ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাউলের সুরে লাল মিয়ার জীবন জীবিকা

প্রকাশিত: ০৫:১৭, ৩১ অক্টোবর ২০১৫

বাউলের সুরে লাল মিয়ার জীবন জীবিকা

সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নের আনালেরতাড়ি গ্রামের বাউল গীতি কবি একরামুল হক লাল মিয়া। বাউল গানের জন্য নিবেদিত তৃণমূল পর্যায়ের সঙ্গীত প্রিয় ব্যক্তিত্ব। এই গানই যার জীবন জীবিকা ও সাধনায় সিদ্ধি লাভের উপায়। তৃণমূল পর্যায়ে নিজ খেয়ালে যিনি নিজের লেখা গান, গীতি কবিতা লিখে সুর দিয়ে সঙ্গীত পরিবেশন করে জীবিকা নির্বাহ করে সবার মনোরঞ্জনের পাশাপাশি ইতোমধ্যে মানুষের মাঝেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। তিনি লাল মিয়া বাউল। তার বাউল গানের আধ্যাত্মিক গুরু ফরিদপুর জেলা শহরের চান্দ বয়াতি। ঢাকার মিরপুরে শাহ আলীর বাগদাদের (রহঃ) মাজারে ১৯৯৪ সালে চান্দ বয়াতির সংস্পর্শে আসেন তার গানে আকৃষ্ট হয়ে। তখন তার বয়স মাত্র ১৬ বছর। সেই থেকে চান্দ বয়াতির শিষ্যত্ব লাভ করে তার বাউল সঙ্গীত সাধনার সূত্রপাত। তারপর আর তাকে পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। সেই থেকে তিনি গান এবং গীতি কবিতা লিখতে শুরু করেন। নিজের লেখা গান নিজে সুর করেই তিনি পরিবেশন করে থাকেন পথে প্রান্তরে জনতার ভিড়ে। তার সঙ্গী শুধুমাত্র দোতরা আর সঙ্গে মন্দিরা হাতে তাজুল ইসলাম। অন্য সময় বড় বড় অনুষ্ঠানে তার সঙ্গে সঙ্গীত পরিবেশনের সময় বাংলা ঢোল, খোল, হারমোনিয়াম ও বাঁশের বাঁশি দিয়ে সহযোগিতা দেয়ার জন্যও রয়েছে সঙ্গী। এদের নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন লাল বাউল। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে চুক্তির ভিত্তিতে সঙ্গীত পরিবেশন করলেও তাঁর ক্ষেত্রে আর্থিক প্রাপ্তিটা মুখ্য নয়। বরং মানুষকে গান শুনিয়ে তিনি আনন্দ খোঁজেন। ইতোমধ্যে লাল মিয়া বাউলের ১০টি গান নিয়ে ‘নিদয়া মোর তিস্তা নদী’ নামে এ্যালবামও বেরিয়েছে। মাইজভা-ারি তরিকার আধ্যাত্মিক মুরিদ এই গীতি কবি লাল মিয়া এ পর্যন্ত দেড় হাজার বাউল, পল্লীগীতি ভাওয়াইয়া গান ও আড়াই শ’ গীতিকবিতা রচনা করেছেন। মাত্র অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া শিখে সঙ্গীতপ্রিয় মানুষটি গান-কবিতা লেখায় এতটাই দক্ষ যে, মুহুর্তেই গান লিখে সুর করে তা পরিবেশন করতে পারেন। দুই ছেলে আর স্ত্রী নিয়ে তার সংসার। যা নিয়ে তিনি ভাবেন না। কারণ বাউল গানের মাধ্যমে যে আধ্যাত্মিক সাধনায় তিনি নিবেদিত রয়েছেন, তাতেই তার সাফল্য-মুক্তি সবই নির্ভর করছে বলে তিনি মনে করেন। Ñআবু জাফর সাবু গাইবান্ধা থেকে
×