ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ধৈর্যের খেলায় আমরাই জয়ী ॥ মিসবাহ

প্রকাশিত: ০৪:২৫, ২৮ অক্টোবর ২০১৫

ধৈর্যের খেলায় আমরাই জয়ী ॥ মিসবাহ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দুবাই টেস্টে রুদ্ধশ্বাস নাটকীয়তার পর জয় পেয়েছে পাকিস্তান। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০তে এগিয়ে পাকিরা। পঞ্চমদিনে ৬ ওভার আগে হার মানে ইংল্যান্ড। চতুর্থ দিনে মনে হচ্ছিল সহজে জিতে যাবে পাকিস্তান, শেষ দিন লাঞ্চের পর ঘুরে যায় দৃশ্যপট। ইংলিশ টেলএন্ডাররা প্রায় কেড়ে নিতে যাচ্ছিল পাকিস্তানের জয়। দারুণ এ সাফল্যের পর পাক অধিনায়ক মিসবাহ-উল হক এটিকে ধৈর্যের খেলায় নিজেদের সাফল্য বলে উল্লেখ করেন। অন্যদিকে নিশ্চিত হারতে বসা ম্যাচে ড্রয়ের দ্বারপ্রান্তে গিয়েও শেষ রক্ষায় ব্যর্থতার জন্য নিজেদের কাঠগড়ায় তুলতে চান না এ্যালিস্টার কুক। প্রতিপক্ষ অধিনায়কের মতে, এটাই ক্রিকেট। ‘পুরো ম্যাচটা ছিল ধৈর্যের খেলা। টেস্ট ক্রিকেটের আসল মজাটা এখানেই। ইংল্যান্ড টেলএন্ডার ব্যাটসম্যানরা আমাদের কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছিল। ফলে টেস্ট এতটা ক্লোজ হয়েছে, এটাই বোধ হয় ক্রিকেটের আসল আনন্দ। জয়ের জন্য আমাদের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়তে হয়েছে, ততক্ষণ ওরাও আশা ছাড়েনি। এমন ম্যাচ দর্শকরা অনেক দিন মনে রাখবে।’ বলেন পাক অধিনায়ক মিসবাহ। প্রথমে ৩৭৮ রানে অলআউট পাকিস্তান ৬ উইকেটে ৩৫৪ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে। প্রথম ইনিংসে ২৪২- এ গুটিয়ে যাওয়া ইংল্যান্ডের সামনে জয়ের জন্য ৪৯১ রানের অসম্ভব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়। পঞ্চম দিন শেষ বিকেলে নাটকীয়তাপূর্ণ সমাপ্তির পথে ৩১২ রানে অলআউট হয় এ্যালিস্টার কুকের দল। পাকিস্তান পায় ১৭৮ রানের মনে রাখার মতো এক জয়। লাঞ্চের আগেই জয়ের গন্ধ পাওয়া পাকিস্তানকে একাই রুখে দিতে যাচ্ছিলেন ইংল্যান্ডের আট নম্বর ব্যাটসম্যান আদিল রশিদ (৬১)। ছোট্ট দুটি ইনিংস খেলে তাতে রোমাঞ্চ মাখিয়েছেন নয় ও দশ নম্বরে নামা স্টুয়ার্ট ব্রড (৩০) এবং মার্ক উড (২৯)! এক আদিলের কাছে হার মানতে বসেছিল পুরো পাকিস্তান দল। কিন্তু খেলা শেষ হওয়ার মাত্র ৬.৩ ওভার আগে অলআউট হয় ইংলিশরা। মিসবাহ বলেন, ‘৭ উইকেট নিয়ে ৩৬১ রান তোলা সহজ নয়। শেষ দিনের শুরুতে আমরা তাই নির্ভারই ছিলাম। লাঞ্চের আগে ইংলিশদের টপঅর্ডার গুড়িয়ে দেয়ার পর মনে হচ্ছিল জয়টা সময়ের বিষয়। কিন্তু শেষ দিকে ওরা অসাধারণ ব্যাটিং করেছে। হাফ সেঞ্চুরিয়ান আদিল রশিদের কথা আলাদা করে বলতে হয়। সময়টা হতাশার হয়ে উঠেলেও মনে বিশ্বাস ছিল। দুটি মাত্র ভাল ডেলিভারিই তো প্রয়োজন ছিল। ওয়াহাব রিয়াজ চমৎকর বল করেছে। শেষ পর্যন্ত আমরাই জিতেছি। জয় তো জয়ই, সেটি কিভাবে এলো, তা মুখ্য নয়।’ আবুধাবির প্রথম টেস্টে জয়ের পথে ভাল অবস্থায় ছিল ইংল্যান্ডই। কিন্তু আলোর স্বল্পতার কাছে হার মানতে হয় কুকদের। ম্যাচ ড্র হয়। দুবাইয়ে তীরে এসে হার মানা। তবু এ নিয়ে খুব বেশি ভাবতে চান না ইংল্যান্ড অধিনায়ক। কুক বলেন, ‘টেলএন্ডাররা এত চমৎকার ব্যাট করে ড্রয়ের কাছাকাছি নিয়ে গেলে টপঅর্ডারের দায়িত্বে থাকা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে হতাশা কাজ করা স্বাভাবিক। শুরুতে আমরা আরেকটু দায়িত্ব নিয়ে খেললে ফল অন্যরকম হতে পারত। তবে রশিদ-ব্রডরা এতদূর টেনে নেবে- সেটাও তো আশা করিনি। সুতরাং হতাশা থাকলেও কষ্ট নেই! পাকিস্তানী বোলাররা চমৎকার বল করেছে, বিশেষ করে ওয়াহাব রিয়াজ, সেøা উইকেটেও নিখুত লাইনে বল করেছে। দুটি ম্যাচ থেকেই আমাদের অনেক কিছু শিক্ষা হয়েছে। শেষ টেস্টে এই শিক্ষাটা কাজে লাগাতে চাই।’ শারজায় সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ও শেষ টেস্ট রবিবার থেকে।
×