ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

অতিরিক্ত পরীক্ষা অন্যতম কারণ ;###;ব্যয় বাড়ছে অভিভাবকদের

কোচিং বন্দী শিক্ষা

প্রকাশিত: ০৫:০৭, ১৪ অক্টোবর ২০১৫

কোচিং বন্দী শিক্ষা

বিভাষ বাড়ৈ ॥ রাজধানীর তেজগাঁওয়ের নাখালপাড়া ও তেজকুনীপাড়ার রাস্তা, অলি গলি দিয়ে হাঁটলেই চোখে পড়বে একটি কোচিং সেন্টারের আকর্ষণীয় সাইনবোর্ড। দেয়ালে দেয়ালে রংবেরঙের অক্ষরে লেখা আছে ‘কেবল পঞ্চম আর অষ্টম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষার্থীদের জন্য।’ কোচিং সেন্টার চালু করার সময় এর নাম নির্ধারণেও যথেষ্ট মেধার পরিচয় দিয়েছেন এর মালিক। নতুন এ দুটি সমাপনী পরীক্ষার কথা মাথায় রেখে কোচিং সেন্টারটির নামও রাখা হয়েছে ‘সমাপনী কোচিং সেন্টার’। তবে শিশুদের এই পাবলিক পরীক্ষাকে ঘিরে মাত্র একটি দুটি নয়, রীতিমতো কোচিং সেন্টার চালুর হিড়িক পড়েছে সারাদেশে। কেবল রাজধানীতেই এ ধরনের কোচিং সেন্টারের সংখ্যা সাড়ে পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার। অসংখ্য কোচিং সেন্টার তৈরি হয়েছে নামী দামী স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের বসত বাড়িতে। যেখানে না পড়লে স্কুলেও সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের রোষানলে পড়ে শিক্ষার্থীরা। স্কুল পরীক্ষায় নম্বর কমিয়ে দেবেন এই ভয়ে শিক্ষার্থীরা বাধ্য হচ্ছেন শিক্ষকদের বাসায় গলাকাটা টাকার বিনিময়ে কোচিং করতে। এ অভিযোগ আছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সকল বড় শহরের প্রধান প্রধান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বিরুদ্ধেই। আছে শিশুদের স্কুল ভর্তি, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়-মেডিক্যাল ভর্তি ও সৃজনশীল প্রশ্নের জ্ঞান দেয়াসহ নানা ধারার কোচিং। অন্যদিকে এই কোচিংকে ঘিরে উগ্র মৌলবাদী আদর্শে দীক্ষিত করার কাজও চালিয়ে যাচ্ছে একটি গোষ্ঠী। ফোকাস, রেটিনাসহ অন্তত ১০টি কোচিং সেন্টারকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল কলেজ কেন্দ্রিক মৌলবাদী তৎপরতা চালাচ্ছে জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবির। বিশেষজ্ঞদের মতে, মূলত নিত্যনতুন শিক্ষা ও পরীক্ষা পদ্ধতির চালু, মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভাব, শ্রেণীকক্ষে মানসম্পন্ন শিক্ষা না পাওয়া আর সরকারী অর্থের অপ্রতুলতার কারণে কোচিংনির্ভর হয়ে পড়ছে প্রাথমিক, মাধ্যমিকসহ পুরো শিক্ষা ব্যবস্থা। রাষ্ট্রের পরিবর্তে শিক্ষা ব্যয়ের চাপ বাড়ছে পরিবারের ওপর। বাড়ছে পারিবারিক ব্যয়, বাড়ছে কোচিং নির্ভরতা ॥ সরকারী নানা হিসাব ও দেশী-বিদেশী গবেষণা সংস্থার পরিসংখ্যান বলছে, দেশে এই মুহূর্তে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫৯ শতাংশ ও সরকারী সহায়তাপ্রাপ্ত (এমপিওভুক্ত) মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ব্যয়ের ৭১ শতাংশই নির্বাহ করে পারিবার। আর এই অর্থের সবচেয়ে বড় অংশই হলো প্রাইভেট কোচিংয়ের ব্যয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৩ শতাংশ এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর শিক্ষাই আটকে আছে প্রাইভেট কোচিংকে ঘিরে। এডুকেশন