ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কলাপাড়া সাবমেরিন কেবল স্টেশন

হস্তান্তরের আগেই সীমানা প্রাচীর মাটিতে

প্রকাশিত: ০৬:১৪, ৯ অক্টোবর ২০১৫

হস্তান্তরের আগেই সীমানা প্রাচীর মাটিতে

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ৮ অক্টোবর ॥ কলাপাড়ার আমখোলাপাড়ায় নির্মাণাধীন দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল ল্যান্ডিং স্টেশনের প্রায় তিন শ’ ফুট সীমানা প্রাচীর ধ্বসে পড়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে সীমানা দেয়ালের পশ্চিম পাশের অংশ ধসে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। হস্তান্তরের আগেই বাউন্ডারি দেয়াল ধসের ঘটনায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক কাজের গুণগত মান নিয়ে নানা গুজব শুরু হয়েছে। জানা গেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কে. কে. এন্টারপ্রাইজ প্রথম পর্যায়ে ১০ একর জমিতে বালু ভরাট ও ১৭২০ ফুট দীর্ঘ এবং ১১২০ ফুট প্রস্থ সীমানা প্রাচীরের কাজ সম্পন্ন করে। দ্বিতীয় পর্যায়ে মূল ভবন, প্রধান ফটক ও শোভাবর্ধনের কাজ করে আসছে। যা এ বছরের নবেম্বরে সাবমেরিন কোম্পানির কাছে হস্তান্তরের কথা রয়েছে। এরই মধ্যে পশ্চিম পাশের অন্তত তিন শ’ ফুট সীমানা প্রাচীর ধসে পড়ে। কাজের গুণগত মান বজায় রাখতে ইতোপূর্বে নিয়োজিত কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠান সিভিল ওয়াস ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে একাধিকবার লিখিত ও মৌখিক নির্দেশনা দেয়। কিন্তু সাবমেরিন কোম্পানির প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা কর্তাব্যক্তিদের উদাসীনতায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পের মূল ভবনসহ অন্যান্য কাজে নি¤œমানের ইট, বালু, পাথর, সিমেন্ট, রড ব্যবহার করেছে বলে একাধিক নির্মাণ শ্রমিকের দাবি। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কে. কে. এন্টারপ্রাইজ কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি প্রকল্প এলাকায় বালু ভরাটের সময় পাশের ফসলি জমিতে লবণ পানি যাতে প্রবেশ না করে এ জন্য পানি নিষ্কাশন বন্ধ রাখা হয়েছিল। বর্ষা মৌসুমে জমে থাকা পানির প্রবল চাপে দেয়াল ধসের ঘটনা ঘটেছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইমরান জানান, প্রকল্প এলাকায় চারদিকে প্রস্তাবিত ১০ ফুট সড়ক নির্মাণসহ ড্রেনেজ ব্যবস্থা চালু হলে এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব হবে। প্রকল্প সংলগ্ন বাসিন্দা আঃ লতিফ মোল্লা আক্ষেপ করে জানান, এত বড় প্রতিষ্ঠানের কাজে অনিয়ম না হলে ভেঙ্গে পড়ল কেন। তার ভাষ্য, ‘খারাপ ইটসহ বাজে মাল দিয়া কাম করছে মনে হয়।’ প্রকল্পের কাজের গুণগতমান নিয়ে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কে. কে এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মোঃ কবির হোসেন বলেন, ‘পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় পানির প্রবল চাপে সীমানা প্রাচীর উপড়ে পড়েছে।’ সাবমেরিন কেবল ল্যান্ডিং স্টেশনের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) পারভেজ মনন আশরাফ প্রকল্পে নতুন যোগদান করেছেন দাবি করে জানান, সীমানা দেয়াল ধসের দুর্ঘটনার কথা শুনেছেন। একটি তদারকি টিম সরেজমিন পরিদর্শন পাঠানো হয়েছে বলেও তিনি জানান। সাবমেরিন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মনোয়ার হোসেন জানান, সামান্য বৃষ্টিতে কেন সীমানা প্রাচীর ধসে পড়ল তা খতিয়ে দেখা হবে এবং দ্রুত গতিতে ক্ষতিগ্রস্ত দেয়াল রিপেয়ারিং করা হবে। বর্তমানে সীমানা প্রাচীর ধসের ঘটনাটি সর্বত্র আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে।
×