ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রানী এলিজাবেথের অতিথি ম্যারাডোনা!

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ১৪ অক্টোবর ২০১৫

রানী এলিজাবেথের অতিথি ম্যারাডোনা!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এখনও মাঠে মুখোমুখি হলে জাতীয়তাবোধ জেগে ওঠে। দু’দেশের সমর্থকরাও অন্য রকম উত্তেজনায় থাকে। আর সেটা অনেক তীব্র হয়েছে ১৯৮৬ বিশ্বকাপের পর। সেবার ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে রেফারির চোখকে ফাঁকি দিয়ে আর্জেন্টাইন সুপারস্টার দিয়েগো ম্যারাডোনা গোল করেছিলেন হাত দিয়ে। ফুটবলের ইতিহাসে সেটার নাম হয়ে গেছে ‘ঈশ্বরের হাত’। এটি আর্জেন্টাইনদের জন্য যেমন মহা আনন্দের, বিপরীত দিক থেকে ইংলিশদের জন্য খুবই মর্মন্তুদ। সে কারণে আর্জেন্টিনা ফুটবলের সঙ্গে একটা বড় ধরনের মানসিক দ্বন্দ্ব আছে ইংল্যান্ড ফুটবলের। আর ম্যারাডোনা সবসময়ই ইংলিশ ফুটবলের জন্য এক দুঃখের নাম। তবে সেই ম্যারাডোনাই এবার ব্রিটেনের রানী এলিজাবেথের হয়ে কাজ করবেন শিশু তরুণদের সহায়তার জন্য এক প্রতিষ্ঠানের হয়ে। ব্রিটিশ ওই প্রতিষ্ঠানের জন্য রানী এলিজাবেথের প্রতিনিধি করা হয়েছে ম্যারাডোনাকে। এবার হয়তো দু’দেশের ফুটবলে পুরনো শত্রুতায় কিছুটা শিথিলতা আসবে এ কাজের মাধ্যমে। শুরুটা রাজনৈতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপট থেকেই। ১৯৮২ সালে ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের দখল নিয়ে ইংল্যান্ড-আর্জেন্টিনা সামরিক যুদ্ধ থেকে সূত্রপাত শত্রুতার। সেটা খেলার মাঠেও থেকেছে। দু’দলের মোকাবেলায় এরপর থেকে জয়-পরাজয়টা অনেক বড় ব্যাপার। ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে সে কারণেই যে কোন উপায়ে জেতার জন্য মরিয়া ছিল উভয় দল। অন্তিম মুহূর্তে ম্যারাডোনার হাত লাগিয়ে করা গোলটা ইংল্যান্ড ফুটবল দলের জন্য আজীবনের দুঃখ হয়ে গেছে। ম্যারাডোনা তাই ইংলিশদের কাছে এক শত্রুর নাম। কিন্তু তিনিই এখন মিত্র হতে চলেছেন। ব্রিটেনের রানী এলিজাবেথের হয়ে শিশুদের সহায়তা প্রদানকারী ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবার ম্যারাডোনা। লাতিন আমেরিকা অঞ্চলে তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের পরিচালকের দায়িত্ব পেয়েছেন। এ বিষয়ে সোমবার প্রকাশিত এক ভিডিও চিত্রে সেটা নিশ্চিত করেছেন ম্যারাডোনা নিজেই। তিনি রানীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বলেছেন, ‘আমি রানীকে ও ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে স্বাগতম জানিয়ে বলতে চাই যে, আমি সহৃদয়ভাবে এ মনোনয়নকে গ্রহণ করছি এবং কাজ করার জন্য মুখিয়ে আছি। এই ৫৫ বছর বয়সে এটি আমার জন্য সবচেয়ে বড় উপহার। আমার মনে হচ্ছে লাতিন আমেরিকার শিশুদের জন্য কাজ করার এ সুযোগ দেয়াটা আমার প্রতি সত্যিকারের সুবিচার। এমনটাই আমি চেয়েছিলাম। আমি খুবই আনন্দিত যে, লাতিন আমেরিকার শিশুরা আমার সঙ্গে খুব ভালভাবে মিশতে পারবে এবং আমি অতিশয় কৃতজ্ঞ যে আমার প্রতি এ আস্থা রাখা হয়েছে।’ ম্যারাডোনার দাবি তিনি সৎভাবে থাকার কারণেই শিশুদের হয়ে কাজ করার এ সুযোগ পেয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি সৎ এবং দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষদের কোন স্থান নেই আমার কাছে। আমি শিশুদের জন্য সবচেয়ে ভাল যা সেটাই চাই। আমরা এর মাধ্যমে তাদের মুখে হাসি ফুটাতে চাই। আর সেটাই হবে আমাদের জন্য বড় পুরস্কার। আমি নিশ্চিত করতে পারি এখানে কোন দুর্নীতির ছোঁয়া থাকবে না।’
×