ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হতাশা নিয়ে দেশে ফিরলেন সালমারা

প্রকাশিত: ০৬:০০, ৮ অক্টোবর ২০১৫

হতাশা নিয়ে দেশে ফিরলেন সালমারা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পাকিস্তান মহিলা ক্রিকেট দলের বিপক্ষে দু‘টি টি২০ ও দু’টি ওয়ানডে ম্যাচের সিরিজ খেলে বুধবার দুপুরে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দল। বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ এক ফ্লাইটযোগে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বিসিবি কার্যালয়ে আসেন সালমারা। সেখান থেকে যার যার বাসায় চলে যান। পাকিস্তানে গিয়ে সিরিজ খেলায় মহিলা ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা নিয়ে সবার ভেতরই চিন্তা ছিল। কিন্তু নিরাপদেই দেশে ফিরেছেন সালমা খাতুনরা। তবে সঙ্গে নিয়ে এসেছেন একটি ম্যাচও না জেতার হতাশা! দুই ম্যাচের টি২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচে ২৯ রানে ও দ্বিতীয় ম্যাচে ৩৪ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। টি২০ সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। এরপর যখন দুই ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু হয়, তখনও একই দশা হয়। প্রথম ওয়ানডেতে ২০ রানে ও দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৬ উইকেটে হারে বাংলাদেশ। এবারও হোয়াইটওয়াশ হয়। দলের এমন অবস্থা হয়েছে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার জন্যই। দুপুরে ঢাকায় ফিরে বিসিবিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বাংলাদেশ অধিনায়ক সালমা খাতুন। পাকিস্তান সিরিজে ব্যাটিংটাই দলকে ডুবিয়েছে বলে জানান সালমা। তিনি বলেন, ‘আমাদের বোলিং ও ফিল্ডিং যথেষ্ট ভালো হয়েছে। তবে ব্যাটিংটা ভালো না হওয়ায় আমরা জিততে পারিনি। রুমানা ছাড়া আর কারো ব্যাটিংই ভালো হয়নি। বিশেষ করে আমিও ব্যাটিংয়ে ভালো করতে পারিনি।’ পাকিস্তান সফরে নারী দলের হয়ে অভিষেক হয় দুইজনের। প্রথম টি২০তে নাহিদা আক্তার, নিগার সুলতানার অভিষেক হয়। এরপর প্রথম ওয়ানডেতে নাহিদা ও দ্বিতীয় ওয়ানডেতে নিগারের ওয়ানডেতে অভিষেক হয়। এদের সম্পর্কে সালমা বলেন, ‘নাহিদা আক্তার ও নিগার সুলতানা যথেষ্ট ভালো করেছে। আশাকরি আগামীতেও তারা এই পারফরম্যান্স অব্যাহত রাখবে।’ নিরাপত্তার কারণে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল পাকিস্তান সফরে না গেলেও সালমারা পাকিস্তান সফর করে এসেছেন। নিরাপত্তা নিয়ে সালমাদের মনে কোনো ভয় কাজ করেছে কী-না এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ নারী দলের অধিনায়ক বলেন, ‘আমাদের মনে কোনো ভয় কাজ করেনি। আমাদের যথেষ্ট নিরাপত্তা দেয়া হয়েছে। ব্যাটিং ভালো না হওয়ায় আমরা জিততে পারিনি।’ নিরাপত্তা নিয়ে সন্তুষ্ট সালমারা। নিরাপদে তারা দেশে ফেরায় স্বস্তিতে ক্রিকেট প্রেমীরা, অভিভাবকরা। তবে একটি ম্যাচও যে জিততে পারল না বাংলাদেশ, সেই হতাশা থাকছেই। বাংলাদেশ সরকার থেকে সবুজ সংকেত পাওয়াতেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দলের পাকিস্তান সফর করা। ২৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নিশ্চিত করে দেন। ২৮ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানে উড়াল দেন সালমারা। সেখানে গিয়ে ভিভিআইপি নিরাপত্তা পান তারা। করাচির সাউদার্ন ক্রিকেট স্টেডিয়াম কমপ্লেক্সেই তারা থাকেন। সেখান থেকে আর বের হননি। এ স্টেডিয়ামেই সবকটি ম্যাচ খেলেছেন। ৩০ সেপ্টেম্বর প্রথম টি২০, ১ অক্টোবর দ্বিতীয় টি২০, ৪ অক্টোবর প্রথম ওয়ানডে ও ৬ অক্টোবর দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলা শেষে দেশে ফিরেছেন সালমারা। প্রতিটি ম্যাচেই ব্যাটসম্যানদের ভরাডুবি হয়েছে। শেষ ম্যাচটি হয় ওয়ানডে। সেই ম্যাচেও একই চিত্র দেখা যায়। আগে ব্যাট করে ১২৩ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ। এ রান সহজেই তুলে নেয় পাকিস্তান। পুরো সিরিজ জুড়ে শুধু প্রথম ওয়ানডেতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে বাংলাদেশের মহিলা ক্রিকেটাররা। প্রথম টি২০তে ১২৫ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ২০ ওভারে ৯৫ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ। দ্বিতীয় টি২০তেও (১১৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৮০ রানের বেশি করা যায়নি) একই দশা হয়। তবে প্রথম ওয়ানডেতে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশ। হার হলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতার ছাপ মিলেছিল। পাকিস্তানের করা ২১৪ রানের জবাবে ১৯৪ রান করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আবারও সেই ভরাডুবি হয়। পরপর দুই ওয়ানডেতে হারায় এখন পাকিস্তানই এগিয়ে গেল। দুই দলের মধ্যকার মোট ৬ বারের লড়াইয়ে পাকিস্তান ৪টি ম্যাচ জিতে নিল। বাংলাদেশ জিতল দু’টি ম্যাচ। কিন্তু এবার একটি ম্যাচও জেতা গেল না। সেই হতাশা নিয়েই দেশে ফিরতে হল সালমাদের।
×