স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পাকিস্তান কেন ‘আনপ্রেডিক্টেবল’- দলটি আরও একবার তা প্রমাণ করল। ‘আন্ডারডগ’ জিম্বাবুইয়ের কাছে আগের ম্যাচে সম্ভাবনা জাগিয়েও ৫ রানের নাটকীয় হার। একদিন পর সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ওয়ানডেতে এলটন চিগম্বুরাদের পাত্তাই দিল না আজহার আলির দল। প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দিয়ে ৭ উইকেটের জয়, সঙ্গে ২-১এ সিরিজ। ব্যর্থতার দিনে বোলিংয়ে উইকেটহীন থাকার পর অভিষেকে ব্যাট হাতে শূন্য রানে ফিরেছিলেন যিনি- ফাইনালসম লড়াইয়ে ‘নায়ক’ সেই বিলাল আসিফ। ঘূর্ণি বলে ৫ উইকেট নেয়ার পর ওপেনিংয়ে ৩৮ রান, অবধারিত ম্যাচসেরা- ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ পারফর্মারও বুঝি একেই বলে! সহজ অর্থে হারারেতে বিলাল ম্যাজিকে পার পাকিস্তান। ৩ উইকেট হারালেও আসাদ সফিক (৩৮*), বিলাল ও শোয়েব মালিকের (৩৪*) উইলোয় ভর করে জয় পেতে কষ্ট হয়নি পাকিদের (১৬২/৩)।
বিলাল হয়ত আগের ম্যাচের দুঃসহ স্মৃতিটা ভুলে যেতে চাইবেন। ৮ ওভার বল করে উইকেটের দেখা পাননি, সঙ্গে ব্যাটিংয়ে শূন্য, সঙ্গে দেখতে হয়েছিল দলের হার। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে বিলাল যেন সব ভুলিয়ে দিতে চাইলেন। ৫ উইকেট নিয়ে একাই ধসিয়ে দিলেন জিম্বাবুইয়ের ব্যাটিং লাইন। তার ঘূর্ণিতেই ল-ভ- জিম্বাবুইয়ে অলআউট ১৬১ রানে। যাঁরা ৮৯ রান তুলতে একটা উইকেটও হারায়নি, সেই তারাই পরের ৭২ রান তুলতে হারাল ১০ উইকেট! ১ উইকেটে ১০০ থেকে ৭ উইকেটে ১৩৩- নবীন বিলালের ঘূর্ণিবিষে এখানেই জিম্বাবুইয়ের সর্বনাশ। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ওয়ানডেতেই পেলেন ৫ উইকেট। বলের পর ব্যাট হাতেও সামনে থেকে পথ দেখিয়েছেন। ৩০ বছর বয়সে জাতীয় দলে জায়গা পাওয়া পাঞ্জাব অলরাউন্ডার করেছেন যৌথ সর্বোচ্চ ৩৮ রান। পরিষ্কার সকাল যেমন সর্বদাই দিনের সঠিক পূর্বাভাসটা দিতে পারে না, স্বাগতিকদের ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে তেমনটাই হয়েছে। ‘ফাইনাল’ ম্যাচে জিম্বাবুইয়েকে বেশ ভাল শুরু এনে দিয়েছিলেন দুই ওপেনার। ৮৯ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়ার পর মনে হচ্ছিল, বড় সংগ্রহের দিকেই যাবে চিগম্বুরা-বাহিনী। তখনই মঞ্চে আবির্ভাব বিলালের। তার অফস্পিনের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে যান ওপেনার চামু চিবাবা (৪৮)। সেই শুরু, এরপর এমনই ধ্বংসযজ্ঞ চালালেন- তার অফস্পিনের বিপরীতে পথের দিশাই খুঁজে পায়নি জিম্বাবুইয়ে। ৮৯ রানে বিনা উইকেট থেকে ১২৭ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বসে স্বাগতিকরা। যেখানে ৫টিই বিলালের! মাত্র ৩৩টি ডেলিভারির মধ্যে ১৬ রান দিয়ে ৫ উইকেট! সব মিলিয়ে ১০ ওভারে খরচ মাত্র ২৫ রান। সত্যি অসাধারণ। ধাক্কা সামলে উঠতে পারেনি জিম্বাবুইয়ে। অন্যপ্রান্তে ওপেনার রিচমন্ড মুতুম্বামি (৬৭) সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে ১৩৩ রানের মাথায় ফিরে গেলে সব শেষ হয়ে যায়। আট ব্যাটসম্যান দুই অঙ্ক ছুঁতে ব্যর্থ। ফলে ১৬১ রানে থামে স্বাগতিকদের সংগ্রহ। আরেক নতুন বোলার ইমাদ ওয়াসিম নেন ৩ উইকেট। মোহাম্মদ ইরফান এবং শোয়েব মালিক ১টি করে।