ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

৩৪৮ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প ব্যয় বেড়ে ১,৭৮০ মিলিয়ন ডলার

চীনের অর্থায়নে ভবন নির্মাণ করছে ডিপিডিসি

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ১৮ অক্টোবর ২০১৫

চীনের অর্থায়নে ভবন নির্মাণ করছে ডিপিডিসি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বিদ্যুতে বিতরণ কোম্পানি ডিপিডিসি এখন বিদ্যুত বিতরণের পাশাপাশি বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করতে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে রাজধানীর মতিঝিলে তাদের ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্র এবং ১৩২/৩৩ কেভি উপকেন্দ্র নির্মাণের সঙ্গে ভবন নির্মাণের দুটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। অবশ্য বাণিজ্যিক লাভের উদ্দেশ্যে সেখানে একটি বহুতল ভবনের পরিবর্তে একাধিক ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। যাতে ভাড়ার টাকায় দায় শোধ করা যায়। এ ব্যাপারে অবশ্য ডিপিডিসির মধ্যেও মতবিরোধ রয়েছে। সংস্থার কেউ কেউ মনে করে, আগে প্রকল্প যেটা ছিল সেটা বাস্তবায়ন করাই ভাল ছিল এবং লাভবান হওয়া সম্ভব ছিল। কিন্তু এখন যেটা করা হবে এ ব্যাপারে আরও পর্যালোচনা করা দরকার। না হলে এই প্রকল্পে লোকসানের আশঙ্কা থাকতে পারে। কারণ ভাড়ার টাকায় যদি দায় শোধ করা না যায় তাহলে ডিপিডিসিকে ঋণের বোঝা বহন করতে হবে। সূত্র জানায়, ডিপিডিসির এই প্রকল্পের জন্য প্রথমে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৪৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এখন সেটা বাড়িয়ে করা হয়েছে ১,৭৮০ মিলিয়ন ডলার। এ ব্যাপারে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়েছে। এখন মেসার্স টিবিইএ কোম্পানির সঙ্গে ডিপিডিসি ১,৭৮০ মিলিয়ন ডলার মূল্যে বাণিজ্যিক চুক্তি করতে যাচ্ছে। আগামী সপ্তাহে এই চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে। প্রশ্ন উঠেছে এত বিপুল পরিমাণ খরচ বাড়ানোর জন্য এবং প্রকল্পের প্রসার ঘটানোর জন্য যে ধরনের বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নেয়া দরকার ছিল সেটা নেয়া হয়নি। আর এ কারণে আগামীতে ডিপিডিসিকে বড় ধরনের ঋণের বোঝা বহন করতে হতে পারে। জানা যায়, গত প্রায় এক বছর ধরে বিভিন্ন চীনা কোম্পানির সঙ্গে জিটুজি অর্থায়নের নামে ডিপিডিসি, পিজিসিবি এবং আরইবির বড় আকারের প্রকল্পের সমঝোতা স্মারক এবং বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে এ চুক্তি করা হচ্ছে। ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) ২০১৪-২০১৮ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য তাদের আওতাধীন এলাকায় ৩৩/১১ কেভি এবং ১৩২/৩৩ কেভি উপকেন্দ্র নির্মাণের জন্য দুটি প্রকল্পের জন্য প্রাথমিক প্রকল্প ধারণাপত্র (পিডিপিপি) প্রণয়ন করে। দুটি প্রকল্পের জন্য সর্বমোট ৩৪৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সম্ভাব্য ব্যয় নির্ধারণ করা হয়। বর্তমানে এই প্রকল্প দুইটিকে একত্র করা হয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্যই চীনা প্রতিষ্ঠান মেসার্স টিবিইএ কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে ডিপিডিসি ১,৭৮০ মিলিয়ন ডলার মূল্যে বাণিজ্যিক চুক্তি করতে যাচ্ছে। এক লাফে প্রকল্প ব্যয় ৫ গুণ বেড়ে গেলেও নিরপেক্ষ এবং আন্তর্জাতিক কোন পরামর্শক কোম্পানি দ্বারা এই প্রকল্পের কোন সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হয়নি। প্রকল্পের আওতায় চীনা ঠিকাদার প্রস্তাবিত ৩০ তলা বিশিষ্ট বহুতল ভবন নির্মাণ করা হবে। জিটুজি ভিত্তিতে ঋণ নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে ভাড়া দেয়ার লক্ষ্যেই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। ঢাকার মতো ঘনবসতিপূর্ণ শহরে ভূগর্ভস্থ বিদ্যুত উপকেন্দ্র নির্মাণের কাজও এ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। যা বাংলাদেশে প্রথম। তবে এই প্রকল্পে কোন প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহ্বান না করে একটি স্বার্থান্বেষী মহলের ইচ্ছা অনুযায়ী সরাসরি মেসার্স টিবিইএ কোম্পানি লিমিটেডকে কাজটি দেয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য, মেসার্স টিবিইএ কোম্পানি লিমিটেড একটি বেসরকারী চীনা প্রতিষ্ঠান। এ কোম্পানিতে কেবলমাত্র ৩.২৭ শতাংশ চীন সরকারের শেয়ার রয়েছে।
×