ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আইএস ঘাঁটি রাকাকে বিচ্ছিন্ন করতে শীঘ্রই কুর্দি-আরব অভিযান

সিরিয়ায় নয়া মার্কিন ফ্রন্ট

প্রকাশিত: ০৪:২০, ৬ অক্টোবর ২০১৫

সিরিয়ায় নয়া মার্কিন ফ্রন্ট

যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের (আইএস) ওপর চাপ বাড়ানোর পদক্ষেপ নিয়েছে। এর আওতায় আইএসের প্রধান ঘাঁটি রাকাকে চাপের মুখে ফেলতে এক অভিযানে ২০ হাজারেরও বেশি কুর্দি যোদ্ধার সঙ্গে প্রায় ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার আরব যোদ্ধা যোগ দেবে। আর মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনীর কয়েক ডজন বিমান তাদের সমর্থন যোগাবে। খবর নিউইয়র্ক টাইমস অনলাইনের। মার্কিন নেতৃত্বাধীন কোয়ালিশন সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আইএসের বিরুদ্ধে বড় ধরনের ফ্রন্ট খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ঐ অভিযান শুরু করতে গত সপ্তাহে দুটি পদক্ষেপ অনুমোদন করেছেন। কর্মকর্তারা একথা বলেন। ওবামা স্থলযুদ্ধে সিরীয় সরকার বিরোধী বাহিনীকে গোলাবারুদ এবং সম্ভবত কিছু কিছু অস্ত্রশস্ত্র সরাসরি সরবরাহ করতে প্রথমবারের মতো পেন্টাগনকে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি তুরস্কের এক বিমানঘাঁটি থেকে বিমান হামলা বাড়ানোর ধারণাও অনুমোদন করেছেন। সেই সঙ্গে ঐসব পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো আইএসের কার্যত রাজধানী রাকার ওপর চাপ সৃষ্টি করতে কোয়ালিশন যুদ্ধবিমানগুলোর সমর্থনপুষ্ট এক অভিযানে ২০ হাজারের বেশি কুর্দি যোদ্ধার সঙ্গে যোগ দেবে এমন ৩ থেকে ৫ হাজার আরব যোদ্ধার শক্তি বৃদ্ধি করা। আইএসের গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহ পথ বিচ্ছিন্ন করে দিতে তুরস্ক সংলগ্ন সিরীয় সীমান্তের ৬০ মাইলের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ যাতে সিরীয় সরকারবিরোধী যোদ্ধারা বন্ধ করে দিতে পারে, সেই লক্ষ্যেও পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। ওবামা সাংবাদিকদের বলেন, আমি চাই সবাই এ গুরুত্বপূর্ণ বার্তাটি জেনে নিক যে, আমরা ইসলামিক স্টেটের পশ্চাদ্ধাবন করতে যাচ্ছি। আমরা মধ্যবর্তী আসাদবিরোধী পক্ষকে সহায়তা করতে যাচ্ছি। নতুন আমেরিকান নেতৃত্বাধীন অভিযান পশ্চিম সিরিয়ায় রুশ বিমান হামলার প্রধান ক্ষেত্র থেকে দূরে পরিচালনা করা হবে। রুশ অভিযান প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরোধী এমন সিরীয দলগুলোকে লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে এবং কেবল নামে মাত্রই ইসলামিক স্টেটকে হামলার লক্ষ্যস্থল করেছে। আমেরিকান কর্মকর্তারা একথা জানান। মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন মার্কিন বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল তৃতীয় লয়েড জে. অস্টিন গত মাসে নতুন কৌশল সম্পর্কে আভাস দেন। তিনি সিনেটের সশস্ত্র বাহিনী কমিটিকে বলেন, আগামী ছয় মাস মার্কিন বাহিনী সিরিয়ার রাকা শহরের মতো বড় বড় এলাকায় আরও বেশি চাপ সৃষ্টি করে যাবে। তুরস্কের বিমানঘাঁটি ব্যবহারের প্রতি ইঙ্গিত করে জেনারেল অস্টিন আরও বলেন, ঐ প্রবেশাধিকারের ফলে আমরা সিরিয়ার বড় বড় স্থানের দিকে আরও বেশি দৃষ্টি দিতে পারব। কাজেই এটি অবশ্যই ইরাকের পরিস্থিতি বদলে দেবে। মার্কিন প্রশাসনের পরিকল্পনা হলো রাকার দিকে এগিয়ে যেতে কুর্দি ও আরব যোদ্ধাদের সহায়তা করা, কিন্তু ঐ সুরক্ষিত শহরটিকেই দখলের চেষ্টা করা নয়। বরং প্রশাসনের লক্ষ্য হবে রাকাকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা এবং শহরটি থেকে উত্তর-পূর্ব ও উত্তর-পশ্চিম অভিমুখী ভ্রমণ ও রসদ সরবরাহ পথ বন্ধ করে দেয়া। সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে অভিযান চালানোর পরিকল্পনার আওতায় তুরস্কে ইনসারলিক বিমানঘাঁটিতে কোয়ালিশনের বিমান শক্তিও বাড়ানো হবে। আরও দেশ সেখানে বিমান রাখতে পারবে। অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স ও তুরস্ক সবাই সম্প্রতি সিরিয়ায় বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুর ওপর হামলা চালানোর মিশন শুরু করেছে। কোয়ালিশনের বিমান অভিযানের ক্ষেত্র ক্রমশ সম্পস্রারিত করে প্রশাসন মার্কিন সমর্থিত আরও বিদ্রোহী বাহিনীকে রক্ষা করতে এবং সম্ভবত রাশিয়ার নিজস্ব অভিযান ক্ষেত্রকেও সীমিত করে দিতে পারবে। এক ইউরোপীয় ও এক সিনিয়র আমেরিকান কর্মকর্তা এ মন্তব্য করেন। সিরিয়ার লাতাকিযায় রাশিয়ার সামরিক শক্তি গড়ে তোলার আগেই মার্কিন প্রশাসনের নতুন পরিকল্পনা উদ্ভাবন করা হয় এবং রাশিয়ার অভিযানের সঙ্গে মার্কিন পরিকল্পনার সমন্বয় সাধন করা হয়নি। প্রশাসনের এক কর্মকর্তা একথা জানান। যুক্তরাষ্ট্র গত সপ্তাহে স্পষ্ট করে দেয় যে, রাশিয়ার বিমান হামলার কারণে আইএসের বিরুদ্ধে মার্কিন অভিযান পরিত্যক্ত হবে না।
×