ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সৌভাগ্যের জয়ে শেষ ষোলোতে রিয়াল মাদ্রিদ

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ৫ নভেম্বর ২০১৫

সৌভাগ্যের জয়ে শেষ ষোলোতে রিয়াল মাদ্রিদ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সৌভাগ্যের জয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলের শেষ ষোলো অর্থাৎ প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে রিয়াল মাদ্রিদ। মঙ্গলবার রাতে ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে ফরাসী ক্লাব প্যারিস সেইন্ট-জার্মেইনকে ১-০ গোলে হারায় আসরের রেকর্ড সর্বোচ্চ দশবারের চ্যাম্পিয়নরা। অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবে রিয়ালের পক্ষে জয়সূচক গোল করেন বদলি হিসেবে মাঠে নামা স্প্যানিশ ডিফেন্ডার নাচো। রিয়ালের ঘরের মাঠ সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে প্রাধান্য বিস্তার করে খেলেও হারতে হয়েছে পিএসজিকে। অবশেষে গোলের খরা কাটিয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। সেই সঙ্গে ‘বি’ গ্রুপের শীর্ষেও উঠে এসেছে রেড ডেভিলসরা। ওল্ডট্রাফোর্ডে অধিনায়ক ওয়েন রুনির একমাত্র গোলে ম্যানইউ হারায় রাশিয়ান ক্লাব সিএসকেএ মস্কোকে। ৭ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষে অবস্থান করছে ম্যানইউ। ‘সি’ গ্রুপে গালাতাসারেকে ২-১ গোলে হারিয়ে নকআউট পর্বের সুবাতাস পাচ্ছে পর্তুগালের ক্লাব বেনফিকা। ৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে তারা। গ্রুপের আরেক ম্যাচে স্প্যানিশ ক্লাব এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ স্বাগতিক কাজাখস্তানের ক্লাব আস্টানার সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে। জুভেন্টাসের কাছে হার দিয়ে মিশন শুরু হলেও টানা তিন ম্যাচ জিতে সেরা ১৬ নিশ্চিত করেছে ম্যানচেস্টার সিটি। ‘ডি’ গ্রুপের ম্যাচে সিটি পরশু রাতে সহজেই ৩-১ গোলে হারায় স্পেনের সেভিয়াকে। তবে হারতে হারতে কোনরকমে বেঁচে গেছে জুভেন্টাস। ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নরা গোলরক্ষক ও অধিনায়ক জিয়ানলুইজি বুফনের নৈপুণ্যে ১-১ গোলে ড্র করে জার্মান ক্লাব বরুসিয়া মনশেনগ্লাডব্যাচের সঙ্গে। পিএসজির বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ইনজুরির কারণে মাঠে নামতে পারেননি রিয়ালের দুই তারকা ফরোয়ার্ড করিম বেনজেমা, গ্যারেথ বেল ও জেমস রড্রিগুয়েজ। সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোও তেমন আলো ছড়াতে পারেননি। ৩৩ মিনিটে ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার মার্সেলো ইনজুরি নিয়ে মাঠ ছাড়লে আরও বিপদে পড়ে রিয়াল। কিন্তু এই ইনজুরি যে শেষ পর্যন্ত শাপে বর হবে, তা হয়তো তখন কেউই ভাবতে পারেননি। মার্সেলোর বদলি হিসেবে মাঠে নামার দুই মিনিট পরই গোল করে বসেন ২৫ বছর বয়সী নাচো। ৩৫ মিনিটে করা তার গোলটি রিয়ালের জার্সি গায়ে দ্বিতীয় গোল। শেষ পর্যন্ত এই এক গোলের ব্যবধানেই জয় পায় রেকর্ড সর্বোচ্চ ১০ বারের শিরোপাজয়ীরা। রিয়াল জয় পেলেও ম্যাচের বেশির ভাগ সময় বলের দখল ছিল পিএসজির কাছে। রিয়ালের রক্ষণভাগে বেশ কয়েকবার বিপজ্জনকভাবে হামলাও চালিয়েছিলেন এডিনসন কাভানি, জ¬াতান ইব্রাহিমোভিচ, এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ারা। ৩৭ মিনিটে পিএসজির মিডফিল্ডার আদ্রিয়ান রাবিয়োটের ভলি ফিরে আসে পোস্টে লেগে। ৮৯ মিনিটে ডি মারিয়ার একটি গোলপ্রচেষ্টাও ব্যর্থ হয়ে যায় গোলপোস্টে আঘাত হেনে। পিএসজির আরও কয়েকটি প্রচেষ্টা দারুণ দক্ষতায় রুখে দেন রিয়ালের গোলরক্ষক কেইলর নাভাস। এ কারণে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারলেও ম্যাচ শেষে সন্তুষ্ট হতে পারেননি রিয়ালের তারকা ডিফেন্ডার ও অধিনায়ক সার্জিও রামোস। তিনি বলেন, ম্যাচটা আমাদের জন্য মোটেই সহজ ছিল না। প্যারিসে গিয়ে ড্র করলেও আমরা অনেক ভাল খেলেছিলাম। এখানে আমরা অনেক শক্তিশালী একটা দলের বিপক্ষে খেলেছি। বলের দখল ও গোলের সুযোগ তৈরির ক্ষেত্রে তারা (পিএসজি) অনেক এগিয়ে ছিল। এটা অস্বস্তিকর একটি ম্যাচ ছিল। রামোস সন্তুষ্ট হতে না পারলেও রিয়াল কোচ খুশি নকআউট পর্ব নিশ্চিত হওয়ায়। রাফায়েল বেনিতেজ বলেন, আমরা (নকআউট পর্বে) উঠে গেছি, আমরা খুশি। দল এখনও উন্নতি করছে এবং এখনও চোটে পড়া খেলোয়াড়দের ফিরে পাচ্ছি আমরা। সাবেক ক্লাবের কাছে হারলেও তার বর্তমান দলই ভাল খেলেছে বলে মনে করেন পিএসজির ডি মারিয়া। তিনি বলেন, চলতি মৌসুমে আমরা আমাদের সেরা ম্যাচটি খেলেছি। অসাধারণ প্রদর্শনী। আমরা একটা ভুল করেছি এবং এর শাস্তি পেয়েছি। রিয়ালের চেয়ে আমরা ১০ গুণ ভাল খেলেছি। আমরা এভাবেই এগিয়ে যাব। গোল করা যেন ভুলেই গিয়েছিলেন ওয়েন রুনি। অবশেষে কাক্সিক্ষত গোল তিনি পেয়েছেন প্রায় ৪০৪ মিনিটের বিরতি কাটিয়ে। তাতেই টানা তিন ম্যাচে গোলশূন্য ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডও চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ম্যাচে হারিয়েছে সিএসকেএ মস্কোকে। ম্যাচের ৭৯ মিনিটে জেসে লিনগার্ডের ক্রসে হেড করে গোল করেন রুনি। অনেকদিন পর এই গোলেই রেকর্ড বইয়ে নাম লিখিয়েছেন তিনি। ক্লাবের সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় ডেনিস লয়ের সঙ্গে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছেন ৩০ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার। কিছুদিন আগেই ইংল্যান্ডের হয়ে ববি চার্লটনের ৪৯ গোলের রেকর্ডটা ছাড়িয়ে গেছেন রুনি।
×