ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিলুপ্ত ১১১ ছিটে জমির মালিকানা নির্ধারণে কাজ শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১৭ অক্টোবর ২০১৫

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিলুপ্ত ১১১ ছিটে জমির মালিকানা নির্ধারণে কাজ শুরু

নিজস্ব সংবাদদাতা, লালমনিরহাট, ১৬ অক্টোবর ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পৈত্রিকসূত্রে ভোগদখলীয় জমির মালিকানা দিয়ে সদ্যবিলুপ্ত ১১১ ছিটমহলে জরিপের কাজ শুরু হয়েছে। এ কাজ চলবে আগামী ১৫ নবেম্বর পর্যন্ত। জেলা সদর, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলায় ৫৯ ভারতীয় ছিটমহল ছিল। মুজিব-ইন্দিরা চুক্তির আলোকে এ বছরের ৩১ জুলাই রাত ১২টার পর হতে স্থায়ীভাবে স্থলসীমান্ত চুক্তি ও ছিটমহল বিনিময় চুক্তি বাস্তবায়ন হয়। কুড়িগ্রামের সদ্যবিলুপ্ত ছিটমহলটি একটি নতুন ইউনিয়ন পরিষদ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে যাত্রা শুরু করেছে। লালমনিরহাটের অভ্যন্তরে থাকা সদ্যবিলুপ্ত ৫৯ ছিটমহলে জমির মালিকানা স্বত্ব দিতে জরিপকাজ শুরু হয়েছে। দখল শর্তে নিজ জমির দাগ নম্বরসহ মালিকানার কাগজপত্র পাচ্ছেন সেখানকার বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার হাতীবান্ধার গোতামারী বিলুপ্ত ছিটমহলে এই জমি জরিপের কাজ শুরু হয়েছে। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আজিজার রহমানের নেতৃত্বে সাত সদস্যের দল ভূমি জরিপের কাজ করছে। এ সময় তারা স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে দখলি জমিতে গিয়ে ফিতা দিয়ে মেপে জমির পরিমাণ নির্ধারণ ও দাগ নির্ধারণসহ প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র তৈরি করছেন। ভূমি জরিপের কাজে নিয়োজিত অন্য সদস্যরা হলেনÑ কানুনগো খাদিমুল ইসলাম, ভূমি সার্ভেয়ার জাহাঙ্গীর আলম, সেটেলমেন্ট সার্ভেয়ার মনীন্দ্রনাথ বর্মণ, উপজেলা সহকারী পরিসংখ্যান অফিসার সাদেকুল ইসলাম, সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার তোফাজ্জল হোসেন ও গোতামারী ইউনিয়নের তহশীলদার আনোয়ার হোসেন। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় নিয়ে জেলা প্রশাসকসহ উচ্চপর্যায়ে বেশ কয়েকটি বৈঠক হয়েছে। এসব বৈঠকের মধ্য দিয়ে চুক্তি বাস্তবায়ন হয়। পরে বেশকিছু কাগজ দুই দেশের কর্মকর্তা পর্যায়ে হস্তান্তর করা হয়। সেখানে জমির খারিজ, ম্যাপ রয়েছে। কুচবিহারের কাগজ ও বর্তমান দখলি মালিকানার মধ্যে সমন্বয় করে বাস্তবতায় জমির কাগজপত্র তৈরি হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা এতে সহযোগিতা করছেন। তবে কেউ আপত্তি করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে জরিপ পরিচালনা কমিটি তা নিষ্পত্তি করে দেবে। হাতীবান্ধা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আজিজুর রহমান জানান, প্রথম দিন ভূমি জরিপের কাজ সুষ্ঠুভাবে শেষ হয়েছে। এ কার্যক্রম আগামী ১৫ নবেম্বর পর্যন্ত চলবে। তিনি জানান, ৬৮ বছর ধরে ছিটের মানুষ জমি-জিরাত কোন কাগজপত্র ছাড়াই দখলি স্বত্বে ভোগদখল করে আসছিল। খুব আশ্চর্য লাগে, জমি নিয়ে কোন বিরোধ ছিটমহলে ছিল না। অথচ মূল ভূখ-ের মানুষের মামলা ও বিবাদের প্রধান কারণ জমি-জিরাত নিয়ে দ্বন্দ্ব। তাই জরিপের সময় সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে জরিপকাজে সহায়তা করছে স্থানীয় বাসিন্দারা। নীলফামারী ॥ সদ্যবিলুপ্ত নীলফামারীর চারটি ছিটমহলে ভূমি জরিপ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আগামী ১৫ নবেম্বর পর্যন্ত চলবে এ জরিপ কার্যক্রম। এজন্য বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীর হাতে তাদের জমির প্রাথমিক খানাপুরি তথ্য ফরম বিতরণ করা হচ্ছে, যার সরাসরি মনিটরিংকাজে দায়িত্ব পালন করছেন ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিল্টন চন্দ্র রায়। তাদের সহায়তা করছেন জেলা প্রশাসনের চার কানুনগোর নেতৃত্বে ২৮ জন সদস্য। সূত্রমতে নীলফামারী, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার অভ্যন্তরে থাকা সদ্যবিলুপ্ত ১১১টি ছিটমহলে মোট ১৮টি ভূমি জরিপ ওয়ার্কিং টিম গঠন করা হয়েছে। এরমধ্যে নীলফামারী জেলার জন্য চারটি টিম কাজ করছে। পুরনো নথিপত্র বিশ্লেষণ এবং দখলের ভিত্তিতেই ওয়ার্কিং কমিটিগুলো প্রাথমিকভাবে এ জরিপ কার্যক্রম সম্পন্ন করবে।
×