ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আরিফুর সবুজ

বই ॥ দুঃসহ বেদনার অমর গাথা

প্রকাশিত: ০৬:১৪, ৩০ অক্টোবর ২০১৫

বই ॥ দুঃসহ বেদনার অমর গাথা

ফিকশন না হয়েও ফিকশন বই হিসেবে ‘ভয়েসেস ফ্রম চেরনোবিল’ কে অ্যাখ্যা দেয়া যায়। যাবেই বা না কেন? সাক্ষাতকারভিত্তিক এই বইটি যে ফিকশনের চেয়েও প্রাণবন্ত ও রোমাঞ্চকর। বইটি পাঠককে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে চেরনোবিলের সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনার রাতে, যেদিন আকাশ এবং মানুষের দেহ পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল বিষাক্ত ধোঁয়ায়। পারমাণবিক চুল্লির বিস্ফোরণে তেজস্ক্রিয় ধোঁয়া কু-লী পাকিয়েছিল যেন নৃত্যের ছন্দে। সেই নৃত্যের ছন্দ যারা দেখেছিল সেদিন, তারা বুঝেছিল ঐ নৃত্য আনন্দ নৃত্য নয়, ঐ নৃত্য মরণ নৃত্য। পুরো চেরনোবিল এলাকায় মরণ নৃত্যের তালে তালে বেজে চলেছিল করুণ সুর, যে সুরের মোহময়তায় বলি হয়েছিল অসংখ্য তাজা প্রাণ। আর এতেই নিভে গিয়েছিল তাদের স্বপ্ন, স্মৃতি, সুখ আর ভালোবাসা। ভুক্তভোগী, প্রত্যক্ষদর্শী, কিংবা সেই দুর্ঘটনার সঙ্গে কোন না কোনভাবে জড়িত মানুষজন যারা বেঁচে আছেন, তাদের কাছে ঐ স্মৃতি দুঃসহ যাতনার। দিন কিংবা রাত সবসময়ই ঐ বিষাক্ত ধোঁয়ার কু-লী, আগুনে ঝলসে যাওয়া ঐ বিকৃতমুখগুলো যেন তাদের তাড়িয়ে বেড়ায়। ঐ স্মৃতি তাদের জীবনকে নিয়ে যায় নরকের কাছাকাছি। এ নিয়ে তারা কখনই কথা বলতে চান না। একা, কেবল একা থেকেই তারা প্রতিনিয়ত ভুলে থাকার চেষ্টা করেন সেই দুঃসহ স্মৃতি। সেই যন্ত্রণাকাতর মানুষদের খুঁজে বের করে সেভেতলানা আলেক্সিয়েভিচ তাদের সাক্ষাতকার নিয়েছেন। সেই সাক্ষাতকারগুলো তিনি এমন মানবিকভাবে লিপিবদ্ধ করেছেন, তা ছাড়িয়ে গেছে ফিকশনকেও। এটাই বইটির বিশেষ দিক। দিনটি ছিল ১৯৮৬ সালের ২৬ এপ্রিল। চেরনোবিল বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্রের চার নম্বর চুল্লিতে অকস্মাত বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ঘটে যায় অনাকাক্সিক্ষত মাত্রার পারমাণবিক বিপর্যয়। এটিই ছিল বিশ শতকের সবচেয়ে বড় কারিগরি বিপর্যয়। ভুল পারমাণবিক পরীক্ষায় চুল্লিতে চেইন বিক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছিল। অগ্নিগোলক সৃষ্টি হয়ে তা ছড়িয়ে পড়েছিল আকাশে বাতাসে। বিক্রিয়া এতই শক্তিশালী ছিল যে, হাজার টনের স্টিল ও কংক্রিটে তৈরি ঢাকনা উড়ে যায়। গ্রাফাইট পুড়ে যায়। পারমাণবিক চুল্লির মূল ধাতব পদার্থগুলো পুড়ে গেলে ছড়িয়ে যায় অন্য চুল্লিগুলোতে। বিস্ফোরণ ঘটে অন্যান্য চুল্লিগুলোতেও। বিস্ফোরণের ভয়াবহ শব্দে নারকীয় আবহ যেন সৃষ্টি হয়েছিল শস্য শ্যামলা ধরণীতে। কেবল চুল্লির স্থানই নয়, পারমাণবিক তেজস্ক্রিয়তা ক্রমে ছড়িয়ে পড়ে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নসহ ইউরোপের প্রায় তিন চতুর্ভাগ অঞ্চলে। তাৎক্ষণিক এই বিস্ফোরণে নিহত হয়েছিলেন একত্রিশজন মানুষ। মারাত্মকভাবে তেজস্ক্রিয়তায় আক্রান্ত হয়েছিলেন দুই শতাধিক