ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গত সপ্তাহে লেনদেন বেড়েছে প্রায় ৪০ ভাগ

প্রকাশিত: ২৩:০৭, ৩১ অক্টোবর ২০১৫

গত সপ্তাহে লেনদেন বেড়েছে প্রায় ৪০ ভাগ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর তৃতীয় প্রান্তিকের মিশ্র করপোরেট আয়, তারল্য পরিস্থিতি ও সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতায় ধারাবাহিকতায় গত সপ্তাহেও শেয়ার বিক্রির প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। গত মাসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স প্রায় ৩০০ পয়েন্ট কমেছে। বিক্ষিপ্ত কয়েকটি কার্যদিবস ছাড়া নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত ছিল মাসজুড়েই। তবে মাসের শেষ সপ্তাহে প্রধান বাজারে সার্বিক লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। গত সপ্তাহে ডিএসইতে সার্বিক লেনদেন বেড়েছে ৩০ দশমিক ৯১ বা প্রায় ৪০ ভাগ। সাপ্তাহিক বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সপ্তাহের প্রথম দিন মোটামুটি মিশ্র অবস্থার মধ্য দিয়ে গেলেও দ্বিতীয় কার্যদিবসেই বাজার দরপতনের ধারায় ফিরে আসে। মঙ্গলবার বড় দরপতনের পর শেষ দুদিনও বিক্রয়চাপ অব্যাহত ছিল। সপ্তাহের উল্লেখযোগ্য সংবাদগুলোর মধ্যে ছিল : সেপ্টেম্বরে আন্তঃব্যাংক লেনদেনে (কল মানি) গড় সুদের হার ছয় বছরের সর্বনিম্ন ৫ দশমিক ৭১ শতাংশের নিচে নেমে আসা, ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি এক বছর আগের তুলনায় কমে যাওয়া। ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়ে কল মানির সুদের হার একপর্যায়ে ৫ শতাংশেরও নিচে নেমে যায়। ঋণের চাহিদা কমাই এর মূল কারণ। পাঁচ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইএক্স ১ দশমিক ৭৯ শতাংশ বা ৮৩ দশমিক ১৯ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৫৬৪ দশমিক ৪৯-এ। বাজার বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, সূচকটি মনস্তাত্ত্বিক সাপোর্ট স্তর ৪ হাজার ৬০০ পয়েন্টের নিচে নেমে আসায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা স্নায়বিক চাপ সৃষ্টি হয়। আরো দরপতনের আশঙ্কায় অনেকেই শেয়ার বিক্রি করে পুঁজির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেন। গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হওয়া ছয় নিয়ন্ত্রক সংস্থার সমন্বয় সভাও বিনিয়োগকারীদের আলোচনার কেন্দ্রে ছিল। তাদের প্রত্যাশা ছিল, শেয়ারবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ সমন্বয়ের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেয়া সময়সীমা বাড়ানোর পক্ষে জোরালো অবস্থান নেবে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। খাতভিত্তিক চিত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহে ডিএসইতে কাগজ-মুদ্রণ, পাট ও মিউচুয়াল ফান্ড ছাড়া সব খাতই দর হারিয়েছে। শতকরা হিসাবে বাজার মূলধন সবচেয়ে বেশি কমেছে সিমেন্ট খাতের ৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ। প্রকৌশল, ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক খাত, তথ্যপ্রযুক্তি ও বিবিধ খাতও ৩ শতাংশের বেশি বাজার মূলধন হারিয়েছে। এদিকে ডিএসইতে লেনদেনের দৈনিক গড় আগের সপ্তাহের চেয়ে ৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেড়ে ৩৬১ কোটির ঘরে উন্নীত হয়েছে। এদিকে গত সপ্তাহে তৃতীয় প্রান্তিকে আগের তুলনায় মুনাফা কমার ঘোষণার পরেও লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট। সার্বিকভাবে কোম্পানিটির মোট লেনদেন হয়েছে ৫৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকার। এরপরেই রয়েছে শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানির লেনদেন। কোম্পানির মোট লেনদেনের পরিমাণ ৪৮ কোটি ৭২ লাখ টাকা। এরপরে কেডিএস এক্সেসরিজের ৪৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা, সিভিও পেট্রো কেমিক্যালের ৪৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা, ইফাদ অটোসের ৩৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের ৩৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা, সি অ্যান্ড এ টেক্সটাইলের ৩৮ কোটি ৫১ লাখ টাকা, আমান ফিডের ৩৭ কোটি ৩১ লাখ টাকা ও খুলনা পাওয়ারের ৩৬ কোটি ২৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। গত সপ্তাহে দরবৃদ্ধির সাপ্তাহিক তালিকায় সবার ওপরে উঠে আসে মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ। পাঁচ কার্যদিবসে বিবিধ খাতের কোম্পানিটির শেয়ারের দর ৫২ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। এ তালিকায় এর পর ছিল যথাক্রমে, দেশ গার্মেন্টস ৪১ দশমিক ২০ শতাংশ, তৃতীয় আইসিবি মিউচুয়াল ফান্ড ১৮ দশমিক ১০, শমরিতা হাসপাতাল ১৭ দশমিক ৬৮, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক ১৬ দশমিক ৮২, জেমিনি সি ফুড ১৫ দশমিক ৭০, আনলিমা ইয়ার্ন ১৪ দশমিক ৬৫, এক্সিম ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড ১২ দশমিক শূন্য ৭, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল ২৪ দশমিক শূন্য ৩ ও হাক্কানি পাল্প ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। দরপতনের শীর্ষে ছিল যথাক্রমে ফার কেমিক্যাল, ইমাম বাটন, বেঙ্গল উইন্ডসর থার্মোপ্লাস্টিকস, আজিজ পাইপস, অলিম্পিক অ্যাক্সেসরিজ, জাহিন স্পিনিং, সাভার রিফ্র্যাক্টরিজ, ন্যাশনাল টিউবস, মডার্ন ডায়িং ও রেনউইক যজ্ঞেশ্বর।
×