ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

কলেরা জীবাণু গবেষক দলের প্রতিবেদন

যশোরে পৌরসভার পানি ব্যবহারে ডায়রিয়া

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ২০ অক্টোবর ২০১৫

যশোরে পৌরসভার পানি ব্যবহারে ডায়রিয়া

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ পৌরসভার সরবরাহ করা কলেরার জীবাণুযুক্ত পানি পান ও ব্যবহারের কারণে যশোরে ডায়রিয়া পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে বলে স্বাস্থ্য বিভাগের গবেষক দল প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সোমবার সিভিল সার্জন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় গবেষক দলের নেতা রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) ডাক্তার সোহেল সামাদ এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। পৌরসভার কোন কোন এলাকায় কিভাবে কলেরার জীবাণুর আশঙ্কাজনক হারে সংক্রমণ হচ্ছে তার ভিডিও প্রতিবেদন প্রকাশ করা সত্ত্বেও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ নিজেদের দায় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। যশোরে ডায়রিয়া পরিস্থিতির চরম অবনতি শুরু হয়েছে চলতি বছরের জানুয়ারিতে। টানা চার মাস অর্থাৎ এপ্রিল পর্যন্ত বিপর্যস্ত পরিস্থিতিতে যশোর মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ রোগীদের চিকিৎসা করেছে। স্বাস্থ্য বিভাগ ওই সময় পরীক্ষা-নিরীক্ষায় নিশ্চিত হয় পানিবাহিত জীবাণুর কারণে ডায়রিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ জানানো হয়। লোক দেখানো পানি পরীক্ষা করিয়ে তারা সার্টিফিকেট দেয় পৌরসভার সরবরাহ করা পানির লাইনে কোন সমস্যা নেই। পানির মাধ্যমে ছড়ানো কোন জীবাণুর জন্যে ডায়রিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব হচ্ছে না। এরই মধ্যে চলতি মাস থেকে আবারও শুরু হয়েছে ডায়রিয়া। বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে পৌরবাসী। বিপুলসংখ্যক ডায়রিয়া রোগীর সেবা দিতে গিয়ে নাজেহাল অবস্থায় পড়েছে যশোর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবীরা। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের আহ্বানে সাড়া দিয়ে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ যশোরে গবেষক দল পাঠিয়েছে রোগের প্রাদুর্ভাবের মূল কারণ উদ্ঘাটনের জন্যে। ১৩ অক্টোবর রাত থেকে গবেষক দল কাজ শুরু করে। হাসপাতালে ভর্তি রোগী ও তার বসবাসের এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন বিশেষজ্ঞ দলের সদস্যরা। নমুনা সংগ্রহ, আক্রান্ত হওয়ার আগে রোগীর খাওয়ার বর্ণনা লিপিবদ্ধ ও পানি সরবরাহের লাইনের ভিডিও ধারণ করা হয়। ভিডিও চিত্রে উঠে এসেছে পৌরসভার পানি সরবরাহ ও মলমূত্র নিষ্কাশন ব্যবস্থায় চরম ত্রুটি মানুষের জীবন কিভাবে হুমকির মধ্যে ফেলেছে। পানি সরবরাহ ও মলমূত্র নিষ্কাশনের লাইন একাকার হয়ে যাওয়ায় কলেরার জীবাণুর সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে। এ সময় উপস্থিত পৌরসভার প্যানেল মেয়র জাহাঙ্গীর আহমেদ শাকিল নিজের দায় এড়ানোর চেষ্টা করেন। প্যানেল মেয়র দাবি করেছেন পৌরসভার কোন উদাসীনতা নেই। সবকিছু নিয়ম মেনে সঠিকভাবে চলছে। তাছাড়া পানি সরবরাহের লাইনের ত্রুটি সারানোর মতো ক্ষমতা তার নেই। মেয়র অনুপস্থিত থাকায় সকল কাজ স্থবির হয়ে আছে। ফলে তার পক্ষে কিছুই করা সম্ভব নয়। প্যানেল মেয়রের বক্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করেছে সভায় উপস্থিত স্বাস্থ্যবিভাগের কর্তারা।
×