ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

কক্সবাজারে ২শ’ বছরের জাহাজ ভাসা উৎসব আজ

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ২৯ অক্টোবর ২০১৫

কক্সবাজারে ২শ’ বছরের জাহাজ ভাসা উৎসব আজ

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ সৈকত রানী কক্সবাজারের ঐতিহ্যবাহী বাঁকখালী নদীর দু’পারে ভিড় করবে হাজার হাজার নর-নারী। আজ বৃহস্পতিবার বাঁকখালী নদীতে ভাসবে দৃষ্টিনন্দন কল্প জাহাজ। এরই মধ্যে আটটি বৌদ্ধপল্লীতে পুরোদমে চলছে কল্প জাহাজ নির্মাণ কাজ। বাঁশ, বেত, কাঠ, কাগজ দিয়ে অপূর্ব কারুকাজে তৈরি জাহাজে ঈগল, ময়ূর, চূড়াসহ বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিকৃতি ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। ছয়-সাতটি নৌকাকে এক করে সেই নৌকার ভেলায় বসানো হবে একেকটি জাহাজ। সেই জাহাজেই চলবে শিশু-কিশোর ও যুবকদের বাঁধভাঙা আনন্দ। তারা নানা বাদ্য বাজিয়ে সেখানে নাচবে, গাইবে ও মেতে ওঠবে অন্যরকম উচ্ছ্বাসে। আবার কোন কোন জাহাজে চলবে বুদ্ধ কীর্তন ‘বুদ্ধ, ধর্ম সংঘের নাম সবাই বলো রে, বুদ্ধের মতো এমন দয়াল আর নাইরে’। কক্সবাজারে রামু প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে বাঁকখালী নদীতে ঐতিহ্যবাহী জাহাজ ভাসানো উৎসবে এ প্রাণের মেলা বসবে। বিভিন্ন বিহারের বৌদ্ধ ভিক্ষুর মন্ত্র পাঠ শেষে দুপুর আড়াইটার দিকে বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার প্রাক্তন সভাপতি, উপ-সংঘরাজ, একুশে পদকপ্রাপ্ত সত্যপ্রিয় মহাথেরর আশীর্বাদ প্রদানের মধ্য দিয়ে জাহাজ ভাসানো উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নদীতে চলবে এ আনন্দায়োজন। প্রতি বছরের মতো এ বছরও এ উৎসবের আয়োজন করেছে রামু কেন্দ্রীয় জাহাজ ভাসা উৎসব উদ্যাপন পরিষদ। বাঁশ, কাঠ, বেত, রঙ্গিন কাগজ দিয়ে রেঙ্গুনী (ইয়াঙ্গুন) কারুকাজে তৈরি দৃষ্টিনন্দন এসব জাহাজ বানানোর কাজ ও রঙ লাগানো সমাপ্ত। কিছু দিন ধরে চোখে ঘুম নেই জাহাজ নির্মাণশিল্পীদের। সব কাজ শেষে আজ জাহাজগুলো ভাসানো হবে বাঁকখালী নদীতে, যা খুব সহজেই দৃষ্টি কাড়বে মানুষের। জাহাজ ভাসানোকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ তিন মাসব্যাপী রামুর প্রায় বিশটি বৌদ্ধপল্লীতে আনন্দায়োজনের পর মহা উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে এ উৎসব সম্পন্ন করা হবে। খাগড়াছড়িতে ওয়াগ্যোয়ে পোয়েহ পার্বত্যাঞ্চল প্রতিনিধি খাগড়াছড়ি থেকে জানান, বুধবার খাগড়াছড়িতে পালিত হয়েছে মারমা সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ওয়াগ্যোয়ে পোয়েহ বা প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব। ওয়াগ্যোয়ে পোয়েহ উৎসবকে ঘিরে খাগড়াছড়ি জেলার বৌদ্ধ বিহারগুলোকে নানা রঙে সাজানো হয়েছে। ওয়া শব্দের অর্থ বর্ষাবাস আর গ্যোয়ে শব্দের অর্থ পরিসমাপ্তি। দিনটি উপলক্ষে বুধবার সকাল থেকে বিহারগুলোতে চলেছে বিশ^শান্তি কামনায় সমবেত বুদ্ধ প্রার্থনা, বুদ্ধপূজা, বুদ্ধমূর্তি দান, সংঘদান, অষ্টপরিখরা দান, ধর্ম দেশনা ও উৎসর্গ, বিক্ষু সংঘকে পিন্ড দান, পঞ্চশীল গ্রহণ, হাজার বাতি দান, আকাশ প্রদীপ দান। আষাঢ়ি পূর্ণিমার পর দিন থেকে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের তিন মাসব্যাপী ওয়া বা বর্ষাব্রত (উপোস) পালন শুরু হয়। তিন মাস পর বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মাঝে আনন্দের বার্তা বয়ে আনে এই প্রবারণা পূর্ণিমা। বিকেলে হবে হাজার ফুল দিয়ে বুদ্ধপূজা এবং চেঙ্গী নদীতে নৌকা ভাসানো ও রাতে হাজার প্রদীপ প্রজ্বলন আকাশ প্রদীপ উত্তোলন বা ফানুস বাতি উড়ানো। এছাড়া ‘ওয়াগ্যোয়ে পোয়ে’ উপরক্ষে প্রতিটি মারমাপল্লীতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পিঠা তৈরি, মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বলন ও রাতে ফানুস বাতিল ওড়ানোসহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। নওগাঁয় শত বছরের কুজাইল মেলা নিজস্ব সংবাদদাতা নওগাঁ থেকে জানান, রাণীনগরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব লক্ষ্মীপূজা উপলক্ষে বুধবার উপজেলার কুজাইল বাজারে শত বছরের প্রাচীন তিন দিনব্যাপী মেলা শুরু হয়েছে। শারদীয় দুর্গাপূজার ৫ দিন পর কোনপ্রকার প্রচারণা ছাড়াই শত শত দোকানি এসে এ মেলায় বসেন। মেলা শুরুর দুই-তিনদিন আগে থেকে কাঠের ফার্নিচার, কসমেটিক্স, মিষ্টি, বিভিন্ন ধরনের খেলার সামগ্রীর দোকানসহ শিশুদের চিত্তবিনোদনের নাগরদোলা মেলায় এসে স্থান দখল করে নিয়েছে। বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের আগাম উপস্থিতির কারণে জাগরণ সংসদের মেলা পরিচালনা কমিটি দোকানিদের জায়গা করে দিতে হিমশিম খাচ্ছে। নওগাঁর ছোট যুমনা নদীর তীরে অবস্থিত কুজাইল মেলার ইতিহাস-ঐতিহ্য দীর্ঘদিনের হওয়ায় ৯০ বছর বয়সী স্থানীয় মানুষরাও এর জন্মের ইতিহাস বলতে পারে না।
×