স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা অফিস ॥ খুলনার সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মোল্লা জালাল উদ্দিনের পুত্রবধূ সনিয়া রাব্বি সুলতানা লিপি (৩৫) দেবরের হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়ার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের শ্বশুর সাবেক এমপি মোল্লা জালাল বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনা থানায় মামলা করেছেন। মামলায় বাদীর আপন ভাইপো মাওলানা হেদায়েত হোসেন মোল্লাকে (২৭) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে হেদায়েত পলাতক রয়েছে। এদিকে যে শটগানের গুলিতে লিপি নিহত হয়েছেন সেটি জব্দ করেছে পুলিশ।
খুলনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকুমার বিশ্বাস জানান, সাবেক এমপি মোল্লা জালাল উদ্দিন বাদী হয়ে তার পুত্রবধূ হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেছেন অসতর্কতাবশত তার ভাইপো শটগান নাড়াচাড়া করার সময় একটি গুলি বেরিয়ে গেলে তাতে পুত্রবধূ সনিয়া রাব্বি সুলতানা লিপি নিহত হন বলে তিনি জানতে পারেন। ঘটনার সময় তিনি তিন তলায় তার নিজকক্ষে টিভি দেখছিলেন বলে এজাহারে উল্লেখ করেন। বৃহস্পতিবার নিহত লিপির লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। যে শটগানের গুলিতে লিপি নিহত হন সেই শটগানটি জব্দ করা হয়েছে। আসামি হেদায়েত হোসেন মোল্লাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে ওসি জানান। উল্লেখ্য, বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর খুলনা থানাধীন পুলিশ লাইন্স রোডে সাবেক এমপি মোল্লা জালালের নিজ বাড়ির ৫ম তলার একটি কক্ষে বড় ছেলে কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী হেলালের স্ত্রী লিপি, তার ছোট বোন আঁখি ও মোল্লা জালালের ভাইপো হেদায়েত হোসেন গল্প করছিলেন। একপর্যায়ে লিপির দেবর হেদায়েত ওই কক্ষে থাকা একটি শটগান দিয়ে গুলি করলে গুলিটি লিপির মাথায় বিদ্ধ হয় এবং ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। শটগানটি মোল্লা জালালের বড় ছেলে হেলালের নামে লাইসেন্স করা। হেলাল তার মাকে নিয়ে সৌদি আরবে রয়েছেন হজব্রত পালনের জন্য। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ঘটনাটি কামালকে জানানো হয়েছে। তিনি দেশের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।
এদিকে গৃহবধূ লিপি কী স্রেফ দুর্ঘটনার শিকার, না-কি অন্য কিছু ঘটেছে। এ নিয়ে স্বজনদের মধ্যে রয়েছে নানা প্রশ্ন। লিপির ভাই আসাদুজ্জামান মিলন সাংবাদিকদের বলেন, বোনের হত্যাকা-টি কোনভাবেই ‘অসাবধনতা বা রসিকতার ছলে ঘটেছে’ বলে তিনি মেনে নিতে পারছেন না। তিনি বলেন, যদি রসিকতার ছলেই গুলি বের হবে, তাহলে সেটি মুখে বিদ্ধ হলো কিভাবে? অথবা শটগান থেকে ৪টি গুলি বের করার পরও আরেকটি গুলি লোড করা অবস্থায় কেন থেকে গেল। পুরো ঘটনাটিকেই তিনি সন্দেহের চোখে দেখছেন। লিপির চাচা বোরহান উদ্দিন শেখ বলেন, ঘটনাটিকে সবাই সহজ মনে করছে, আসলে এটি সহজ ঘটনা নয় বলে তিনি মনে করেন।