ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

যৌতুকের জন্য নির্যাতন ॥ মৃত ভেবে হাসপাতাল গেটে রেখে পলায়ন

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২৪ অক্টোবর ২০১৫

যৌতুকের জন্য নির্যাতন ॥ মৃত  ভেবে হাসপাতাল গেটে  রেখে পলায়ন

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ২৩ অক্টোবর ॥ পাষ- স্বামী রিয়াজ হাওলাদারের বেধড়ক লাঠিপেটায় স্ত্রী কুলসুম বেগম অচেতন হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, মুখে কীটনাশক ঢেলে আত্মহত্যা নাটকের চেষ্টা করা হয়। মৃত ভেবে হাসপাতালের সামনে ফেলে পালিয়ে যায় স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে কুলসুমের স্বজনরা খবর পেয়ে কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসকরা কুলসুমের পাকস্থলী ওয়াশ করেছেন। বর্তমানে অর্ধচেতন অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। হতভাগী কুলসুমের শরীরজুড়ে ফুটে আছে মারধরের ক্ষতচিহ্ন। ঠোঁট, নাক ফেটে রক্ত ঝরছে। মুখম-ল ফুলে আছে। ঘুষির আঘাতে ডান চোখ লাল হয়ে গেছে। কামড়ে ক্ষত করে দেয়া হয়েছে পিঠ ও কাঁধ। শরীরে কালো কালো ছোপ ছোপ দাগ হয়ে আছে। মোটরসাইকেল কেনার টাকা যৌতুক না দেয়ায় এমন বর্বর নির্যাতন করে হত্যার চেষ্টা চালানো হয় এই গৃহবধূকে। নীলগঞ্জ ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের ঘটনা এটি। কুলসুমের এক স্বজন শিল্পী বেগম জানান, রাত ৮টার দিকে সাত মাসের সন্তান ঈসাকে ঘুম পাড়িয়ে তরকারি গরম করছিল কুলসুম। হঠাৎ ঈসার ঘুম থেকে জেগে কান্না শুরু করে। স্বামীকে ছেলের কান্না থামাতে বলে কুলসুম। ছেলের কাছে না যাওয়ায় স্বামী-স্ত্রী বাগবিত-া হয়। একপর্যায়ে রিয়াজ পাষ-ের মতো কুলসুমের ওপর হামলে পড়ে। চালায় নির্মম বর্বরতা। রান্না করার লাকড়ি নিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। ঘণ্টাকালেরও বেশি চলে নির্দয় নির্যাতন। বসার পিড়ি ও চৌকির সঙ্গে মাথায় আঘাত পেয়ে অচেতন হয়ে পড়ে কুলসুম। মৃত ভেবে মুখে কীটনাশক ঢেলে আত্মহত্যার নাটক সৃষ্টি করে। হঠাৎ এ দৃশ্য কুলসুমের এক দেবর দেখে ফেলে। স্থানীয়দের সহায়তা নিয়ে অচেতন কুলসুমকে উদ্ধার করে কলাপাড়া হাসপাতালে নিয়ে আসে। কিন্তু কুলসুমের নিথর অবস্থা দেখতে পেয়ে মৃত ভেবে হাসপাতালের গেটে রেখেই সটকে পড়ে।
×