ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বদলে গেছে গফরগাঁওয়ের চিত্র

কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা মানুষের দোরগোড়ায়

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ৭ অক্টোবর ২০১৫

কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা মানুষের দোরগোড়ায়

নিজস্ব সংবাদদাতা, গফরগাঁও থেকে, ৬ অক্টোবর ॥ সারাদেশে গ্রমীণ জনপদের মানুষ কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সেবার সুফল ভোগ করছে। দিন দিন সম্প্রসারিত হচ্ছে কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সেবার কার্যক্রম। স্বাস্থ্য সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানোয় এই সফলতায় পিছিয়ে নেই ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলা। বর্তমানে এই উপজেলা ৪৬টি কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম চলছে। প্রতিটি ক্লিনিকে ৩ জন হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার। ১ জন হেলথ প্রোভাইডার সর্বক্ষণিক, ১ জন স্বাস্থ্য সহকারী ও ১ জন পরিবার কল্যাণ সহকারী সপ্তাহে ২ দিন স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা সরকারী ছুটি ব্যতীত প্রতিদিন খোলা থাকে। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে প্রজনন স্বাস্থ্য পরিচর্যার আওতায় অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের প্রসবপূর্ব প্রতিসেধক টিকাসহ সময়মতো যক্ষ্মা, ডিপথেরিয়া, হুপিং কাশি, পোলিও, ধনুষ্টঙ্কার, হাম, নিওমোনিয়া, ম্যালেরিয়া, কুষ্ট, কালাজ্বর, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা দেয়া হয়। উল্লেখ্য, দেশের জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার জনকল্যাণমূলক কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পটি চালু করে। পরে ২০০১ সালে বিএনপি জামায়াত সরকার ক্ষমতায় এসে স্বাস্থ্য সেবা জনকল্যাণের এই প্রকল্পটি বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে। আবারও চালু হয় এই প্রকল্পটি। যার সুফল ভোগ করছে গ্রামের সাধারণ জনগণ। সরেজমিন গফরগাঁও উপজেলার কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে গিয়ে দেখা যায় প্রতিদিন অসংখ্য রোগী বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা নিতে আসেন। কয়েক কোটি ক্লিনিকের গর্ভবতী মায়েদের সন্তান প্রসবের নজির রয়েছে। প্রতিদিন কমপক্ষে প্রতিটি ক্লিনিকে গড়ে ৮০ থেকে ১১০ জন রোগী বিভিন্ন চিকিৎসা নিচ্ছে। স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে রয়েছে ব্যাপক আগ্রহ। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর কল্যাণে স্বাস্থ্য সেবার ফলে অনেক দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পচ্ছেন সাধারণ মানুষ। চিকিৎসা সেবার মান নিয়ে বেশ সন্তোষ প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য সেবা নিতে আসা রোগীরা। শারীরিক দুর্বলতার চিকিৎসা নিতে আসা জালেশ্বর গ্রামের রেজিয়া আক্তার (৪৭) কল্পনা (২০) জহুরা (৪৫) বলেন, যখন অসুস্থতাবোধ করি, সঙ্গে সঙ্গে ক্লিনিকে চলে আসি। ডাক্তার আপার সঙ্গে কথা বলে বিনামূল্যে ওষুধ ও চিকিৎসা সেবা নিই। আমাদের মতো গরিব মানুষের জন্য শেখ হাসিনা হাসপাতাল বানাইয়া দিছে গ্রামে গ্রামে। জালেশ্বর কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইস সিপি) খাদিজা বেগম জনকণ্ঠকে বলেন, প্রতিদিন প্রচুর রোগী এখানে চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। আমরা সকাল ৯টা থেকে ৩টা পর্যন্ত সাধ্যমতো সেবা দিয়ে থাকি। স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি গর্ভবতী মায়ের প্রসূতি সেবাসহ অন্য সেবাগুলো প্রদান করে থাকি। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ওয়ায়েজ উদ্দিন ফরাজি বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর মাধ্যমে মানুষের স্বাস্থ্য সেবা দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে। এ ছাড়াও প্রতি মাসে হাজারো রোগী স্বাস্থ্য সেবা নিচ্ছে কমিউনিটি সেন্টার থেকে। গত সেপ্টেম্বর মাসে এ উপজেলায় ২১ হাজার রোগীকে স্বাস্থ্য সেবা দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য সেবাকে আরও বেশি সহজ করতে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে ইতোমধ্যে ল্যাপটপ প্রদান করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো প্রতিদিনেই স্বাস্থ্য সেবার মান নিয়ে এলাকাভিত্তিক তদারকি হচ্ছে।
×