ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সরকারী ক্রয়ে আঞ্চলিক নেটওয়ার্ক

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ২৬ অক্টোবর ২০১৫

সরকারী ক্রয়ে আঞ্চলিক নেটওয়ার্ক

হামিদ-উজ-জামান মামুন ॥ সরকারী ক্রয়ে যোগ হচ্ছে আঞ্চলিক অভিজ্ঞতা। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো বসছে তৃতীয় দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলিক সরকারী ক্রয় সম্মেলন। এটি ক্রয় সংস্থার প্রধানগণের মিলনমেলায় পরিণত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের আওতায় সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিটের (সিপিটিইউ) এ আয়োজনে সহায়তা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। আগামী ১ থেকে ৩ নবেম্বর রাজধানীর গুলশানের হোটেল ওয়েস্টিনে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সরকারী ক্রয়ের ক্ষেত্রে একটি কার্যকরী আঞ্চলিক নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা এবং সে লক্ষ্যে প্রণীত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে ঢাকা ঘোষণা গ্রহণের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ সম্মেলন। এ বিষয়ে সিপিটিইউ’র মহাপরিচালক ফারুক হোসেন জনকণ্ঠকে বলেন, এ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে পারস্পরিক অভিজ্ঞতা ও নতুন নতুন মেথডসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিনিয়ম হবে। ফলে ই-জিপি কার্যক্রম শক্তিশালী হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ই-জিপির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ মডেল। কেননা নেপাল কেবল এ কার্যক্রম শুরু করেবে। ভুটান, শ্রীলংকা ও পাকিস্তান কেবল ই-জিপি কার্যক্রম শুরু করেছে। পার্শ¦বর্তী দেশ ভারত কয়েকটা রাজ্যে এটি করেছে; এখনও কেন্দ্রে চালু করতে পারেনি। অন্যদিকে জর্জিয়া, ফিলিপাইন ও দক্ষিণ কোরিয়া এখনও বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে। কারণ তার এখনও ই-টেন্ডারিংয়ের ক্ষেত্রে সফট কপির পাশাপাশি হার্ড কপি জমা নেয়। কিন্তু আমরা পুরোপুরি অনলাইনেই কার্যক্রম সম্পন্ন করছি। কোন হার্ড কপির বিষয় নেই। সূত্র জানায়, টেকসই ক্রয় পারদর্শিতার জন্য উদ্ভাবন এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় এ সম্মেলনে সার্কভুক্ত ৮টি দেশের পাবলিক প্রকিউরমেন্ট (সরকারী কেনাকাটা) সংক্রান্ত অফিসের প্রধানগণ, সরকারী প্রতিনিধিবৃন্দ, দরদাতা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং ইউরোপ-আমেরিকা ও এশিয়ার অন্যান্য দেশের আমন্ত্রিত অতিথি বক্তারা অংশগ্রহণ করবেন। সম্মেলনের অধিবেশনগুলোতে সরকারী ক্রয় কার্যক্রম সুষ্ঠু সম্পাদন, পেশাদারিত্ব, সংস্কার ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ক্রয়দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সে লক্ষ্যে নতুন নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবনের বিষয়ে উপস্থাপনা, আলোচনা ও অভিজ্ঞতা বিনিময় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বলে জানা গেছে। এর আগে প্রথম সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয় নেপালে ২০১১ সালে। দ্বিতীয়টি ২০১৪ সালে পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। বাংলাদেশে এবারই প্রথমবারের মতো এ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এবং সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এক প্রশ্নের জবাবে ফারুক হোসেন বলেন, ভবিষ্যত বাংলাদেশে ই-জিপি কার্যক্রমকে টেকসই করতে বিশ্বব্যাংক সহায়তা বাড়াবে। নতুন ডাটা সেন্টার কেনা হবে নাকি বিদ্যমান ন্যাশনাল ডাটা সেন্টার ব্যবহার করা হবে, সেটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। সূত্র জানায়, আরও শক্তিশালী হচ্ছে বাংলাদেশের সরকারী ক্রয় কার্যক্রম। সরকারী ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিজিপি) ক্রয় অনুমোদন কার্যক্রম ইলেক্ট্রনিক গবর্নমেন্ট (ই-জিপি) প্রকিউরমেন্ট প্রক্রিয়ায় যুক্ত হচ্ছে। ফলে দ্রুত ই-টেন্ডারিং কার্যক্রম পরিচালনা সম্ভব হবে। সম্প্রতি এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে চিঠি পাঠিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বর্তমান সরকার ২০২১ সাল নাগাদ ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের যে অঙ্গীকার করেছে এরই অংশ হিসেবে দেশের সকল সরকারী ক্রয় কার্যক্রম ২০২০ সালের মধ্যে ই-জিপি’র আওতায় নিয়ে আসার জন্য সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ) ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়েছে বলে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরীবিক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ) বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় সরকারি ক্রয় সংস্কার প্রকল্পের আওতায় দেশে ই-জিপি বাস্তবায়ন করছে। তবে ই-জিপিতে এখনও ৫০ কোটি টাকার উর্ধে পূর্তকাজ ও পণ্য ক্রয় এবং ১০ কোটি টাকার উর্ধে বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা ক্রয় চালু করেনি। সিসিজিপি ৫০ কোটি টাকার উর্ধে ক্রয় কার্যক্রমের সুপারিশকারী কর্তৃপক্ষ। সিসিজিপি’র সুপারিশের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী চূড়ান্ত অনুমোদন দেন।
×