ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী

ফিসফিস করা ভাল নয় সব সময়

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ২০ অক্টোবর ২০১৫

ফিসফিস করা ভাল নয় সব সময়

অনেকের ধারণা, ফিস্ফ্সি করে কথা বললে স্বরতন্ত্রী বেশ সুরক্ষিত থাকে। বিশেষ করে স্বরতন্ত্রীর প্রদাহ হলে ফিস্ফ্সি করে কথা বলা অনেকেরই অভ্যাস। ফিস্ফ্সি করার কারণ হলো, অনেকের ধারণা স্বরতন্ত্রী তাহলে পাবে রক্ষা।কিন্তু নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞ অনেকেই এর বিপক্ষে বলছেন। তাঁরা সতর্ক করে দিয়ে বলছেন, ফিসফিস করলে এবং স্বাভাবিক কথা বলার চেয়ে বেশি ক্ষতি হয় স্বরতন্ত্রীর। বেশ আহত হয় স্বরতন্ত্রী। যেসব গায়ক-গায়িকার স্বরের বিশ্রামের প্রয়োজন হয় তাদের পরামর্শ দেয়া হয়: “ফিসফিস করে কথা বলা পরিহার করুন। এতে আপনার স্বরতন্ত্রীর ক্ষতি হবে।” ড্রেকসেল ইউনিভার্সিটি কলেজ অব মেডিসিনের অটোল্যাবিংগোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. রবার্ট টি সাটালক বলেন যে, এই পরামর্শটি বছরের পর বছর প্রচলিত কথার ভিত্তিতে রচিত, গবেষণার ভিত্তিতে তেমন নয়। ২০০৬ সালে তাই এ নিয়ে বড় গবেষণা করলেন ডা. স্যাটালক খধৎুহমবধষ যুঢ়বৎ ভঁহপঃরড়হ ফঁৎরহম যিরংঢ়বৎরহম: ৎবধষরঃু ড়ৎ সুঃয? একদল সহকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে তিনি কাজে নামলেন। ১০০ লোককে নিঠেন গবেষইা করার জন্য। তাঁদের স্বরতন্ত্রী পরীক্ষা করে দেখলেন ফাইবার অপটিক স্কোপ দিয়ে। তাঁরা ১-১০ পর্যন্ত গুনলেন প্রথমে স্বাভাবিক স্বরে, এরপর ফিসফিস করে। সহগবেষক ডা. এডাম ডি. রুবিন বলেন, এঁদের মধ্যে ৬৯ জনের ক্ষেত্রে দেখা গেল ফিসফিস করলে বেশি চাপ পড়ে স্বরতন্ত্রীর ওপর। মিশিগানের লেক্শোর প্রফেশন্যাল ভয়েস সেন্টারের ডিরেক্টর ড. রুবিন বলেন, ফিসফিস করে স্বরধ্বনি করতে গিয়ে তাঁদের স্বরতন্ত্রীকে আরও শক্তভাবে একত্র করতে হলো, যা অনেক আহত করে স্বরতন্ত্রীকে। আঠারো লোকের ক্ষেত্রে তেমন পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেল না। তেরোজনের ক্ষেত্রে ফিসফিস স্বরে তেমন প্রভাব পড়ল না স্বরতন্ত্রীর ওপর। যাঁরা কণ্ঠস্বর নিয়ে বেশি চিন্তিত তাঁদের জন্য ডা. স্যাটলিকের পরামর্শ, তাঁরা ফিসফিসানি পরিহার করে বরং কোমলস্বরে কথা বলেন; যেমনÑএমন স্বরে যে কাছাকাছি কারো সঙ্গে বলছেন অথচ ঘরের অন্যরা শুনতে পারেন না। মৃদুস্বরে কথা বলাই শ্রেয় এসবক্ষেত্রে। তাই বেশিরভাগ লোকের ক্ষেত্রে ফিসফিস করা স্বাভাবিক মৃদু আলাপের চেয়ে ক্ষতিকর।
×