ওয়াচের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, শিক্ষায় পারিবারিক ব্যয় ও প্রাইভেট কোচিংয়ের ওপর নির্ভরতা শিক্ষাক্ষেত্রে সমতা বিধানের পথে সৃষ্টি করছে বড় ধরনের সঙ্কট তৈরি করছে। আবার সরকারী অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ও ভৌগোলিক অবস্থান সঠিকভাবে বিবেচনা না করায় বাধ্যতামূলক শিক্ষা নিশ্চিত করার পথেও তৈরি হচ্ছে প্রতিবন্ধকতা। মাধ্যমিক পর্যায় তো বটেই, প্রাথমিক পর্যায়েও ব্যাপকভাবে প্রাইভেট কোচিংয়ের ওপর নির্ভর হয়ে পড়ছে শিক্ষা। মাধ্যমিক পর্যায়ে সরকারী স্কুলের ক্ষেত্রে ৮৮ শতাংশ, বেসরকারী স্কুলের ক্ষেত্রে ৭৮ শতাংশ এবং মাদ্রাসার ক্ষেত্রে ৭০ শতাংশ অভিভাবক তাদের ছেলে মেয়েদের জন্য প্রাইভেট কোচিংয়ের ব্যবস্থা করে থাকেন। আর প্রাথমিক পর্যায়েও ৩০ থেকে ৪৩ শতাংশ অভিভাবক বিভিন্ন প্রকারের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়া সন্তানদের জন্য প্রাইভেট শিক্ষক নিয়োগ করে থাকেন। এই অবস্থা আবার সরকারী স্কুলের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৪৩ শতাংশ। এক কথায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৩ শতাংশ এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর এই মুহূর্তে প্রাইভেট শিক্ষক আছে। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রাইভেট কোচিংয়ের খরচই ছাত্রছাত্রী প্রতি বার্ষিক পারিবারিক ব্যয়ের সবচেয়ে বড় অংশ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রকারভেদে তা মোট বার্ষিক মাথাপিছু ব্যয়ের ১৬ থেকে ২৪ শতাংশ প্রাথমিক পর্যায়ে এবং ২১ থেকে ৪২ শতাংশ মাধ্যমিক পর্যায়ে। দরিদ্র পরিবারগুলোর পক্ষে প্রাইভেট শিক্ষক নিয়োগ করা সম্ভব হয় না। ফলে এসব পরিবারের ছেলেমেয়েরা ধনিক শ্রেণীর ছেলেমেয়েদের তুলনায় অনেক বেশি পিছিয়ে থাকতে বাধ্য হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শিক্ষায় পারিবারিক ব্যয় ও প্রাইভেট শিক্ষকের ওপর নির্ভরতা শিক্ষাক্ষেত্রে সমতা বিধানের পথে সমস্যা সৃষ্টি করছে। এদিকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার সরকারী ব্যয় অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় কম, যা মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য যথেষ্ট নয়। সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী প্রতি সরকারী বার্ষিক ব্যয় দুই হাজারও কম। নিবন্ধনকৃত বেসরকারী বিদ্যালয়ে এক হাজার টাকারও কম। মাধ্যমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী প্রতি সরকারী বার্ষিক ব্যয় দুই হাজার ৪৬১ টাকা এবং মাদ্রাসার ক্ষেত্রে তিন হাজার ৮১০ টাকা। শিক্ষা ব্যয় বণ্টনেও এক ধরনের সমস্যা স্পষ্ট। নিত্যনতুন শিক্ষা আর পরীক্ষা পদ্ধতিতেই শিক্ষা সঙ্কট ॥ তবে অন্যান্য অনেক কারণ থাকলেও মূলত নিত্যনতুন শিক্ষা ও পরীক্ষা পদ্ধতির চালু, মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভাব, শ্রেণী কক্ষে মানসম্পন্ন শিক্ষা না পাওয়ায় কোচিং নির্ভর হয়ে পড়ছে শিক্ষার্থীরা। আর এই সুযোগে নানা পন্থায় শিক্ষার নামে বেপরোয়া বাণিজ্য চলছে দেশজুড়ে। তেজগাঁওয়ের তেজকুনিপাড়ার একটি কোচিং সেন্টারের নাম ‘সিটাডেল কোচিং সেন্টার’। এই কোচিংয়ের শিশু শিক্ষার্থীদের মায়েরা অভিযোগ করলেন, এখানে কোচিং বাণিজ্য এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে অধিকাংশ সময় কর্তৃপক্ষ হাজার টাকার ফি নিয়ে মডেল টেস্ট নিয়ে নিজেরা খাতা পর্যন্ত মূল্যায়ন করেন না। নতুন নতুন ব্যাচ তৈরি করে মডেল টেস্টের নামে অর্থ আদায় করবেন এই আশায় উল্টো সেই খাতা মূল্যায়ন করতে তুলে দেয়া হয় মা বা তার পরিবারের কারও হাতে। অভিভাবক পড়ালেখা না জানলেও করার কিছু নেই। সন্তানের অবস্থা জানা হয় না অভিভাবকদের। সন্তান মডেল টেস্ট দিয়েছে এটাই সান্ত¡না। প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি পরীক্ষা নেই। তবে অন্যান্য শ্রেণীতে রাজধানীর নামী দামী স্কুলে ভর্তির কোচিং একটি বড় বিষয় হয়ে উঠেছে। আর ভাল মানের স্কুল কম হওয়ায় একটি বিশাল অংশজুড়ে আছে এই কোচিং। মূলত স্কুলের সাফল্যকে পুঁজি করে রাজধানীসহ শহর কেন্দ্রিক এই কোচিং বিস্তার লাভ করেছে। এদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অসংখ্য কোচিং সেন্টার তৈরি হয়েছে নামী দামী স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের বসত বাড়িতে। এ অভিযোগ আছে ঢাকাসহ দেশের সকল বড় শহরের প্রধান প্রধান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বিরুদ্ধেই। বিষয়টিকে মাথায় রেখে তিন বছর আগে শিক্ষকদের কেবল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধীনে কোচিংয়ের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল সরকারীভাবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় নিষিদ্ধ করা হয়েছিল শিক্ষকদের প্রাইভেট কোাচিং। কিন্তু কোন উদ্যোগেই ইতিবাচক ফল দেয়নি আজ পর্যন্ত। কোচিংনির্ভর শিক্ষা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করছেন গণসাক্ষরতা অভিযানের পরিচালক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী। তিনি আক্ষেপ করে বললেন, এটি আজ একটি ব্যাধি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আসলে ভাল মানের স্কুল কম হওয়ায় গুটি কয়েক স্কুলে ভর্তির জন্য এই অসুস্থ প্রতিযোগিতা। জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক শেখ ইকরামুল কবীর বলছিলেন, কোচিংনির্ভরতা এখন ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। স্কুলে সরকারীভাবে চালু করা কোচিংয়েও নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। এটা করতে শিক্ষার্থীকে বাধ্য করা হচ্ছে। আবার বাইরে যেভাবে দোকান খুলে হাজার হাজার কোটি টাকা বাণিজ্য করা হচ্ছে সেটাও বন্ধ করা জরুরী। শিক্ষার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত আছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন। ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সাবেক এ চেয়ারম্যান বলছিলেন, আমি বহুদিন ধরে শিক্ষার সঙ্গে আছি, আমার সন্তানদেরও দেখছি। আমার মনে হচ্ছে, শ্রেণী কক্ষে ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাত ঠিক করতে না পারলে সমস্যার সমাধান হবে না। একেকটি ক্লাসে ৭০ থেকে ৮০ জন শিক্ষার্থীকে একজন শিক্ষক পড়ালে আসলে হয় না। আমি উন্নত দেশগুলোতে দেখেছি সেখানে এটা করা হয় না। স্বল্প সংখ্যক শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক নিশ্চিত করা খুব জরুরী। শ্রেণী কক্ষে মানসম্মত পাঠ গ্রহণ করতে পারলে শিক্ষার্থীরা বাইরে কোচিংয়ে যাবে না। মূল কথা হচ্ছে বিদ্যালয়ে সেই শিক্ষাটা হতে হবে যেটা হলে শিক্ষার্থীদের বাইরে হাজার হাজার টাকা খবচ করে কোচিং করারই প্রয়োজন হবে না। এটা না হলে আসলে আইন দিয়ে জোর করে সমস্যার সমাধান হবে না। এদিকে কোচিংকে ঘিরে উগ্র মৌলবাদী আদর্শে দীক্ষিত করার কাজও চালিয়ে যাচ্ছে একটি গোষ্ঠী। ফোকাস, রেটিনাসহ অন্তত ১০টি কোচিং সেন্টারকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল কলেজ কেন্দ্রিক মৌলবাদী তৎপরতা চালাচ্ছে জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবির। নিজস্ব কোচিং সেন্টার হওয়ায় এসব কোচিংয়ে ভর্তির সময় যে প্রসপেক্টাস, বই দেয়া হয় তাতেও থাকে শিবিরের পতাকাতলে আসার আহ্বান। বইয়ের প্রথম কিংবা শেষে লেখা হচ্ছে, ‘এটি কেবল একটি সংগঠন নয়, ছাত্রশিবির হলো সত্যিকারের মানুষ তৈরির সবেচেয়ে বড়ো স্কুল।’ কোচিং বাণিজ্যে ৩২ হাজার কোটি টাকা লেনদেন ॥ প্রতিবছর দেশজুড়ে কমপক্ষে ৩২ হাজার কোটি টাকার কোচিং বাণিজ্য চলছে বলে মনে করেন খোদ শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। শিক্ষামন্ত্রী এবং শিক্ষা নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের হিসাবও প্রায় একই রকম। শিক্ষার জন্য বছরে এ পরিমাণ ‘অতিরিক্ত অর্থ’ ব্যয় করতে হচ্ছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ বহুগুণে বাড়িয়ে তুলেছে কোচিং সেন্টারগুলো। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতেও কোচিং সেন্টার গড়ে উঠেছে। বহু ক্ষেত্রেই মানহীন শিক্ষকরা সেখানে পাঠদান করছেন। রাজধানীকেন্দ্রিক গড়ে ওঠা বৃহৎ কোচিং সেন্টারগুলো ঢাকার বাইরে একের পর এক শাখা খুলছে। কোচিংবাণিজ্য কার্যত নিষিদ্ধ হলেও এসব প্রতিষ্ঠান জয়েন্ট স্টক কোম্পানি থেকে ব্যবসার জন্য নিবন্ধন গ্রহণ করে কোচিং ব্যবসা চালাচ্ছে। খ্যাতনামা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বনামধন্য শিক্ষকরাও নিজেদের তত্ত্বাবধানে বাসাবাড়িতে সাইনবোর্ডবিহীন কোচিং ব্যবসা জাঁকিয়ে বসেছেন। ব্যাচে ব্যাচে শিক্ষার্থীরা সেখানে পড়ছে। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস, ভুয়া পরীক্ষার্থী সরবরাহ ও মোটা টাকার বিনিময়ে পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনে সহযোগিতা করারও জোরালো অভিযোগ উঠেছে কিছু কিছু কোচিং সেন্টারের বিরুদ্ধে। শিক্ষা নিয়ে কাজ করা বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মতে, দেশের প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যন্ত প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় চার কোটি ২৪ লাখ ছাত্রছাত্রী কোন না কোনভাবে মূল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরে অর্থের বিনিময়ে কোচিং নিচ্ছে। এ হিসাবে প্রায় ৭৭ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ শিক্ষার্থীই কোচিংয়ের ওপর নির্ভরশীল। দেশজুড়ে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় দুই লাখ কোচিং সেন্টার রয়েছে। এগুলোতে বছরে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হচ্ছে।
×