ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অপহরণের পর স্কুলছাত্রী হত্যা ॥ ঘাতক ইমামের স্বীকারোক্তি

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫

অপহরণের পর স্কুলছাত্রী হত্যা ॥ ঘাতক ইমামের স্বীকারোক্তি

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর, ২৩ সেপ্টেম্বর ॥ মাদারীপুরে স্কুলছাত্রী আদুরীকে (৬) অপহরণের পর ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ না পেয়ে হত্যা করেছে মসজিদের ইমাম সফিকুল ইসলাম (২৫) নামের এক পাষ-। হত্যার পর তাকে বস্তায় ভরে মসজিদের পাশেই মাটিচাপা দিয়ে রাখে। রবিবার এ ঘটনা ঘটে রাজৈর উপজেলার সেনদিয়া গ্রামে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। বুধবার দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে আদুরীর লাশ পারিবারিক কবরে দাফন করা হয়েছে। ঘাতক সফিকুলকে গ্রেফতার করে বুধবার আদালতে তোলা হলে সে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। রবিবার সকালে রাজৈর উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নের সেনদিয়া গ্রামের টুকু সরদারের মেয়ে স্কুলছাত্রী আদুরী (৬) মসজিদে আরবী পড়তে যায়। এরপর থেকে সে নিখোঁজ থাকে। পরে জানা যায়, ওই স্কুলছাত্রী আদুরীকে অপহরণ করেছে সেনদিয়া মসজিদের ইমাম সফিকুল ইসলাম (২৫)। অপহরণ করে আদুরীর বাবার কাছে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণ না পেয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর তার লাশ বস্তাবন্দী করে মসজিদের পাশে মাটিচাপা দিয়ে রাখে। নিহত আদুরী সেনদিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক প্রাথমিকের ছাত্রী বলে জানায় নিহতের ভাই শাহিন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। নিহত আদুরীর পিতা টুকু সরদার বলেন, আদুরী অন্যান্য দিনের মতো রবিবার সকালে তার সহপাঠীদের সঙ্গে আরবী শেখার জন্য সেনদিয়া বাজার সংলগ্ন মসজিদের ইমামের কাছে যায়। বৃষ্টির কারণে ছাত্রছাত্রী কম আসায় ইমাম সফিকুল ইসলাম তাদের না পড়িয়ে বাড়ি চলে যেতে বলে এবং কৌশলে আদুরীকে আটকে রাখে। দুপুর গড়িয়ে গেলেও আদুরী বাড়ি ফিরে না আসায় সকলে খোঁজাখুঁজি শুরু করে এবং মাইকিং করে নিখোঁজ সংবাদ প্রচার করা হয়। এর কিছুক্ষণ পরে ০১৯৬০-২৬৪৪২২ নম্বর মোবাইল ফোন থেকে বার বার রিং দিয়ে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। উপায়ান্ত না দেখে আমি আদুরীর ছবি নিয়ে থানা এবং এসপি অফিসে পাগলের মতো দৌড়াদৌড়ি করি। রাজৈর থানার এসআই সমীর কুমার হোড় বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মসজিদের ইমাম সফিকুল ইসলামকে মঙ্গলবার আটক করে থানায় নিয়ে আসি। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে ইমাম সফিকুল জানায়, রবিবার সকালেই আদুরীকে হত্যা করে লাশ সিমেন্টের বস্তায় ভরে মসজিদের পাশে মাটি চাপা দিয়ে রেখেছে। এ ব্যাপারে বুধবার নিহত আদুরীর পিতা টুকু সরদার বাদী হয়ে মসজিদের ইমাম সফিকুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে ৬ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। রাজৈর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন ভূঞা জানান, ইমাম সফিকুলসহ সংঘবদ্ধ একটি চক্র এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শীঘ্রই তার সহযোগীদেরও গ্রেফতার করা হবে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লাশ উদ্ধার করে মাদারীপুর মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘটনার মূল হোতা ঘাতক ইমাম পিরোজপুর সদর উপজেলার বৈয়ামপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে বলে জানা গেছে।
×