ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

জালের মতো অসংখ্য খালে ভরা সোনারচর

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ৭ নভেম্বর ২০১৫

জালের মতো অসংখ্য খালে ভরা সোনারচর

সাগরকন্যা পটুয়াখালীর অন্যতম বেড়ানোর স্থান সোনারচর। সাগরের আদিগন্ত বিস্তৃত জলরাশি। দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত। সোনালি বালির মাঝে অসংখ্য লাল কাঁকড়ার হুটোপুটি। জেলেদের ব্যস্ততা। শুঁটকি পল্লীর নোনা গন্ধ। দেশী-বিদেশী লাখও পাখির কলকাকলি। বিশাল সবুজ বনাঞ্চল। বুনো মোষ আর হরিণসহ নানা প্রজাতির বন্য জীবজন্তু। মাকড়শার জালের মতো আঁকাবাঁকা ছোট-বড় অসংখ্য খাল। সুর্যোদয়-সূর্যাস্ত। এসব মিলিয়ে শীতে বেড়ানোর চমৎকার জায়গা সোনারচর। একবার গেলে বারবার মন চাইবে ছুটে যেতে। সরকারীভাবে এখন পর্যন্ত সোনারচরকে পর্যটনকেন্দ্রের স্বীকৃতি না দেয়া হলেও সেখানে ভ্রমণে নেই মানুষের ক্লান্তি। প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটক ছুটে আসে। সোনারচরের অবস্থান পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলা সদর থেকে ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে। একেবারে সাগরের মাঝে। এর চারদিকেই সাগরের বিস্তীর্ণ জলরাশি। গত কয়েক বছর ধরেই স্থানীয় পর্যটকদের কাছে সোনারচর বিশেষ পরিচিতি পেয়েছে। সোনারচরের আয়তন দশ বর্গমাইলেরও বেশি। এর পুরোটাই গভীর বনাঞ্চল। উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনির আওতায় স্বাধীনতার পরে এ বনাঞ্চল গড়ে তোলা হয়। ম্যানগ্রোভ প্রজাতি ছাড়াও সাম্প্রতিক কয়েক বছরে সেখানে লাগানো আম, জাম, কাঁঠাল, নারকেলসহ নানা প্রজাতির গাছ। বনাঞ্চলের গভীরে রয়েছে হরিণের পাল। রয়েছে বুনো মোষ, গরু, বাঘসহ নানা প্রজাতির জীবজন্তু। সোনারচরের অভ্যন্তরে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য খাল উপখাল। এসব খাল যেন সবুজের সুরঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে পর্যটকদের কাছে টানতে। সোনারচরের পূর্ব প্রান্তে রয়েছে প্রায় দশ কিলোমিটারের মতো লম্বা বিশাল দৈর্ঘ্যরে সমুদ্র সৈকত। যেখানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্য উপভোগের রয়েছে বিশেষ সুযোগ। এখন রেস্টহাউজ ঘিরে বেশিরভাগ পিকনিক পার্টি তাদের আসর বসায়। রেস্টহাউজে সুপেয় পানির ব্যবস্থা না থাকলেও রয়েছে বিশ্রামের ব্যবস্থা। এছাড়া, পিকনিকের আসর বসে সমুদ্র সৈকতে। বসে ঘন জঙ্গলে। উত্তর-দক্ষিণ প্রান্তে। দক্ষিণ প্রান্তে বসে সাগরের ঢেউ দেখা যায় অনায়াসে। বেশিরভাগ পিকনিক পার্টি আসে পটুয়াখালীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। জেলার বাইরের পিকনিক পার্টির সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। অনেকে রিজার্ভ বাসে গলাচিপা পর্যন্ত এসে তারপরে নৌকা কিংবা ট্রলার ভাড়া করে আসে। অক্টোবর থেকেই চলছে এ অবস্থা। চলবে মার্চ পর্যন্ত। বনকর্মীরা জানায়, ঘন জঙ্গলে যাতে কেউ হারিয়ে না যায়। কিংবা হিংস্র পশুর কবলে কেউ আক্রান্ত না হয়, সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হয়। Ñশংকর লাল দাশ, গলাচিপা থেকে
×