মানুষ। পশু-পাখিসহ বন্যপ্রাণী যেন পরিণত হয়েছিল ধ্বংসস্তূপে। স্থানীয় অধিবাসী যারা আক্রান্ত হয়েছিল এই তেজস্ক্রিয়তায়, তাদের উদ্ধার কার্যক্রমকে বিলম্বিত করেছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন কর্তৃপক্ষ। কারণ তারা চেয়েছিল বিশ্ববাসীকে এ ঘটনা না জানাতে। তাদের এই লুকোচুরির কারণে এত ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের ঘটনা তিনদিন পর জানতে পারে বিশ্ববাসী। এবং তা সম্ভব হয়েছিল সুইডিশ নিউক্লিয়ার প্লান্টের কর্মীদের কল্যাণে। নিজেদের পোশাকে তেজস্ক্রিয় পদার্থ খুঁজে না পেয়ে তারা পরীক্ষা করে নিজেদের প্লান্ট। এরপর তারা এগিয়ে যায় ইউক্রেন-বেলারুশ সীমান্তের দিকে। সেখানে গিয়ে তারা বুঝতে পারে এই অঞ্চলে এমন এক ভয়াবহ পারমাণবিক বিপর্যয় ঘটেছে যে, আগামী ৪৮,২০০ বছর এ অঞ্চলকে তেজস্ক্রিয়তার ভার বহন করতে হবে। ইউক্রেন ও বেলারুশ থেকে উদ্ধার করা হয় লাখের বেশি মানুষ। দুর্বল সরঞ্জামাদি আর প্রশিক্ষণহীন কয়েক হাজার কর্মী দিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন কর্তৃপক্ষ চেষ্টা চালায় তেজস্ক্রিয়তা নিয়ন্ত্রণে। এতে লাভ তো হয়ইনি, বরং ঐসব মানুষ তেজস্ক্রিয়তায় আক্রান্ত হয়ে নিজেদের প্রাণই খুইয়েছিল। এই পারমাণবিক বিস্ফোরণে বেলারুশের চারশ’ পঁচাশিটি গ্রাম ধ্বংস হয়ে যায়। মাটির নিচে একেবারে চাপা পড়ে সত্তরটি গ্রাম। ঊনত্রিশ বছর আগের সেই ভয়াবহ বিস্ফোরণের প্রভাব এখনও বিদ্যমান। চেরনোবিলের ঘটনার পর অঞ্চলজুড়ে ভীতি সৃষ্টি হয়েছিল। এই ভীতি ভালবাসা হারানোর ভীতি, প্রিয়কে হারানোর ভীতি। এমনটি সন্তান নিতেও ভয় পেত মানুষ। যদি সন্তান প্রতিবন্ধী হয়, এই ভয়ে কেউ সন্তান নিতে চাইত না। এখনও অনেকে চায় না। বেলারুশের প্রতি পাঁচজনের একজন তেজস্ক্রিয়তায় সংক্রমিত। এ সংখ্যা ছাড়িয়েছে একুশ লাখ, যার মধ্যে সাত লাখই কোমলমতি শিশু। ফলে দেশটিতে ক্যান্সার, স্নায়ুতন্ত্র ও প্রজনন জটিলতায় ভুক্তভোগীর সংখ্যা বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। জাপানে ঘটে যাওয়া প্রাকৃতিক সুনামির মতো চেরনোবিলের দুর্ঘটনাকে মানবসৃষ্ট সুনামি হিসেবে আখ্যা দেয়া যায়। ভয়াবহ সেই চেরনোবিল দুর্ঘটনা ঘটার পর বিশ্ব মিডিয়ায় এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। কিন্তু ব্যক্তিপর্যায়ে ভুক্তভোগীদের নিয়ে গভীর আলোচনা সেভেতলানা আলেক্সিয়েভিচই প্রথম তাঁর বইতে করেছেন। বিশ্ববাসী চেরনোবিলের ঘটনা সম্পর্কে অবহিত হলেও, এই প্রপঞ্চটির মর্মকথা আজও বুঝতে পারেনি। এই কাজটিই বেশ দক্ষতার সঙ্গে সেভেতলানা আলেক্সিয়েভিচ ‘ভয়েসেস ফ্রম চেরনোবিল’ বইতে সম্পন্ন করেছেন। উন্মোচন করেছেন অনেক অজানা সত্যের। বইতে তিনি ব্যক্তিক দৃষ্টিকোণ থেকে ঘটনাগুলোকে এমন সূক্ষ্মভাবে তুলে ধরেছেন যে, পাঠকের কাছে ব্যক্তিক থেকে তা সামষ্টিকভাবে ধরা দেয়। বইটি কেবল চেরনোবিলের দুর্ঘটনা আর তার পেছনের কার্যকারণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং এর ব্যাপ্তি চেরনোবিল ছাড়িয়ে এখন বিশ্বব্যাপী। চেরনোবিল দুর্ঘটনা