ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

স্মার্ট দিনের স্মার্ট আয়োজন

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ২ নভেম্বর ২০১৫

স্মার্ট দিনের স্মার্ট আয়োজন

বাংলাদেশে একটি খুব জনপ্রিয় গান, ‘নাই টেলিফোন, নাইরে পিওন, নাইরে টেলিগ্রাম, বন্ধুর কাছে মনের খবর ক্যামনে পৌঁছাইতাম’ প্রচলিত আছে। তবে ভয়ের কিছু নেই। বাংলাদেশ এখন তথ্য-প্রযুক্তিতে অনেক উন্নত। এখন বাংলাদেশের মানুষদের মনের খবর পৌঁছানোর জন্য টেলিফোন, টেলিগ্রাম অথাবা ডাক পিওনের প্রয়োজন হয় না। এখন তাদের হাতে হাতে রয়েছে ‘স্মর্টফোন’, ‘ট্যাব’, ‘আইপ্যাড’, ‘আইপড’, ‘ল্যাপটপের’ মতো উন্নতমানের ডিভাইস। যার মাধ্যমে দেশে কিংবা দেশের বাইরে খুব সহজেই সবার সঙ্গে খুব সহজেই যোগাযোগ স্থাপন করা যায়। আইফোন বাজারে অনেক ধরনের স্মার্টফোন রয়েছে। তবে আইফোন ব্যবহারের অভিজ্ঞতা সব কিছুকেই ছাপিয়ে যাবে। আইফোন হচ্ছে ‘এ্যাপল ইনকর্পোরেটেড দ্বারা নির্মিত অত্যাধুনিক ইন্টারনেট ও মাল্টিমিডিয়া সংযুক্ত একটি স্মার্টফোন। আইফোন সর্বপ্রথম বাজারে আসে ২৯ জুন ২০০৯ তারিখে। এটি অবমুক্ত করেন এ্যাপলের সাবেক সিইও স্টিভ জবস। মূলত আইফোনকে ফোনের পাশাপাশি ভিডিও ক্যামেরা, ক্যামেরা, বহনযোগ্য মিডিয়া প্লেয়ার, ইন্টারনেট মাধ্যম, ভিজুয়াল ভয়েস মেইল ক্লাইন্টসহ ওয়াইফাই ও থ্রিজি-ফোরজি এলটিই কানেকটর হিসেবে ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছে। আইফোনের পর্দাটি মাল্টি টাচস্ক্রিন প্রকৃতির। আইফোনে রয়েছে নিজস্ব এ্যাপল স্টোর। যার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের এ্যাপ্লিকেশন ও সফটওয়্যার ডাউনলোড করে অতি সহজেই আইফোনকে খেলাধুলা, জিপিএস নেভিগেশন, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র দেখার কাজে ব্যবহার করা যায়। আইফোনে একটি ভার্চুয়াল কীবোর্ড রয়েছে। বাংলাদেশে আইফোন ৪, ৪ এস, ৫, ৫ এস, ৫সি, ৬এস এবং ৬ প্লাস পাওয়া যাচ্ছে। এ সমস্ত পণ্য বিক্রয়ের বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশে কম্পিউটারস ভোক্তাদের চাহিদার কেন্দ্র বিন্দুতে প্রথম সারিতে রয়েছে এ সকল আইফোন। বর্তমানে আইফোনের আধুনিক সংস্করণটি হচ্ছে ৬ এস এবং ৬ এস প্লাস। বাজারে আসার প্রথম সপ্তাহেই তা এ্যাপলের সর্বাধিক পণ্যের বিক্রিতে রেকর্ড স্থাপন করেছে। নতুন আইফোন সম্পর্কে টিম কুক বলেন, ‘বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত স্মার্টফোন।’ এই স্মার্টফোনে রয়েছে এ্যাপলের আইওএস ৯ অপারেটিং সিস্টেমে। ফোরকে মানের ভিডিও ধারণ করার জন্য এই ফোনের পেছনে উন্নত আই-সাইট ক্যামেরা যুক্ত করেছে এ্যাপল। ১৬ জিবি, ৬৪ জিবি ও ১২৮ জিবি এই তিনটি সংস্করণে বাজারে এসেছে নতুন আইফোন। বাংলাদেশে যার বাজার মূল্য ৯৭ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। আইপ্যাড তরুণ প্রজন্ম আইফোনের দিকে বেশি ঝুঁকলেও আইপ্যাডও কিন্তু নজর কাড়ে না। বহুদিনের প্রতীক্ষার পর চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর উন্মুক্ত হলো ‘আইপ্যাড প্রো’। তরুণ প্রজন্মের পছন্দের দিকে খেয়াল রেখেই সিলভার, গোল্ড ও স্পেস গ্রে এই তিন রঙে পাওয়া যাবে এ্যাপলের আইপ্যাড প্রো। ১২ দশমিক ৯ ইঞ্চি পর্দার এই আইপ্যাড প্রো-তে একসঙ্গে ৩টি ৪কে ভিডিও নিয়ে কাজ করা যাবে। ম্যাকবুক ল্যাপটপ বা ম্যাকবুক অতি সহজে বহনযোগ্য বলে দিন দিন এগুলোর কদর বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাজারে বিভিন্ন আকৃতির ল্যাপটপ বা ম্যাকবুক রয়েছে। বাজারে যে সকল ল্যাপটপ রয়েছে তাদের মধ্যে এইচপি, আসুস, সনি ভায়ো, ডেল প্রভৃতির চাহিদা রয়েছে। এ সমস্ত ডিভাইসগুলো দিয়ে ঘরে কিংবা বাইরে, চলতি পথে স্বাচ্ছন্দ্য মতো ব্যবহার করা যায়। তবে আলাদাভাবে ম্যাকবুকের কথা না বললেই নয়। সব ধরনের কাজের জন্য ম্যাকবুক একটি আদর্শ ডিভাইস। এর আল্ট্রাসিøম বডি নজর কাড়ে সবার। অফিসের কাজ, ভিডিও এডিটিংয়ের কাজ, সঙ্গীতের সুর সংযোজনের কাজ, লাইভ কনসার্ট বা ডিজে পার্টিতে কিংবা নিরাপত্তার কাজে অন্যতম এক আস্থার নাম ম্যাকবুক। ম্যাকবুক ব্যবহারের অন্যতম কারণ হচ্ছে এর সৌন্দর্য, দ্রুত গতিতা, ভাইরাস কর্তৃক সংক্রমণ না হওয়া প্রভৃতি। যে কোন ধরনের কাজের জন্য ম্যাকবুক ভীষণভাবে পারদর্শী। বর্তমানে এ্যাপল তাদের নতুন ম্যাকবুক, ‘ম্যাকবুক প্রো’ উন্মোচন করেছে। রেটিনা ডিসপ্লেসমৃদ্ধ এই ১৫ ইঞ্চির ম্যাকবুক প্রো-এর সঙ্গে রয়েছে ফোর্স টাচ ট্র্যাকপ্যাড, দ্রুত গতিসম্পন্ন ফ্ল্যাশ স্টোরেজ আর ব্যাটারির দীর্ঘায়ুতা যোগ করেছে জীবন্ত অনুভূতি। ব্যক্তিত্ব প্রকাশের অন্যতম এক মাধ্যম হতে পারে ম্যাক বুক। ম্যাকবুক অত্যন্ত স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে তৈরি হয় বিধায় এতে ধুলাবালি প্রবেশের আশঙ্কা অনেক কম থাকে। আইপড আইপড মূলত গান শোনা, এ্যাপস্টোর এবং বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত মোবাইল সিস্টেম আইওএসে একসেস করা যায় বলে আইপড তরুণ প্রজন্মের কাছে বেশ জনপ্রিয়। সহজে বহনযোগ্য এবং দেখতে আকর্ষণীয় হওয়ায় আইপডের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে আইপডের নতুন সংস্করণ ষষ্ঠ প্রজন্মের ‘আইপড টাচ’ বাজারে ছেড়েছে এ্যাপল। ৪-ইঞ্চি ডিসপ্লের আইপড টাচে ব্যবহার করা হয়েছে ৬৪-বিট এ৮চিপ আর এম৮ মোশন প্রসেসর। এতে আছে, ৮-মেগাপিক্সেল আইসাইট ক্যামেরা, ওয়াই-ফাই আর ব্লুুটুথ ৪.১। এ্যাপল মিউজিক আর বিটস ১- যেন এ্যাকসেস করা যায় সে জন্য আগে থেকেই আইওএস ৮.৪ ইনস্টল করা আছে এতে। এই নতুন আইপড তৈরিতে তারুণ্যের পছন্দকে বিশেষভাবে মূল্যায়ন করা হয়েছে। মোট ছয় রঙে পাওয়া যাচ্ছে আইপড টাচ। এগুলো হলো- লাল, নীল, গোলাপি, রূপালি, ধূসর, সোনালি। ১৬ জিবি, ৩২ জিবি, ৬৪ জিবি আর ১২৮ জিবি মডেলের আইপড টাচ ১৫ জুলাই থেকে এ্যাপল অনলাইন স্টোরে পাওয়া যাচ্ছে। আর এগুলোর দাম রাখা হয়েছে যথাক্রমে ১৯৯, ২৪৯, ২৯৯ আর ৩৯৯ মার্কিন ডলার। নেতিবাচক প্রভাব স্মার্ট ডিভাইসগুলোর একদিকে যেমন ভাল দিক আছে, ঠিক মুদ্রার অপর পৃষ্ঠের মতো এর নেতিবাচক দিকও রয়েছে। অনেক তরুণ-তরুণীরা রাত জেগে বাবা-মাকে ফাঁকি দিয়ে এসব ব্যবহারের ফলে উচ্চ রক্তচাপসহ নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তাছাড়া এসব ডিভাইস ব্যবহারের ফলে চোখে চাপ পড়ে। যার ফলে অল্প বয়সেই চোখে উঠে মোটা পাওয়ারের চশমা। আবার ইন্টারনেট সহজলভ্যতার কারণে এসব ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে অনেকেই নিজ ইচ্ছায় আবার অনেকেই নিজের মনের অজান্তে সাইবার অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন। যা কোনভাবেই আমাদের কাম্য নয়। তাই আমাদের সকলের উচিত এ সকল খারাপ দিক থেকে মুক্ত হয়ে এর ইতিবাচক দিকগুলোকে গ্রহণ করা। তবেই তো তথ্য প্রযুক্তির উন্নতি সঠিকভাবে সাধিত হবে। নাসিফ শুভ ছবি : তাহসিন মডেল : রাসেল, রুম্মান, রিমন, নাফিসা ও জেরিন
×