ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মাহবুব শরীফ

জীবনে হেমন্তের আমেজ

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ১৯ অক্টোবর ২০১৫

জীবনে হেমন্তের আমেজ

ঋতু বৈচিত্র্যের এই দেশে আমরা বসবাস করি, তাই আমরা ধন্য। পৃথিবীতে এমন কোন দেশ নেই যেখানে ঋতুর এমন বৈচিত্র্য লক্ষ্য করা যায়। হেমন্ত ঋতুদের মধ্যে ৪র্থ স্থান দখল করে আছে। কখন যে এই ঋতুর আগমন আর কখন যে বিদায় নেয়, একটু খেয়াল না করলে বোঝা বড় মুশকিল। তবুও আমরা বুঝতে পারি, গরমের বিদায় ও শীতের আগমন সময়টাই হেমন্ত। শীত আসছে বলে আর বুঝি দেরি নেই। এখন এ সময়ে রাতের বেলায় হাল্কা শীত অনুভব হয়। ঘুমের জন্য এই আবহাওয়াটা বেশ উপযোগী। পোশাক-আশাক পরেও বেশ শান্তি। তবে এখন থেকেই শীতের জন্য প্রস্তুত হওয়া দরকার। কিভাবে শরীরের যতœ নেব। কেমন পোশাক পরব কেমন খাবার খাব। গরমকে আমরা গুডবাই জানাতে পেরে আনন্দিত আবার শীতের জন্যও ভয় হচ্ছে। সব মিলিয়ে এখন প্রস্তুতির সময় চলছে। বিভিন্ন মার্কেটে কয়েক দিনের মধ্যে শীতের পোশাক আসতে শুরু করবে। যাদের পর্যাপ্ত শীতের পোশাক সংগ্রহে নেই তারা প্রস্তুত থাকুন। যত দ্রুত সম্ভব আপনার পোশাকটা কিনে ফেলুন। কেননা, শীত এসে পড়লে দাম বেড়ে যেতে পারে। পোশাক কিনতে কিনতে নিজের শরীরের যতেœর কথা ভুলে গেলে হবে না। শীতে শরীরের একটু বেশি যতœ নিতে হয়। এ সময়ে আবহাওয়া অনেকটা বেশি শুষ্ক থাকে। বাতাসে জলীয়বাষ্প কম থাকে তাই শরীর থেকে পানি বাতাসে চলে আসে। শরীর চরচর করে হাত পা ফাটে, মুখ ফাটে, নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আগে থাকতেই সতর্ক থাকা ভাল। এ সময়ে মানুষের সর্দি-কাশিসহ এলার্জি, খুঁজলি-চুলকানির মতো বিভিন্ন রোগ হয়ে থাকে, এছাড়াও অন্যান্য রোগ জীবাণুও সময়ের অপেক্ষায় থাকে। এজন্য আপনার প্রয়োজন শরীরের দিকে একটু বেশিই খেয়াল করা। আরও একটি বিষয়- আপনি প্রস্তুত তো! খুশকি আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। বাতাসে পর্যাপ্ত ধুলা-বালি আপনার মাথার চুলে বাসা বাঁধার স্বপ্ন দেখছে। বাতাসের ধুলা-বালিকে ফাঁকি দিতে পারলে আপনি মোটামুটি খুশকি মুক্ত থাকবেন। আপনার প্রয়োজন বাইরে বের হলে অবশ্যই মাথায় কিছু ব্যবহার করা। যেমন- টুপি, হেড, মেয়েরা ওড়না, স্কার্ফ পরতে পারেন। আপনি আর একটি বিষয়ে সতর্ক তো? আপনারা কি নবজাতকের জনক বা জননী? তা হলে আপনার ছোট সোনামণিকে খুব সাবধানে রাখবেন। শরীরের তাপমাত্রা অনুযায়ী কাপড় পরাবেন। এমনভাবে ঢেকে রাখবেন না যাতে করে শিশুটি ঘেমে আবার ঠা-া লেগে যায়। ছোট্ট শিশু বলতে পারে না আপনাকেই বুঝে নিতে হবে ওর চাহিদা। শিশুদের ঠা-াজনিত রোগ এ সময়ে বেশ লক্ষ করা যায়। আপনি একটু শতর্ক হলে আপনার সোনামণি ভালভাবে বাঁচবে। এ সময়ে আপনি আপনার পছন্দমতো সানগ্লাস ব্যবহার করতে পারেন, কারণ সূর্যের অতি বেগুনী রশ্মি ও রোদের ঝাঁঝ আবার ধুলা-বালি বেশ। সানগ্লাস পরলে চোখ হয়ত একটু সুরক্ষায় থাকবে। কালো, বাদামি বা যে কোন হাল্কা কালারের সানগ্লাস ব্যবহার করতে পারেন, তবে কালো ও হলুদ রং এর সানগ্লাস সবচেয়ে ভাল, কারণ প্রখর রোদে চোখকে স্বাভাবিক রাখে এবং লক্ষ্যবস্তুর প্রকৃত অবস্থান দেখতে সহায়তা করে। হেমন্তের সময়ে আপনি স্বচ্ছন্দে নিদ্রা যাপন করতে পারবেন। আবহাওয়াটা অনেক আরাম আরাম লাগবে। অনেকে এ সময়ে ফ্যান ছেড়ে কাঁথা চেপে ঘুমায়। শেষ রাতে বেশ ভাললাগে। সকালে কুয়াশাও লক্ষ্য করা যায়। তবে শীতে আগাম পরিবেশ আমাদেরকে বার্তা দিচ্ছে শীতের রথ খুব কাছাকাছি। খাবারের মজা বেড়েছে গরমের সময়ে যে সব খাবার থেকে বিরত থাকা দরকার। সে সব খাবার এখন খেতে পারেন। এ সময়ে আপনি আর একটি কাজ করতে পারেন তা হচ্ছে- শীতের পুরনো পোশাকগুলো ধুয়ে রোদে ভালভাবে শুকিয়ে নিন এবং ভারি যেমন লেপ, কম্বল ও তোশক ইত্যাদিতে কভার ব্যবহার করতে পারেন। কভার ব্যবহার করাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এতে আপনার ব্যবহারের জিনিসগুলো ধুলা-বালিমুক্ত থাকবে। কভারটা আপনি খুলে অনায়াসে দুয়ে ফেলতে পারবেন। ভারি লেপ, তোশক আর ধৌত করতে হবে না। যাই হোক আপনি সুস্থ থাকলে মন সুস্থ থাকবে। মন সুস্থ থাকলে কাজে মন বসাতে পারবেন। আপনি সুস্থ থাকুন। সাবধানে চলাচল করুন, পরিবারের সকলের প্রতি যতœ নিন। তাদের সুরক্ষা করুন। মনে হয় আপনার দায়িত্ব আপনি পালন করলে সকলকে নিয়ে সুখে থাকবেন। মানসিক প্রশান্তি পাবেন। ছবি : মানস সেন মডেল : রানা ও রেইন পোশাক : ড্রিম গার্ল
×