ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জাফর ওয়াজেদ

দেশনিন্দা মাতৃনিন্দার মতো পাপ

প্রকাশিত: ০৫:১০, ১২ অক্টোবর ২০১৫

দেশনিন্দা মাতৃনিন্দার মতো পাপ

দেশে দেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের ব্যাপক প্রসার ঘটে চলেছে, নিত্যদিনের ঘটনা তারই উদাহরণ বলা যায়। মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, আফ্রিকাসহ এশিয়ায় এই গোষ্ঠী নানা নামে নানাভাবে তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। বাংলাদেশ, ভারতসহ প্রতিবেশী দেশগুলো সন্ত্রাসী ও জঙ্গীদের তৎপরতা বিভিন্ন সময়ে মোকাবেলা করে আসছে। সার্কভুক্ত পাকিস্তান ও আফগানিস্তান এদের সূতিকাগার এবং সেখানে জঙ্গী ঘাঁটিও রয়েছে। মুজাহেদিন, তালেবান, আল কায়েদাসহ আরও কত নামের গোত্র, সম্প্রদায়, ধর্মভিত্তিক জঙ্গী গোষ্ঠী রয়েছে, তার পুরো হদিস সহজে মেলে না। এদের প্রতিষ্ঠাতা, পৃষ্ঠপোষক এবং প্রশিক্ষণদাতা খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার সহযোগী ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এই জঙ্গীরা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতেও ঘাঁটি গাড়তে তৎপর। এদের তৎপরতা পুরোপুরি দমানো সহজসাধ্য না হলেও, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অনেকক্ষেত্রেই উচ্ছেদ করা গেছে। মাঝে মাঝেই এশিয়ার এই অঞ্চলে সহিংসতা চালিয়ে জানান দেয় নিজেদের অস্তিত্ব। অস্ত্রশস্ত্র, প্রশিক্ষণ, অপারেশনসহ এদের পেছনে ব্যয়ও প্রচুর। এই জন্য অর্থের অঢেল জোগানও রয়েছে। এই অর্থলোভই বিভিন্ন দেশের তরুণদের জঙ্গীবাদের পথে টেনে নিয়েছে, নিচ্ছে। নারীরাও বাদ যাচ্ছে না। কারা এদের অর্থের জোগানদাতা, কারা পৃষ্ঠপোষক, কাদের স্বার্থ পূরণে নৃশংসতা চালায়- সেসব বিষয়ে তথ্যাদি তেমন মিলছে বলা যাবে না। জঙ্গীদের অর্থ ও অস্ত্রের প্রধান উৎস মাদক পাচার, ব্যাংক লুট, অপহরণের মাধ্যমে পণ আদায়, চাঁদাবাজিসহ আরও নানাবিধ পথ ও পন্থা। জঙ্গীবাদে যারা অর্থায়ন করে তারা সন্ত্রাসবাদকে বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে ধর্মীয় উন্মাদনাকে ব্যবহার করছে। আইএস, আল কায়েদা, বোকো হারাম, আল শাবাত, তালেবানসহ বিভিন্ন দেশে সংগঠিত জঙ্গীরা তাদের তহবিল সংগ্রহ করছে মূলত সারাবিশ্ব থেকেই। অর্থের জোরে ছড়িয়েও দিচ্ছে বিশ্বব্যাপী নারকীয়তার পথে জঙ্গীদের। সামরিক প্রশিক্ষণ পাচ্ছে নিয়মিত জঙ্গীরা। অত্যাধুনিক অস্ত্র চালনায় পারদর্শী যেমন, তেমনি তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়েও দক্ষতা তাদের অত্যধিক। ইন্টারনেট তাদের প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম। জঙ্গী দমনে সব দেশই সোচ্চার। পাকিস্তানও জঙ্গী দমনে হাঁক ডাক দিলেও মূলত জঙ্গী উৎপাদনের প্রধান কারখানাটিই এই পাকিস্তান। আর তারাই তা রফতানি করে থাকে এশিয়ার দেশগুলোতে। জঙ্গী দমনে বিভিন্ন দেশ কঠোর অবস্থা নেয়ার কথা বললেও জঙ্গী অর্থায়নের উৎস খুঁজে পাচ্ছে, তা বলা যাবে না। এই উৎস নির্মূল করা না গেলে জঙ্গী তৎপরতা কোনভাবেই দমন করা যাবে না। জঙ্গী সংগঠনগুলো কোন নির্দিষ্ট দেশে আর তাদের তহবিল রাখছে না। তারা বিভিন্ন দেশের নোট জাল করে তা বাজারজাতও করছে। অর্থপাচারের ক্ষেত্রে ব্যাংক ব্যবহারও করছে হুন্ডির পাশাপাশি। এক দেশ থেকে অন্য দেশে অর্থপাচার করলেও এই অর্থ অনুসন্ধান দুরূহ হয়ে পড়েছে। জঙ্গীদেরও