ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এসএমই খাতে ঋণ বিতরণ বেড়েছে ১৯.৫৩ শতাংশ

প্রকাশিত: ০৩:৫৩, ২ অক্টোবর ২০১৫

এসএমই খাতে ঋণ বিতরণ বেড়েছে ১৯.৫৩ শতাংশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতে ঋণ বিতরণ বেড়েছে। বেড়েছে ঋণ পাওয়া উদ্যোক্তার সংখ্যাও। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো জানুয়ারি-জুন সময়ে প্রায় চার লাখ ৩০ হাজার উদ্যোক্তার মধ্যে ৫৬ হাজার ৩৭৩ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় যা ১৯.৫৩ শতাংশ বেশি। আগের বছরের প্রথম ছয় মাসে দুই লাখ ৬২ হাজার উদ্যোক্তার মধ্যে ৪৭ হাজার ১৬১ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছিল। সংশ্লিষ্টরা জানান, কম সুদের কারণে রফতানিমুখী বড় শিল্প উদ্যোক্তারা এখন বিদেশ থেকে বেশি ঋণ নিচ্ছেন। বিনিয়োগ বোর্ডের (বিওআই) মাধ্যমে গত ছয় বছরে বেসরকারী খাতে প্রায় ৬০০ কোটি ডলারের বিদেশী ঋণ অনুমোদন দেয়া হয়েছে। আর গত জুন পর্যন্ত এক বছরের কম মেয়াদী বিদেশী ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৩৯০ কোটি ডলার। ছয় মাস আগে গত ডিসেম্বর শেষে যা ২৯৮ কোটি ডলার ছিল। এতে দেশীয় উৎস থেকে বড় শিল্প উদ্যোক্তারা আগের মতো আর ঋণ নিচ্ছেন না। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংকগুলো তাদের নীতি পাল্টেছে। কেননা একটি সময় এসএমই খাতে ঋণ দিতে ব্যাংকগুলো তেমন আগ্রহ দেখাত না। আর এখন নিজেদের ব্যবসার স্বার্থে এ খাতের দিকে ঝুঁকছে। চলতি বছর ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য এসএমই খাতে মোট এক লাখ ৪ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। প্রথম ৬ মাসে বিতরণ হওয়া ৫৬ হাজার ৩৭৩ কোটি টাকা মোট লক্ষ্যমাত্রার ৫৩ দশমিক ৯০ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে ব্যাংকগুলো ৪ লাখ ২১ হাজার উদ্যোক্তার মাঝে ৫৪ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা বিতরণ করেছে। ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ৮ হাজার ৯২৯ উদ্যোক্তাকে দিয়েছে এক হাজার ৮২৮ কোটি টাকা। বরাবরের মতো গত ছয় মাসেও এসএমই ঋণের ব্যবসা উপ-খাতে বেশি ঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। ছয় মাসে ব্যবসায় দেয়া হয়েছে ৩৫ হাজার ৫৮৭ কোটি টাকা। আগের বছরের তুলনায় যা ১৬ দশমিক ৬২ শতাংশ বেশি। সেবা খাতে ৫৪ দশমিক ১৭ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ১৭ কোটি টাকা। আর শিল্পে বিতরণ হওয়া ১৫ হাজার ৮৪ কোটি টাকা আগের বছরের তুলনায় ১৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ বেশি। রাজশাহীতে হচ্ছে রফতানিমুখী সোয়েটার কারখানা মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ রাজশাহী বিসিক শিল্প এলাকায় গড়ে উঠতে শুরু করেছে শিল্প কারখানা। চলতি বছরের মার্চে নিটল-নিলয় গ্রুপের উদ্যোগে দেশের প্রথম হিউম্যান হলার তৈরি যাত্রা শুরুর পর এবার বৃহৎ আকারে সোয়েটার কারখানা স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ‘সাকোয়াটেক্স’ নামের এ গার্মেন্টস কারখানাটি হবে উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান। দেশের অন্যতম শিল্প উদ্যোক্তা এনা গ্রুপ এ কারখানা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে। শতভাগ রফতানিমুখী এ সোয়েটার কারখানাটিতে আগামী বছরের শুরুর দিক থেকেই উৎপাদন শুরু হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন এনা গ্রুপের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এতে দুই হাজারের বেশি মানুষের কর্মস্থান হবে। ইতোমধ্যে জনবল নিয়োগের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এনা গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মোসলেহ উদ্দিন জানান, তাদের এই শিল্প কারখানাটি হবে রাজশাহী তথা উত্তরাঞ্চলের সর্বপ্রথম বৃহৎ গার্মেন্টস কারখানা। এখান থেকে প্রতিমাসে এক লাখ ২০ হাজার সোয়েটার উৎপাদন করা সম্ভব হবে। যা পর্যায়ক্রমে ১০ লাখ পর্যন্ত উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করা যাবে। এই কারখানাটিতে সবমিলিয়ে প্রায় দুই হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। ইতোমধ্যে অবকাঠামো ও বিশাল ভবন নির্মাণ কাজও শুরু হয়েছে। বুধবার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নগরীর বিসিক শিল্প এলাকায় সোয়েটার কারখানাটি তৈরি হচ্ছে সপুরা সিল্ক শো-রুমের পাশে। এরই মধ্যে কারখানাটির ছয় তলা ভবন নির্মাণ কাজও শুরু হয়েছে। কারখানাটি তৈরির জন্য জাপানের সিমা সেইকি কোম্পানি থেকে এরই মধ্যে ক্যাকার্ড ও কেনিটিং মেশিন আমদানিরও চুক্তি করেছে এনা গ্রুপ। এনা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সাংসদ প্রকৌশলী এনামুল হক জানান, এরই মধ্যে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে গার্মেন্টটিতে লোক নিয়োগের প্রস্তুতি নিয়েছি। আশা করা হচ্ছে খুব দ্রুতই ভবন নির্মাণ কাজ শেষে উৎপাদন শুরু হবে। আর এটি চালু হওয়ার পর থেকে উত্তরাঞ্চলের জন্য এই কারখানাটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।
×