ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মিসবাহউদ্দিন স্মারক বক্তৃতা

মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ প্রতিষ্ঠা গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সাফল্য

প্রকাশিত: ০৬:০১, ৯ অক্টোবর ২০১৫

মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ প্রতিষ্ঠা গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সাফল্য

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ উপমহাদেশের ইতিহাসে বিশ শতকে ধর্মের ভিত্তিতে ভারত ও পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টি; ফলে ভয়াবহ হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা, বিপুল মানুষের নিঃস্ব অবস্থায় দেশত্যাগ ও হানাহানি বিরাট মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি করে। অন্যদিকে সামন্ততান্ত্রিক ও সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র পাকিস্তানে সংখ্যাগুরু বাঙালী শোষণে, বঞ্চনায় ও সামরিক সামাজিক-সাংস্কৃতিক মুক্তির লক্ষ্যে স্বাধিকার ও স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় চূড়ান্ত পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অনন্ত সম্ভাবনাময় গণপ্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা করে এই শতকের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সাফল্য অর্জন করে। আবার সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে না-পারা এবং প্রতিবিপ্লবের মাধ্যমে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি ও চার প্রতিষ্ঠাতা নেতাকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যার পর দুটি সামরিক স্বৈরশাসন আমলে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত দেশের মৌল রাষ্ট্রসত্তা বর্জন করে তাতে একটি বিশেষ ধর্মের ছোপ দেয়ার বিষয়টিও উল্লেখযোগ্য। বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে আয়োজিত ‘অষ্টম মিসবাহউদ্দিন খান স্মারক বক্তৃতায় স্মারক বক্তা বিশিষ্ট লেখক, গবেষক ও বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান এসব কথা বলেন। ইতিহাসবিদ, প্রাক্তন সংসদ সদস্য ও সমাজকর্মী মিসবাহউদ্দিন খানের ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মুনতাসীর মামুন-ফাতেমা ট্রাস্টের উদ্যোগে ‘বিশ শতকে পূর্ব বাংলায় সামাজিক, সাংস্কৃতিক জাগরণ ও বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠন’ শীর্ষক ওই স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন অর্থনীতিবিদ, প্রাবন্ধিক ও প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাসগুপ্ত, ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনের সহধর্মিণী ও মুনতাসীর মামুন-ফাতেমা ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা মামুন প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা এবং স্বাগত বক্তব্য দেন ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন। স্মারকবক্তা অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান আরও বলেন, ইউরোপ তাদের যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলকে পুনর্গঠন করে উন্নত সভ্যতার স্তরে উঠে এসেছে। কিন্তু আমাদের এই অঞ্চল দুর্ভিক্ষকে পরাজিত করতে পারলেও দেশবিভাগের অভিঘাতকে এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি। পাশ্চাত্য বিশ্বে বিশ শতকের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে নাগরিক অধিকার ও মানবাধিকার বিষয়ে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা সৃষ্টি এবং এই বিষয়কে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ও সাংবিধানিক মৌলনীতিক বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে নেয়ার মধ্যে। ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেন, মিসবাহউদ্দিন খান স্মরণে তাঁর পুত্র অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন ধারাবাহিকভাবে এ স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করে আসছেন।
×