রয়েছে নিয়ন্ত্রিত ব্যাংক, যার মাধ্যমে তারা অর্থায়ন করে আসছে। ব্যাংকের মাধ্যমে জঙ্গীদের জন্য অর্থ জমা করার অভিযোগে তিনজন আটকও হয়েছে বাংলাদেশে। এই ঘটনা তথা রহস্য উদঘাটন থমকে আছে। দ্রুত তদন্ত করার কাজটিও হচ্ছে না। বাংলাদেশে জঙ্গী সন্ত্রাসী সংগঠন জামায়াতে ইসলামী যেভাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে, তাদের এসবের উৎস শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেয়া গেলে এদেশে জঙ্গীবাদের উৎস নির্মূল করা যায়। জঙ্গীদের অর্থের অবাধ প্রবাহ চিহ্নিত করে এর উৎস বন্ধ করা গেলে জঙ্গীবাদ প্রসারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়া সম্ভব। কিন্তু এসব করবে কে? কিংবা করার যোগ্য মানুষই বা কই! বিশ্বে সন্ত্রাসী কর্মকা- বেড়ে যাওয়ায় ফল হিসেবে পশ্চিম এশিয়ায় অস্থিতিশীলতার প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ বাংলাদেশেরও রয়েছে। সিরিয়া, ইরাক, লিবিয়াসহ বিশ্বে সন্ত্রাসবাদ সম্প্রসারণের বাস্তবতায় বাংলাদেশবাসীও উদ্বিগ্ন। এসব দেশে প্রচুর বাঙালী কর্মরত, যাদের অনেকের আয়ে দেশে পরিবারগুলো সচ্ছল জীবনযাপন করছে। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা শক্তিশালী হচ্ছে। সন্ত্রাস ও যুদ্ধের কারণে সেসব শ্রমজীবীরা কর্মহীন হয়ে পড়ার আশঙ্কা কম নয়। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক ইসলামপন্থী জঙ্গী সংগঠন আইএস ২০২০ সালের মধ্যে ভারতীয় উপমহাদেশসহ বিশ্বের বিশাল অংশ দখলে নেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে। পরিকল্পিত নিয়ন্ত্রণ ভূমির একটি মানচিত্রও প্রকাশ করেছে জঙ্গী সংগঠনটি। বিবিসি’র সাংবাদিক এন্ড্রু হোসকেনের ‘এম্পায়ার অব ফেয়ার : ইনসাইন দ্য ইসলামিক স্টেট’ শীর্ষক সম্প্রতি প্রকাশিত গ্রন্থটিতে এ মানচিত্রটি প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে আইএস ভারতীয় উপমহাদেশের অধিকাংশ এলাকা দখলে নেয়াসহ মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর অফ্রিকা ও ইউরোপের কিছু স্থানে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করেছে। আইএসের শরিয়া আইনের এ নতুন রাষ্ট্র বা খিলাফত প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনার আওতায় রয়েছে পশ্চিম স্পেন থেকে পূর্বে চীন পর্যন্ত বিস্তীর্ণ অঞ্চল। তারা ওই স্থানগুলোর নতুন নামও ইতোমধ্যে ঠিক করে ফেলেছে। (বাংলাদেশের এক নেত্রীও গোপালগঞ্জের নাম বদলে ফেলার ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন।) ভারতীয় উপমহাদেশের নামকরণ করা হয়েছে খুরাসান, স্পেন, পর্তুগাল ও ফ্রান্সের নাম আরবী ভাষায় একসঙ্গে দেয়া হয়েছে, আন্দালুস। গ্রন্থে বলা হয়েছে, আইএস গোটা বিশ্বকেই তাদের শাসনাধীনে আনতে চায়। প্রথমে তারা ইসলামী বিশ্বকে নিয়ন্ত্রণে আনতে চাইছে। একবার তারা এখানে খিলাফত প্রতিষ্ঠা করতে পারলে বাকি বিশ্বকে কব্জা করার পথে এগোবে। আইএস সাত দফা পরিকল্পনার মাধ্যমে সে পথে এগিয়ে যেতে চায়। এই যখন অবস্থা তখন শেখ হাসিনা জাতিসংঘে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি যথার্থই আহ্বান জানিয়েছেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে একসঙ্গে কাজ করার জন্য। আর সেই সময়ে শক্তিধর দেশগুলো বাংলাদেশে আইএস আছে এবং তাদের দেশের লোক নিরাপদ নয় বলে ঘোষণা দিয়ে বসে, যার মাজেজা