ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

৩১ বিধান সভার ২০টিতে বিজেপিকে ক্ষমতায় বসানোর পরিকল্পনা

আরএসএসের লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গ

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ১৪ অক্টোবর ২০১৫

আরএসএসের লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গ

ভারতের প্রভাবশালী এক হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল চায় মুসলিম ও খ্রিস্টান সংখ্যালঘুরা ভারত যে হিন্দুদেরই একটি দেশ তা মেনে নিক। দলটি তাদের কাউকে কাউকে ধর্মান্তরিত হতে চাপ দিয়ে যাচ্ছে। অস্থির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের এক নির্বাচনকেই দলটি এর ভবিষ্যত পরিকল্পনার অন্যতম লক্ষ্য হিসেবে বেছে নিয়েছে। দলটির কৌশল হলো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ক্ষমতাসীন পার্টিকে যথাসম্ভব বেশি সংখ্যক রাজ্যে ক্ষমতায় বসিয়ে প্রথমে হিন্দু মতবাদকে ভারতের প্রতিটি কোনে কোনে ছড়িয়ে দেয়া। ঐ দল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) গত বছরের সাধারণ নির্বাচনে মোদির নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জনের লক্ষ্যে সার্বক্ষণিক কর্মী সরবরাহ করেন। মোদি নিজেও তার কৈশোরে দলটিতে যোগ দিয়েছিলেন। কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) গতানুগতিক ঘাঁটিগুলোর বাইরে পশ্চিম বঙ্গের মতো রাজ্যগুলোতে বিজয় অর্জন মোদিকে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার ওপর আরও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা প্রদান করবে। এতে তিনি তার প্রধান প্রধান নীতি পাস করিয়ে নিতে আরও শক্তিশালী অবস্থানে থাকবেন। বিজেপির ভবিষ্যত পরিকল্পনা হলো আগামী চার বছরে ভারতের ৩১টি রাজ্য বিধানসভার মধ্যে ২০টি করায়ত্ত করা। পার্টির শীর্ষ সূত্রে একথা বলা হয়। বর্তমানে বিজেপি ১১টি রাজ্যের ক্ষমতাসীন বা ক্ষমতার অংশীদার। বিজেপি পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে সংখ্যালঘু। আরএসএস ও বিজেপির জন বিশেকেরও বেশি কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাতকার এবং আরএসএসের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে উপস্থিত থাকার দুর্লভ সুযোগ থেকে দু’ধাপের এক কৌশল সম্পর্কে জানা যায়। প্রথমটি হলো জাতীয় পর্যায়ে নির্বাচনী বিজয় এবং এটি পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের নির্বাচনে অর্জিত হয়েছে এবং পরেরটি হলো রাজ্য পর্যায়ে অনুরূপ বিজয়। আরএসএসের জয়েন্ট জেনারেল সেক্রেটারি দত্তত্রেয় হোসাবালে বলেন, আমরা চাই বিজেপি সব রাজ্যের নির্বাচনে জয়ী হোক, কারণ কেবল তাহলেই এ দেশে তাৎপর্যপূর্ণ সামাজিক, রাজনৈতিক ও কৃষ্টিগত পরিবর্তন ঘটতে পারবে। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনী বিজয়কে এক দীর্ঘমেয়াদি মিশনের সূচনা হিসেবে দেখা উচিত। পশ্চিমবঙ্গের আগামী বছরের নির্বাচনই হবে আরএসএস-বিজেপি জোটের সাফল্যের সত্যিকারের পরীক্ষা। এ রাজ্যে বিজেপি আগে থেকেই দুর্বল এবং এটি কয়েক দশক ধরে কমিউনিস্ট পার্টিগুলোর এক জোটের শাসনভার ছিল। পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক কৌশলে সমন্বয় সাধন করতে আরএসএস কর্মকর্তারা চলতি বছর বিজেপি প্রেসিডেন্ট অমিত শাহের সঙ্গে অন্তত পাঁচবার বৈঠকে মিলিত হন। নয়াদিল্লী ও কলকাতায় অনুষ্ঠিত এসব বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এমন এক পার্টি কর্মকর্তা একথা জানান। মোদির নির্বাচনী বিজয়ের পরিকল্পনাকারী হিসেবে অমিত শাহকেই অনেকে কৃতিত্ব দিয়ে থাকেন। ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনে বিজেপি ২৯০টি আসনের মধ্যে একটিও পায়নি। শাহ পশ্চিমবঙ্গকে চীন সীমান্তবর্তী ভারতীয় উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার অন্যতম উপায় বলে বর্ণনা করেন। পার্টির সিনিয়র কর্মকর্তা সিদ্ধার্থ নাথ সিংকে বিজেপি সভাপতির উদ্ধৃতি দিয়ে একথা বলেন। তিনি জানান, শাহ বিজেপির রাজ্য সংগঠনের সিনিয়র সদস্যদের বাছাই করার ক্ষেত্রে আরএসএস নেতাদের বক্তব্য রাখার ক্ষমতা দিতেও সম্মত হন। আরএসএস এপ্রিলে পশ্চিমবঙ্গের পৌর নির্বাচনের প্রচার অভিযানে গভীরভাবে জড়িত হয়। বিজেপি প্রথমবারের মতো স্থানীয় নির্বাচনে প্রতিটি আসনে প্রার্থী দাঁড় করায়। পার্টি এক দুর্বল ভিত্তি থেকে এ নির্বাচনে বিজিত আসন সংখ্যা চার গুণেরও বেশি ছাড়িয়ে ১৬ থেকে ৭৪ তে নিয়ে যায়। পৌর নির্বাচনে মোট আসন সংখ্যা ছিল ১৯৪৩। ইয়াহু নিউজ
×