ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

অভিষেকের পর উদ্বোধনী জুটিতে তামিমের সঙ্গী হয়েছেন ১৩ ব্যাটসম্যান

বারবার সঙ্গী বদল তামিমের

প্রকাশিত: ০৫:১২, ৮ নভেম্বর ২০১৫

বারবার সঙ্গী বদল তামিমের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অল্পের জন্য এক শ’তে এক শ’ হতে পারেননি তামিম ইকবাল। যে কোন দলের ওপেনারের জন্য কোন ইনিংস ব্যাট না করার একটা বড় কারণ থাকতে পারে ইনজুরিতে পড়া অথবা হুট করে ব্যাটিং অর্ডারে কৌশলগত পরিবর্তন আনা। জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে শনিবার প্রথম ওয়ানডেতে নামার আগে ১৫০ ওয়ানডে খেলে ফেলেছিলেন তামিম, তবে ব্যাট করতে নেমেছিলেন ১৪৯ ইনিংসে। ওই একটি ম্যাচে প্রতিপক্ষ ভারতের ব্যাটিং শেষ হয়ে গেলেও বৃষ্টির দাপটে বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে নামতে পারেনি। জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে ক্যারিয়ারের ১৫০তম ইনিংসে ব্যাট করলেন তিনি। তামিমকে বাদ রেখে কোন কৌশলগত পরিবর্তন আনা হয়নি কখনও বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারে। অভিষেক হওয়ার পর থেকে সাড়ে ৮ বছর পেরিয়ে গেলেও বাজে ফর্মের কারণে কখনও বাদ না পড়া তামিম সবসময়ই ইনিংসের উদ্বোধন করেছেন ওয়ানডেতে। তবে সঙ্গী পরিবর্তন হয়েছে অনেকবার। তামিম অন্যতম অপরিহার্য ও নির্ভরযোগ্য ওপেনার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে পারলেও এত দীর্ঘ সময় ধরে দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে কোন ব্যাটসম্যান ওপেনার থাকতে পারেননি। জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে নুতন সঙ্গী হিসেবে তামিম পেয়েছেন তরুণ লিটন কুমার দাসকে। তিনি তামিমের ১৩ নম্বর ওপেনিং সঙ্গী! বাংলাদেশ দল শনিবার পর্যন্ত ওয়ানডেতে দেখেছে সবমিলিয়ে ৪৩ জন ওপেনার। এদের কেউ খুব বেশিদিন ওই দায়িত্বে থাকেননি। তামিম ১৫০ ইনিংস ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে ওপেনিং করলেও দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা শাহরিয়ার নাফীস ৭৫ ওয়ানডে খেলে ওপেনিং করেছেন মাত্র ৬৫ ইনিংসে। এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই ২০০৭ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি হারারেতে আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়েছিল তামিম ইকবালের ওয়ানডে ক্রিকেট দিয়ে। আর সেই ম্যাচে তামিমের ওপেনিং পার্টনার ছিলেন শাহরিয়ার নাফীস। সেই শুরুর পর শনিবার অবধি মোট ১৫১টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন তামিম। আর এর মধ্যে বেশ কয়েকবার তার ওপেনিং ‘সঙ্গী’ বদলেছে- টিম ম্যানেজমেন্ট কিংবা বলা যেতে পারে বদলাতে হয়েছে। তামিম তার নৈপুণ্য দেখিয়ে নিজেকে থিতু করেছেন, পারেননি তার সঙ্গী হিসেবে যারা এসেছেন তারা। শনিবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে আরেকবার সেই স্থানে পরিবর্তন দেখা গেল। তরুণ ওপেনার সৌম্য সরকার ইনজুরির কারণে ছিটকে যাওয়ায় এবার তামিমের সঙ্গে উদ্বোধনী জুটিতে সঙ্গী হওয়ার সুযোগ পান আরেক তরুণ লিটন। কিন্তু তামিমের এই ১৩ নম্বর সঙ্গীটির স্থায়িত্ব হলো মাত্র ৭ বল। শূন্য রানেই ফিরে গেলেন লিটন। দু’জন মিলে যোগ করেন মাত্র ২ রান। এর আগে তামিমের সঙ্গে বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতে ইনিংস উদ্বোধন করেছেন- জাভেদ ওমর বেলিম, মেহরাব হোসেন জুনিয়র, ইমরুল কায়েস, শাহরিয়ার নাফীস, জুনায়েদ সিদ্দিকী, মুশফিকুর রহীম, নাঈম ইসলাম, মোহাম্মদ আশরাফুল, নাজিমুদ্দিন, এনামুল হক বিজয়, শামসুর রহমান শুভ ও সৌম্য সরকার। অতীতে সঙ্গী শুরুতেই ব্যর্থ হলেও দীর্ঘক্ষণ খেলার অনেক উদাহরণ আছে তামিমের। এবারও তাই হলো। তামিম খেলেছেন ২৪তম ওভারের দ্বিতীয় বল পর্যন্ত। তাতে তিনি ৬৮ বল খেলে যোগ করেন ৪০ রান। সবচেয়ে বড় কথা দলীয় ৩০ রানে দুই উইকেট হারানোর পর তৃতীয় উইকেটে মুশফিকের সঙ্গে ৭০ রানের জুটি গড়ে তুলে বাংলাদেশ দলের প্রাথমিক বিপদ সামলেছেন। ওয়ানডেতে তামিমের সঙ্গে রানের দিক থেকে সবচেয়ে সফল হলেন ইমরুল কায়েস। ৪৫ ইনিংসে এই দুই ব্যাটসম্যান একসঙ্গে করেছেন ১১৭৮ রান। তামিম টানা ১৫০ ইনিংস থেকে গেছেন, অভিষেক হওয়ার পর থেকে বাদ পড়েননি। কিন্তু পাল্টেছে তার সঙ্গী। ওয়ানডে ও টেস্টে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বাধিক সেঞ্চুরি ও রানের মালিক তামিম তাই সন্দেহাতীতভাবেই দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে সেরা ওপেনার। নিজের এই দারুণ কীর্তিটাকে আরও কতখানি প্রলম্বিত করতে পারেন ২৬ বছর বয়সী এই বাঁহাতি, তা সময়ই বলে দেবে।
×