বোঝা কঠিন নয়। এর সঙ্গে বাংলাদেশের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর একটি যোগসূত্র রয়েছে যে, তা সরকারী নেতারাই বলছেন, একটি জোরালো ও গ্রহণযোগ্য আন্তর্জাতিক বৈধ ব্যবস্থার পাশাপাশি ব্যাপক ও সমন্বিত আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমেই কেবল সন্ত্রাসবাদের লাগাম টেনে ধরা যেতে পারে- শেখ হাসিনা সে কাজটাই বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে বোঝাতে চেয়েছেন। সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের পাশাপাশি ধর্মীয় মৌলবাদ ও চরমপন্থা তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যাত করেছেন শেখ হাসিনা অনেক আগেই। তবে এটা পরিষ্কার করেছেন যে, এই অঞ্চলে নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা আরও জোরদার করতে চায় বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট থেকে দীর্ঘদিন সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের নাশকতার শিকার হয়েছে। ২০০১ সাল থেকে দেশ খালেদার নেতৃত্বে হাওয়া ভবনের পৃষ্ঠপোষকতায় জঙ্গীদের দ্বারা পরিচালিত হওয়ার ফলে প্রশাসনে জঙ্গী ও সন্ত্রাসীদের লোকজনের অনুপ্রবেশ ঘটা অস্বাভাবিক নয়। খালেদা-জামায়াত জোট গত ৮ বছর ধরে ক্ষমতাহারা, তাদের দলের যুদ্ধাপরাধীরা দ-িত। সুতরাং তার সেই যে সন্ত্রাসবাদের পথে পরিচালিত হচ্ছে, এটা তো তারা জীবন্ত মানুষ মেরে প্রমাণ করেছে। যুদ্ধাপরাধীদের মুক্ত করার আপাত লক্ষ্য সামনে নিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার কাজে যে জামায়াত-বিএনপি লিপ্ত, সে কথা সরকারী মন্ত্রীরাও বলেছেন। লন্ডনে বসে বেগম জিয়া ও তার পুত্র বাংলাদেশ বিরোধী তৎপরতায় নিমগ্ন, এটা তাদের কার্যকলাপই স্পষ্ট করে। বিদেশে বসে বাংলাদেশবিরোধী বক্তব্য প্রদান ও নাশকতা চালানোর নির্দেশ প্রদান, তাদের পক্ষে অসম্ভব কিছু নয়। যারা ২১ আগস্ট জঙ্গী তৎপরতা চালাতে দিয়েছে দেশে ক্ষমতায় বসে, তারা আজ ক্ষমতার বাইরে থেকে ক্ষমতা দখল করতে আরও জঙ্গী ও নাশকতা তৎপরতা চালাবেই। তাদের দীর্ঘদিনের লক্ষ্য শেখ হাসিনার জীবনাবসান। তাই বেগম জিয়া অনায়াসে বলতে পেরেছেন, তারা ভ্যানিটি ব্যাগে ভরে গ্রেনেড নিয়ে এসেছিল। জঙ্গী ও সন্ত্রাসী নেত্রীর ভাষ্য হিসেবে এটি মানানসই হলেও প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন হয়ে এমন নিষ্ঠুর বাক্য উচ্চারণ বেগম জিয়াকেই মানায়। তাই পেট্রোল বোমায় মানুষ মেরেও তিনি অনায়াসে বলতে পারেন, পুলিশই বোমা মেরেছে। বাংলাদেশে জঙ্গী তৎপরতা অতীতে পরিচালনার ক্ষেত্রে বেগম জিয়া আশানুযায়ী সফল হতে না পারলেও জঙ্গী ও উগ্রপন্থীদের নেত্রী হিসেবে নিজের আসন বহাল রেখেছেন। দেশের সংবাদপত্র পাঠে মনে হবে, দেশ অতি কঠিন সমস্যার সম্মুখীন। ঘরের শত্রু, বাইরের শত্রুর আক্রমণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিপর্যস্ত। অবস্থার গুরুত্বটা সরকারী দলের নেতারা সম্যক উপলব্ধি করেছেন কিনা ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। অপরদিকে সরকারবিরোধীরা এখনও পূর্ববৎ সব ব্যাপারে সরকারের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দিয়ে দায় কর্তব্য সম্পাদন শুধু নয়, সরকার উৎখাতে জঙ্গীদের ব্যবহার করছে। চিন্তাশক্তি রহিত হলে কোন জিনিসই সহজে হৃদয়ঙ্গম হয় না। কৃতকর্মের প্রতিক্রিয়া যে কত দূরগামী হতে পারে, তা বোঝার