয়ার ভাইস-মার্শাল (অব) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সেলিমা রহমান, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবদুল মান্নান, শামছুজ্জামান দুদু, ডাঃ এজেডএম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, যুববিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক কাজী আসাদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, সহ-তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবীব, সহ-দফতর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, আসাদুল করিম শাহিন, ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবু সাঈদ খান খোকন, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নাসিম, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, মহিলা দলের সভাপতি নূরে আরা সাফা, সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শাম্মী আক্তার, হেলেন জেরিন খান, শামা ওবায়েদ, প্রকৌশলী আনহ আক্তার হোসেন, কৃষক দলের যুগ্ম সম্পাদক শাহজাহান মিয়া সম্রাট, স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মুনির হোসেন, দফতর সম্পাদক মো আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, ২০ দলীয় জোটের শরিক দলের নেতা জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের নেতৃত্বে প্রথমে জিয়ার মাজারে দলের নেতাকর্মীরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এর পর একে একে যুবদল, ছাত্রদল, মহিলা দল, ওলামা দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মুক্তিযোদ্ধা দল, শ্রমিক দল, তাঁতী দল, জাসাসসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
×