ব্যক্তিক ক্ষয়ক্ষতির সঙ্গে সেই সময়কার সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের কমিউনিস্ট রাজনীতির জন্য হুমকি হয়ে দেখা গিয়েছিল। কেননা জনগণ তেজস্ক্রিয় রশ্মির আতঙ্কে কমিউনিস্ট পার্টির প্রভুত্বকে অস্বীকার করে পালিয়ে গিয়েছিল নিজ বাসভূমি ছেড়ে। সেভেতলানা তাঁর এই বইটিতে কমিউনিস্ট পার্টির রাজনৈতিক বিপর্যয়ের এই চিত্রটি বেশ স্পষ্ট করে তুলেছেন তাঁর এই বইটিতে। রুশচালিত পারমাণবিক চুল্লিতে বিস্ফোরণ ঘটার কারণে বেলারুশ ও ইউক্রেনে রুশবিরোধী জাতিয়তাবাদ প্রবলভাবে দানা বাঁধে। ইউরোপজুড়েই রুশবিরোধী মনোভাব জাগ্রত হয়, যা সেভেতলানা তাঁর বইতে বেশ পারঙ্গমতার সঙ্গেই তুলে ধরেছেন। সোভিয়েত শাসনের ভিতকে নড়বড়ে করে দিয়েছিল সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধ, চেরনোবিলের দুর্ঘটনা সেই ভিতকে কিভাবে প্রবলভাবে ঝাঁকিয়ে দিয়েছিল, তাও তিনি বইটিতে তুলে এনেছেন। তাছাড়া, তিনি দুর্ঘটনায় আক্রান্ত কিংবা প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষাতকার এত বলিষ্ঠভাবে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন যে, পাঠক বইটি পড়তে গিয়ে কেবল নিজের জীবনের তাৎপর্যই উপলব্ধি করে না, পুরো মানব জীবনের উদ্দেশ্য নিয়ে ভাবতে শুরু করে। সেই পারমাণবিক বিস্ফোরণ যে বিশ্ববাসীর সমগ্র চিন্তা ও জীবনদর্শনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছে, সে বিষয়টিও লেখক চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন। এছাড়াও এ বইয়ে ফুটে ওঠেছে, কিভাবে ক্ষমতার অন্ধ উপাসনা সাধারণ মানুষের আশা-আকাক্সক্ষা, স্বপ্নকে বলি দিয়ে দেয়। ক্ষমতার লালসার কাছে নাগরিকের জীবন কত ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র। তাইতো, এত ভয়ানক প্রাণহারী দুর্ঘটনা ঘটার পরও তিনদিন পর্যন্ত প্রশাসন চেষ্টা করেছিল ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার। ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পরও, ক্ষমতালিপ্সু রাজনীতিবিদরা জনগণকে মিথ্যে আশ্বাস দিয়ে বেড়াচ্ছিল এই বলে যে, সবকিছু ঠিক আছে, সব নিয়ন্ত্রণে আছে, বিপদের কোন আশঙ্কা নেই। এমন কাঁহাতক মিথ্যে দিয়ে তারা ক্ষমতাকে আঁকড়ে রাখতে চেয়েছিল। ক্ষমতালিপ্সু রাজনীতিবিদদের সেই হীন চরিত্র সেভেতলানা তাঁর বইতে উন্মোচন করেছেন। সেভেতলানার এই বইটি চেরনোবিলের দুর্ঘটনায় আক্রান্ত কিংবা এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানুষের ভয়াবহ দুঃস্বপ্নেরই প্রতিধ্বনি, প্রতিচ্ছবি। বইটি যে লেখক বেশ খেটেখুঁটে লিখেছেন, তা প্রতিটি ছত্রেই স্পষ্ট। দশ বছরে পাঁচশ লোকের সাক্ষাতকার নিয়েছেন তিনি কেবল এই বইটি লেখার জন্য। যদিও বাছাই করা একশ সাতটি সাক্ষাতকার তিনি বইটিতে লিপিবদ্ধ করেছেন। এক্ষেত্রে লেখক গুরুত্ব দিয়েছিলেন সেসব লোকের সাক্ষাতকারই যারা সেই দুঃসহ অভিজ্ঞতা বয়ে বেড়াচ্ছেন। তাদের কাছ থেকে মৌখিক ইতিহাস সংগ্রহ করে ‘গল্প বলার ছল’ এই নীতি অনুসরণ করে তিনি সাক্ষাতকারগুলো এমনভাবে সাজিয়েছেন, তা পড়েই পাঠকের চোখে পুরো