মতো দূরদৃষ্টি এদের নেই। বাংলাদেশের মানুষকে এ কথা বুঝতে হবে যে, ২৪ বছর পাকিস্তানীরা শত্রুতা করে দেশে যে বিষ ছাড়িয়ে গিয়েছিল একাত্তরের যুদ্ধে, সেই বিষ উপড়ে ফেলা যায়নি পুরোপুরি। তাই পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে জেনে শুনে বুঝে সে বিষকেই উজ্জীবিত করেছে এবং দেশকে সন্ত্রাস, হানাহানি আর পাকিস্তানী চেতনায় প্রবাহিত করেছে। বিদেশী শত্রুতাকে ক্ষমা করা গেলেও স্বদেশীয় শত্রুতাকে কেউ ক্ষমা করেনি, করবেও না। তাই একাত্তরের স্বদেশী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চল্লিশ বছর পর হলেও চলছে। জনগণ তাদের ক্ষমা করেনি। এদের দল জামায়াতে ইসলামীর সম্বল অতি সামান্য। ধর্মকে বর্ম বানিয়ে সন্ত্রাস করা যায়, কিন্তু জনগণের গণতন্ত্রের রাজনীতি যে করা যায় না, জামায়াত সেটা বোঝে। আর বোঝে বলেই এরা সন্ত্রাস ও জঙ্গীপনাকে প্রাধান্য দিয়ে জোটের রাজনীতি করছে পাকিস্তানপন্থী দল বিএনপির সঙ্গে। বাঙালীর মন অগ্রগামী মন, পশ্চাদগামী নয়। সে কালের সঙ্গে, দুনিয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে, যোগ্য নেতৃত্ব পেলে। বিএনপি-জামায়াত জোট নানা ধুয়া তুলে দেশকে মান্ধাতার আমলে ফিরিয়ে নিতে এখনও উদ্যত। এ অপচেষ্টাকে প্রাণপণে বাধা দিতে জনগণ অতীতেও ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়েছে। বিএনপি-জামায়াত জোটের রাজনৈতিক সত্তাটুকু বিলুপ্ত হয়ে যাবার পর তারা সন্ত্রাসবাদে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। জামায়াত আর জঙ্গী সংগঠনগুলো মূলত মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। এদের যে নীতি-আদর্শ তাতে রাজনৈতিক বোধবুদ্ধির অভাব রয়েছে। ফলে তারা গুপ্ত হত্যা, নাশকতার পথ বেছে নিয়েছে। সে অবস্থান থেকে এখনও সরে আসেনি। সন্ত্রাসীদের যারা নেতা সেই বিএনপি-জামায়াত শুধু ধর্মান্ধতার গীত গায় তা নয়, তারা ধুরন্ধরও বটে। জেনে শুনে ভেবে চিন্তেই তারা এ পন্থা অবলম্বন করেছে। দেশের বেশিরভাগ লোকই সহজ সরল। তারা কূটচাল বোঝে না। তদুপরি, অশিক্ষিতজনও রয়েছে। ধর্ম উন্মাদনার সৃষ্টি করে অতি সহজেই এদের মানসিকতায় আধিপত্য বিস্তার করা যায়। দেশবাসীকে বিপথগামী করাই তাদের লক্ষ্য। কিন্তু সমাজে যারা শিক্ষিত তাদের অনেকেই এই ধুরন্ধরদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেরাও হয়ে উঠেছে এক ধরনের ‘হিপোক্রেট’। বাহুবলে কোন মহৎ কর্ম সাধিত হয় না। আর তা হয় না বলেই যে বলপ্রয়োগ থেকে সরে আসছেন তারা তা নয়। বরং বলবৃদ্ধির জন্য সন্ত্রাসবাদ জঙ্গীবাদকে বক্ষপুট করে রাজনীতির অঙ্গনকে সন্ত্রাসীদের আখড়াতে পরিণত করতে মরিয়া। মানুষকে ধন্দে ফেলে স্বার্থ হাসিল করায় এর বেশ পরিপুষ্ট হয়ে উঠেছে। তারা বিশ্বাস করে না ত্যাগ এবং দুঃখবরণের মূল্য দিয়ে দেশের উপরে অধিকার অর্জন করতে হয়। তাদের বিশ্বাস, অস্ত্র এবং পেশী শক্তি দিয়ে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। তারা করেছেও ’৭৫ পরবর্তী সময়কাল থেকে। বাংলাদেশ বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো দেশ আজ। হাজার বছরের শোষণ, বঞ্চনা পরাধীনতা শেষে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যুদ্ধ করে বহু মানুষের আত্মাহুতির বিনিময়ে পাওয়া দেশ। তাকে ধ্বংস করা সহজসাধ্য নয়। কারণ তার রণধ্বনি ছিল, জয় বাংলা। সুতরাং বাংলার জয় হবেই। [email protected]
×