ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

‘গণতন্ত্র সুসংহত করতেই স্থানীয় সরকারে দলীয় মনোনয়ন’

প্রকাশিত: ০১:৫৪, ৭ নভেম্বর ২০১৫

‘গণতন্ত্র সুসংহত করতেই স্থানীয় সরকারে দলীয় মনোনয়ন’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গণতন্ত্রকে স্থানীয় পর্যায়ে সুসংহত করতেই সরকার দলীয় মনোনয়ন দিয়ে পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। যা এদেশের ইতিহাসে প্রথম ও যুগান্তকারী পদক্ষেপ। আওয়ামীলীগ গণতন্ত্র বিশ্বাস করে। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্থানীয় সরকারকে তৃণমূল পর্যায়ে গণতন্ত্র চর্চার সঠিক ব্যবহার ও তা সুসংহত করতেই এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আর্ন্তজাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় সমবায় দিবস উদযাপন উপলক্ষে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশারফ হোসেন এমপি এসব কথা বলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, আওয়ামীলীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে বলেই তা কিভাবে অব্যাহত রাখা যায় সে লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে। সরকার দলীয় মনোনয়ন ও প্রতীক পদ্ধতির মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতাকে জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে চায়। এর মাধ্যমে জনগণকে রাজনীতি করার মৌলিক অধিকার প্রয়োগ করার জন্য নিজস্ব দলের পছন্দসই লোকদের ভোট দেয়ার সুযোগ করে দেয়া হবে। এতে স্থানীয় সরকারকে আরো শক্তিশালী হবে ও গণতন্ত্রের সুফল তৃণমূল পর্যায়ে আরো বেশী করে পৌছবে। এ পদ্ধতিতে পৌরসভা নির্বাচন হলে গণতান্ত্রিক চর্চা শুধু বৃদ্ধিই করবে না গণতন্ত্রের শেকড় আরো গভীরে যাবে। তাছাড়া দলীয় মনোনয়নের পাশপাশি নির্দলীয় প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে পারবেন। পৌরসভা নির্বাচনের পর এ পদ্ধতিতে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন, সিটি কর্পোরেশন উপজেলা পরিষদ ও জেলা পরিষদের নির্বাচনেও এই ব্যবস্থা থাকবে। স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণে যা একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য হবে। মন্ত্রী বলেন,বর্তমানে দেশে এক লক্ষ ৮৮ হাজার সমবায় সমিতি তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। সমবায় সমিতির কার্যকরী মূলধন প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা আর সম্পদের পরিমান প্রায় ৭ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। যা দেশের অর্থনৈতিক চালিকা শক্তিকে গতিশীল করতে জোরালো ভুমিকা রাখছে। ২০ হাজার উৎপাদনমূখী সমিতির মাধ্যমে কৃষি, কৃষিজাত পণ্য, হস্তশিল্প তৈরী ও বাজারজাতকরণ, সমিতির সদস্যদেরকে ঋণদান ও সঞ্চয়ের মাধ্যমে প্রায় ৫ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। সমিতিগুলো বছরে প্রায় সাড়ে ৭ শত কোটি টাকার পণ্য রপ্তানী করছে। সরকার প্রতিটি বাড়ীকে একেকটি অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করতে একটি বাড়ী একটি খামার প্রকল্পের মাধ্যমে ২২ লক্ষ গরীব মানুষকে স্বাবলম্বীতা অর্জনে সহায়তা করছে। আমরা ৪০ হাজারের বেশী একটি বাড়ী একটি খামার প্রকল্পভুক্ত সমিতিকে নিবন্ধনের মাধ্যমে সমবায় সমিতিতে রুপান্তর করব। এতে করে গ্রামীন মানুষের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হবে। আশা করি সরকারের এসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা গেলে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে দারিদ্রতা দূরীকরণের মাধ্যমে দেশকে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত করা সম্ভব হবে। পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব আব্দুল মালেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্থানীর সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ এমপি,সমবায় অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও নিবন্ধক, জাতীয় সমবায় ইউনিয়নের সভাপতি প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শুরুতে মন্ত্রী সমবায় পণ্যের স্টল পরিদর্শন করেন ও পঞ্চগড় জেলার কৃষ্টি কৃষি সমিতির ওয়েবসাইট উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে সমবায় উদ্যোক্তা সৃষ্টির মাধ্যমে কিভাবে টেকসই উন্নয়ন করা সম্ভব তা নিয়ে প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে মন্ত্রী বিজয়ীদের মাঝে জাতীয় সমবায় পুরস্কার ২০১৩ বিতরণ করেন। এছাড়া দেশের গোপালগঞ্জ, ঠাকুরগাও, খাগড়াছড়ি, ফরিদপুর, নোয়াখালি, গফরগাঁও, নওগা, বাগেরহাট, নবীনগর, নাঠোর, লক্ষিপুর, কলাপাড়া, কেরানীগঞ্জ, বোয়ালমারি, ভোলা, ভালুকা, মাগুরা ও জয়পুরহাটে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা সেমিনার সহ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে জাতীয় সমবায় দিবস ২০১৫ উদযাপন করা হয়।
×