চেরনোবিলের সেই সময়কার এবং তৎপরবর্তী দৃশ্যপট জীবন্ত হয়ে ধরা দেয়। সেভেতলানার বইটিতে দেখা যায়, যারা আগুন নেভাতে গিয়েছিল, সেসব দমকল কর্মীরা প্রত্যেকেই হয়ে গিয়েছিলেন এক একটি ক্ষুদে নিউক্লিয়ার রিয়্যাক্টর। যেসব ডাক্তার এদের চিকিৎসা করছিলেন, তারাও পরিণত হয়েছিলেন এক একটি ক্ষুদে রিয়েক্টরে। এমনকি পাইলট যারা হেলিকপ্টারে করে ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করতে গিয়েছিলেন, তারাও আক্রান্ত হয়েছিলেন তেজস্ক্রিয়তায়। এ যেন রিয়্যাক্টরে পরিণত হওয়ার শিকল। যেই সাহায্যের জন্য হাত বাড়িয়েছে, সেই বিপদে পড়েছে। ফলে দমকল বাহিনী, নার্স, ডাক্তারসহ অসংখ্য মানুষ যারা তেজস্ক্রিয়তায় আক্রান্তদের সাহায্য করতে চেয়েছিল, তারাও বলি হয়ে গিয়েছিল ঐ তেজস্ক্রিয়তার কাছে। মৃত্যুকে আলিঙ্গনের খেলায় যেন মেতে উঠেছিল সবাই। নিজের মৃত্যুর আগে অন্যের মৃত্যুর দৃশ্য যে তাদের কতটা পীড়ন দিয়েছিল, তা লেখক এমনভাবে তুলে ধরেছেন যে, পাঠকের পক্ষে আবেগতাড়িত না হয়ে থাকাটা অস্বাভাবিকই। দমকল বাহিনীর ভেসেলি ইগনাতেনকোর স্ত্রী লুদমিললার বর্ণনায় যে হৃদয়বিদারক দৃশ্যপট লেখক পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন, তাতে চোখে পানি ধরে রাখা কষ্টকর। বইটির শুরু এবং শেষ দু’জন বিধবার করুণ কাহিনীর মধ্য দিয়ে। পালিয়ে যাওয়া লোকজন, সৈন্য, ডাক্তার, নিউক্লিয়ার প্লান্টের বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলী, পরিবেশ পর্যবেক্ষক, ফটোগ্রাফার, রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন প্রত্যক্ষদর্শীর ঘটনা ও তৎপরবর্তী পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণকে এমনভাবে লেখক তুলে ধরেছেন যে, পাঠকের চোখে ঊনত্রিশ বছর আগের ঘটে যাওয়া বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ কারিগরি বিপর্যয় এক ক্যানভাসেই ধরা পড়ে। সেভেতলানা বইটিতে একসঙ্গে খেলেছেন শব্দ আর নিঃশব্দতার খেলা। বইটিতে ভালোবাসার বন্ধন, আবেগ, স্বপ্ন কিভাবে ধুলোয় লুটোয় অনিচ্ছাকৃত অনাকাক্সিক্ষত বিপর্যয়ের কারণে লেখক তুলে ধরেছেন নানাজনের সাক্ষাতকারের মধ্যে দিয়ে। আবার তাদের দুঃখ, বেদনার বর্ণনার মধ্যে দিয়ে নৈরাশ্যবাদের চিত্র এঁকেছেন। ক্ষমতালিপ্সুতা, লোভ, সন্দেহ, ষড়যন্ত্র যে মানুষের জীবনকে বিপন্ন করে তোলে তা তিনি তুলে ধরেছেন অত্যন্ত সাবলীলভাবে। আবার মানুষের কৃতকর্মের কারণে নিরীহ প্রাণিকুল থেকে শুরু করে পুরো প্রকৃতিই যে ধ্বংসের মুখোমুখি হতে পারে, এই বইয়ের মাধ্যমে তা আবারো বিশ্ববাসীকে অত্যন্ত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন লেখক। বইটি তিনি লিখেছিলেন ১৯৯৭ সালে রুশ ভাষায় আর তা ইংরেজীতে অনুবাদ হয়েছিল ২০০৫ সালে। বইটি ঐ বছর নন-ফিকশন ক্যাটগরিতে ন্যাশনাল বুক ক্রিটিকস সার্কেল অ্যাওয়ার্ড লাভ করে। এর দশ বছরের মাথায় সাংবাদিক সেভেতলানা আলেক্সিয়েভিচ এ বছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেছেন এককথায় অনবদ্য সাবলীল মানবিক আবেদনসম্পন্ন এই লেখার স্বীকৃতিস্বরূপ।
×