ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অচল গাড়ির জন্য ৫ লাখ টাকার জ্বালানি ক্রয়!

প্রকাশিত: ০৫:২০, ৫ নভেম্বর ২০১৫

অচল গাড়ির জন্য ৫ লাখ টাকার জ্বালানি ক্রয়!

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এক অচল গাড়ির জন্য বছরের পর বছর জ্বালানি কেনা হয়েছে! টাকার অঙ্ক যেমন তেমন নয়। ৫ লাখ ৩২ হাজার টাকা! গাড়িটি ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের। গাড়ি নং-জাস-৬৩-৪০৮৬। চার বছরে ওই অকেজো গাড়ির জন্য এ বিপুল অর্থের জ্বালানি কেনা হয়েছে। সম্প্রতি সরকারী হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে উপস্থাপিত মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের বার্ষিক অডিট রিপোর্টে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। রিপোর্টে এটাকে ‘প্রতারণা’ উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট দায়ী ব্যক্তিদের কাছ থেকে ওই অর্থ আদায় করে সরকারী কোষাগারে জমা দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। কমিটি সূত্রে জানা গেছে, অডিট রিপোর্টে বলা হয়েছে, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের ২০০১ থেকে ২০০৯ সালের আর্থিক হিসাব নিরীক্ষার সময় গাড়ির জ্বালানি বিলগুলো পর্যালোচনায় দেখা যায়, গাড়ি নং-জাস-৬৩-৪০৮৬ এর নামে কেনা ৫ লাখ ৩২ হাজার ২৮৬ টাকার জ্বালানি ব্যয়ের যথার্থতা যাচাইয়ে জন্য লগ বই চাওয়া হলেও তা পেশ করা হয়নি। তবে নিরীক্ষার শেষ দিন ওই গাড়ির চালক ইব্রাহিম খলিলের কাছ থেকে জানা যায় যে, গাড়িটি ২০০৪ সাল থেকে অকেজো অবস্থায় সরকারী ওষুধ কোম্পানি ইডিসিএলের তেজগাঁও কার্যালয়ে রাখা আছে। অথচ ২০০৪-০৫ এবং ২০০৮-০৯ সাল পর্যন্ত সময়ে ওই গাড়ির নামে জ্বালানি ক্রয় ও খরচ দেখানো হয়েছে। যা সম্পূর্ণ অনিয়মিত ও প্রতারণার শামিল। তবে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর জবাবে জানিয়েছে, গাড়িটি দীর্ঘদিন ধরে অকেজো থাকায় সরকারী কাজ ব্যাহত হচ্ছিল। ওই গাড়ির জন্য কেনা জ্বালানি অপর গাড়িতে (নং- মেট্রো গ-১৯৭৬) ব্যবহার করা হতো। এতে সরকারের কোন আর্থিক ক্ষতি হয়নি। তবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না নিয়ে জ্বালানি ব্যবহার করা সঠিক হয়নি। দায়িত্ব পালনকারী তৎকালীন ব্যক্তিদের এ বিষয়ে আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল। জবাবে আরও বলা হয়, গত বছরের ২৭ জানুয়ারি ত্রিপক্ষীয় সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই অকেজো গাড়িটি এ্যাসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের মাধ্যমে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ওই গাড়ির বিক্রয় কর উৎসে কর কর্তন বাবদ ১৫ হাজার ২৬০ টাকা ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে সরকারী কোষাগারে জমা দেয়া হয়েছে। জ্বালানি বইয়ের স্বপক্ষে লগ বইয়ের ফটোকপিও সংযুক্ত করা হয়েছে। আর অডিট আপত্তির পর গাড়িটির বিপরীতে জ্বালানি কেনা বন্ধ করা হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে আপত্তিটি নিষ্পত্তির অনুরোধ জানিয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর। এদিকে সূত্র জানায়, জবাব সন্তোষজনক নয় উল্লেখ করে অডিট অধিদফতর জানিয়েছে, সমস্যার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে অনুমোদন না নিয়ে নিজেদের খেয়াল খুশিমতো সিদ্ধান্ত নেয়া মোটেও যৌক্তিক নয়। গাড়ি নং-জাস-৬৩-৪০৮৬ অকেজো থাকায় ওই গাড়ির জন্য জ্বালানি কেনা গ্রহণযোগ্য নয়। তাছাড়া অন্য গাড়ির জন্য নির্ধারিত তেলের পাশাপাশি ওই গাড়ির তেল ব্যবহার করাও গ্রহণযোগ্য নয়। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দায়ী ব্যক্তিদের কাছ থেকে আপত্তিকৃত টাকা আদায় করে তা সরকারী কোষাগারে জমা দেয়া প্রয়োজন।
×