ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

উত্তরাঞ্চলে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে

ফাঁদ পেতে অবাধে পাখি নিধন

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ৭ নভেম্বর ২০১৫

ফাঁদ পেতে অবাধে পাখি নিধন

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ হেমন্তের লগ্নে শীতের আগমনে বক শিকার বা নিধনের মহোৎসব শুরু হয়েছে নীলফামারীসহ উত্তরাঞ্চলে। জলাশয় আর বিলে ফাঁদ পেতে শুধু বক নয় বিভিন্ন প্রজাতির পাখিও শিকার করা হচ্ছে। এসব পাখি প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে স্থানীয় হাটবাজার ও পথেঘাটে। অবাধে পাখি শিকার করা হলেও স্থানীয় প্রশাসন শিকারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় শিকারীর সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। ফলে পরিবেশ সঙ্কটাপন্নের মুখে পড়েছে। উত্তরের নীলফামারী, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, ঠাকুরগাও, গাইবান্ধা ও দিনাজপুরের বিভিন্ন জলাশয় আর বিলে (ধানী জমিতে) ফাঁদ পেতে অবাধে শিকার করা হচ্ছে বকসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখিও। বক ও পাখি শিকার করা হচ্ছে তিস্তা, বুড়িতিস্তা, নাউতারা নদী, চকচকার বিল, নায়রার দোলা, পঞ্চনার বিল, চতরারবিলসহ ধানি জমি ও জলাশয় থেকে বক নিধন করেন। অনেকে মোটরসাইকেলে পথ চলতে রাস্তায় বক বিক্রি করতে দেখে দাঁড়িয়ে বক ক্রয় করে তা মোটরসাইকেলে বেঁধে বাড়ি নিয়ে যেতে পর্যন্ত দেখা যায়। ডিমলা উপজেলার বকশিকারি খড়িবাড়ি গ্রামের মমতাজুল ইসলাম, নাউতারা নিচপাড়া গ্রামের মিলন হোসেন, রফিকুল ইসলাম, আব্দুল হালিম ও সচিন খান জানায়, তারা প্রতিদিন কাকডাকা ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত বক শিকার করেন। কুমারপাড়া গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, শীত মৌসুম আসলেই পাখি শিকারিরা গ্রামের চারপাশে থেকে উড়ে আসা বকসহ বিভিন্ন পাখি নির্বিচারে শিকার শুরু করেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে জানা যায় প্রায় প্রতিদিনই শিকারীদের ফাঁদে আটকা পড়ছে শত শত বক। শিকারীরা এগুলো পাইকারি দরে বিক্রি করে দেন। এরপর খুচরা বিক্রেতারা জেলা বা উপজেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে, হাটবাজারে প্রতিটি বক ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি করছে । সচেতন মহল বলছে, এভাবে বক বা ঘুঘু পাখি নিধন অব্যাহত থাকলে এসব বিলুপ্ত হয়ে যাবে। অবাধে পাখি শিকার করায় পরিবেশের ওপর প্রতিকূল প্রভাব পড়ায় জীববৈচিত্র্য বিপন্ন হয়ে পড়েছে। সংকুচিত হয়ে পড়েছে বহু বন্যপ্রাণী ও দেশীয় পাখপাখালির আবাসস্থল। অনেক পাখি এবং প্রাণী প্রায় বিলীন হয়ে গেছে। বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন প্রত্যন্ত গ্রামে কার্যকর করার সরকারী কর্মচারী নেই।
×