ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

‘ভাষার লড়াই ও রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ৫ নভেম্বর ২০১৫

‘ভাষার লড়াই ও রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বইটির নাম ‘ভাষার লড়াই ও রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন।‘ মাতৃভাষার প্রতি অধিকার মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গোলাম কুদ্দুছ মাতৃভাষার প্রতি গভীর মমত্ববোধ ও অধিকারের দায়বদ্ধতা থেকেই বইটি লেখার প্রয়াস পেয়েছেন। ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তানের অকিাংশ জনগণের ভাষা বাংলাকে বাদ দিয়ে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার উদ্যোগ নেয়া হলে, রুখে দাঁড়ায় বীর বাঙালী। ১৯৪৮ আর ১৯৫২ সালের রক্তস্রোতের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় রাষ্ট্রভাষা বাংলা। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে ঐতিহাসিক ঘটনাবলীর বস্তুনিষ্ঠ উপস্থাপন এ গ্রন্থের উপজীব্য। গ্রন্থটির প্রকাশনা অনুষ্ঠান হয় বুধবার সন্ধ্যায়। বাংলা একাডেমির শামসুর রাহমান মিলনায়তনে বইটির প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান নালন্দা আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সম্মানিত অতিথি ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, সাংস্কৃতিক নাসিরউদ্দীন ইউসুফ, লেখক শামীম আহসান, বইটির লেখক গোলাম কুদ্দুছ প্রমূখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। বইয়ের মোড়ক উন্মোচনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুুল মুহিত বলেন, আমার জানা মতে ভাষা আন্দোলনের সর্ববৃহৎ বই ‘ভাষার লড়াই ও রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন।’ যে কারণে খুঁটিনাটি অনেক বিষয় এতে সন্নিবেশিত হয়েছে। তবে সত্যিকার অর্থে ভাষা আন্দোলনের সঠিক ইতিহাস লিপিবদ্ধ অনেক কষ্টসাধ্য বিষয়। গোলাম কুদ্দুছ সেই কষ্টসাধ্য কাজটি করার চেষ্টা করেছেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে সম্প্রতি দুবর্ৃৃত্তের হাতে নির্মমভাবে খুন হওয়া জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সাল আরেফীন দীপনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে স্বাগত বক্তব্য রাখেন নালন্দা প্রকাশনীর নির্বাহী পরিচালক রেদওয়ানুর রহমান জুয়েল। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের আগে বাংলাকে ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য লড়াই করতে হয়েছে। সাম্প্রদায়িক শক্তি, উচ্চবিত্তশ্রেণী শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মূল কারিগর ছিলেন কবি, লেখক, রাজন্যবর্গ এবং প্রগতিশীল ভাবনার সামাজিক ও সাংস্কৃতি শক্তি। এসব কিছুই গোলাম কুদ্দুছের গ্রন্থটিতে তথ্যভিত্তিকভাবে স্থান পেয়েছে। তিনি ১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত ভাষার লড়াইয়ের এক বিশেষ চিত্র তুলে ধরেছেন বইটির এক থেকে তৃতীয় অধ্যায় পর্যন্ত। এর মোট ১৮টি অধ্যায়ে রয়েছে তথ্যভিত্তিক বাংলা ভাষার ইতিহাস। সাহিত্য ও ইতিহাসের এক বিশেষ মেলবন্ধন ঘটেছে বইটিতে। একুশে ফেব্রুয়ারিতে প্রথম শহীদ হয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সালাউদ্দিন। এটাও বিশেষ তথ্যের ভিত্তিতে তিনি এতে উল্লেখ করেছেন। একসঙ্গে অনেক তথ্যের সমন্বয়ে লিখিত এ বইটি ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে চ্যালেঞ্জ না করলেও একে সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করেছেন নিঃসন্দেহে। ছয় শ’ সত্তর পৃষ্ঠার এ বইটিতে কিছু বিরল ছবি রয়েছে। সভাপতির বক্তব্যে এমিরেটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান বলেন, ‘ভাষার লড়াই ও রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন’ ৬৭০ পৃষ্ঠার একটি বৃহৎ কলেবরের গ্রন্থ। ১৮টি অধ্যায়ে লেখক গোলাম কুদ্দুছ তার সুচিন্তিত ও অনুসন্ধানলব্ধ তথ্যাবলী দিয়ে বাঙালী জীবনের অপরিহার্য এই ইতিহাস তুলে ধরেছেন। শ্রমসাধ্য এই কাজটির জন্য প্রশংসার দাবি রাখে লেখক গোলাম কুদ্দুছ। এই বইটি সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। লেখক দেখাতে চেষ্টা করেছেন বাংলা ভাষার উন্মেষকাল। সে পথে হেঁটে ভাষার জন্য আন্দোলনের পটভূমি তৈরি হয়েছে, ভাষার জন্য লড়াই শুরু হয়েছে। যা দেখানো হয়েছে বইটিতে। তিনি আরও বলেন ‘তথ্য উপাত্ত দিয়ে অনেক তথ্য তুলে ধরেছেন গোলাম কুদ্দুছ। বইটি সবার জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা রণেশ দাশগুপ্তকে স্মরণ করল উদীচী ॥ বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, সাহিত্যিক-সাংবাদিক রণেশ দাশগুপ্তকে স্মরণ করল উদীচী। রণেশ দাশগুপ্তের ১৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার সন্ধ্যায় উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদ এই স্মরণসভার আয়োজন করে। তোপখানা রোডের উদীচীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত স্মরণ সভার শুরুতে সঙ্গীত পরিবেশন করেন সংগঠনের শিল্পীরা। এরপর অনুষ্ঠিত স্মরণানুষ্ঠানে এতে সভাপতিত্ব করেন উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদের সভাপতি কাজী মোহাম্মদ শীশ। আলোচনায় অংশ নেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান, উদীচীর প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য কামরুল আহসান খান, উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন এবং অমিত রঞ্জন দে। স্মরণ সভায় রণেশ দাশগুপ্তের অনুবাদ করা একটি কবিতা আবৃত্তি করেন কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য নাজমুল আজাদ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদের সাধারণ সম্পাদক ইকবালুল হক খান ইকবাল। স্মরণ সভায় বক্তারা বলেন, রণেশ দাশগুপ্ত আজীবন একটি অসাম্প্রদায়িক মৌলবাদমুক্ত সাম্যবাদী সমাজ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে লড়াই-সংগ্রাম করে গেছেন। একজন তুখোড় সাংবাদিক, বিজ্ঞ সাহিত্যিক, অসামান্য প্রাবন্ধিক হিসেবে রণেশ দাশগুপ্ত তার জীবনকালে সব সময়ই তার আশপাশের মানুষকে শিখিয়ে গেছেন কীভাবে সৎ থেকে, নিজের আদর্শে অটল থেকে সমাজ পরিবর্তনের স্বার্থে ইতিবাচক কাজ করা যায়। এই লক্ষ্যেই ১৯৬৮ সালের ২৯ অক্টোবর শিল্পী-সংগ্রামী সত্যেন সেনসহ বেশ কয়েক প্রগতিশীল মুক্ত চিন্তার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে রণেশ দাশগুপ্ত প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। রণেশ দাশগুপ্ত ছিলেন একজন শৃঙ্খলাপরায়ণ ও দৃঢ়চেতা মানুষ। তিনি মনে করতেন শিল্পীরা যখন সংগঠক হিসেবে আবির্ভূত হন তখন সংগঠনকে অনেক দূর পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। নতুন প্রজন্মকে উৎসাহিত করার জন্য তিনি সব সময়ই সচেষ্ট ছিলেন। ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহনশীল মানসিকতার ছিলেন বলে রণেশ দাশগুপ্ত ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষের কাছেই সমানভাবে জনপ্রিয় ছিলেন। একটি অসাম্প্রদায়িক, মৌলবাদমুক্ত ও সাম্যবাদী সমাজ গঠনে আজীবন লড়াই-সংগ্রাম করেছেন রণেশ দাশগুপ্ত। ভূঁইয়া সফিকুল ইসলামের কবিতা ও গান নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ॥ গীতিকার, সুরকার ও কবি ভূঁইয়া সফিকুল ইসলামের কবিতা ও গান নিয়ে বিশেষ এক অনুষ্ঠান হয় শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে বুধবার সন্ধ্যায়। শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। জাদুঘরে ‘ইমেজ অব ফ্রেন্ডশিপ বিটুইন চায়না এ্যান্ড বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন আজ ॥ বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, চায়না রেডিও ইন্টারন্যাশনাল এবং চায়না এ্যাম্বাসি যৌথভাবে জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী গ্যালারিতে ‘ইমেজ অব ফ্রেন্ডশিপ বিটুইন চায়না এ্যান্ড বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। অর্থ প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নান আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় প্রধান অতিথি হিসেবে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন।
×