ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আশ্রয়ণ প্রকল্প ছেড়ে অন্যত্র ঠাঁই নিচ্ছেন বাসিন্দারা

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

আশ্রয়ণ প্রকল্প ছেড়ে অন্যত্র ঠাঁই নিচ্ছেন বাসিন্দারা

স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা ॥ পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের চরলতা আশ্রয়ণ প্রকল্প ক্রমে জনশূন্য হয়ে পড়ছে। এরই মধ্যে ৪০টি পরিবার অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। বাকি পরিবারগুলোও প্রকল্পের ঘর ছাড়ার উদ্যোগ নিচ্ছে। নির্মাণের দেড় দশকে কোন ধরনের মেরামত বা সংস্কার না হওয়ায় প্রকল্পের ঘরগুলো বসবাস অনুপযোগী হয়ে পড়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের ত্রাণ দফতর বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করলেও এ খাতে কোন ধরনের বরাদ্দ নেই বলে জানিয়েছে। নয়টি ব্যারাকে ৯০টি ঘর নিয়ে চরলতা আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণ করা হয় ২০০০-০১ সালে। নদী ও সাগরের ভাঙ্গনে সর্বস্বহারা চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের ৯০টি হতদরিদ্র পরিবারকে এ প্রকল্পে ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়। শুরুতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সাগর তীরের প্রত্যন্ত এ প্রকল্পে বসবাসকারীদের সরকারী খাসজমি বরাদ্দসহ বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধার আশ্বাস দেয়া হলেও তার কোনটিই বাস্তবায়ন করা হয়নি। প্রকল্পের বাসিন্দা আবুল হোসেন, আবু সায়েম মুফতী, মাইনুদ্দিন পেয়াদা, রিয়াজ হাওলাদারসহ কয়েকজন জানান, নির্মাণের পর থেকে যেমন ঘরগুলোতে কোন ধরনের মেরামত বা সংস্কার হয়নি। তার ওপরে এ ব্যারাকগুলোর ওপর দিয়ে সিডর, আইলাসহ দফায় দফায় প্রলয়ঙ্করি ঘূর্ণিঝড় বয়ে গেছে। ফলে ঘরগুলোর টিনের চাল-বেড়া খুলে পড়ছে। এ্যাঙ্গেল-পাত, নাট-স্ক্রুসহ লোহার উপকরণগুলোতে মরিচা ধরে সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সিমেন্টের খুঁটি ভেঙ্গে পড়ছে। বর্তমানে ৯টি ব্যারাকের প্রায় সবগুলো ঘরই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রোদ, ঝড়, বৃষ্টিসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ সইতে না পেরে গত তিন-চার বছরে ৪০টি পরিবার প্রকল্পের ঘর ছেড়ে এলাকার বিভিন্ন বেড়িবাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। বর্তমানে প্রকল্পের এসব ঘর খালি পড়ে আছে। প্রকল্পের বাকি ৫০টি পরিবারও নিরূপায় হয়ে ঘর ছাড়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। চালিতাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ফজলুর রহমান হাওলাদার জানান, প্রকল্পের বাসিন্দারা বর্তমানে যে কতটা চরম কষ্টে দিন পার করছে, তা স্বচক্ষে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করতে চাইবে না। সামান্য বৃষ্টিতেই ঘরগুলো সব ভেসে যায়। শীত এবং গরমেও তাদের দুর্ভোগ চরম আকার নেয়। ইচ্ছা থাকলেও বরাদ্দের অভাবে মানবেতর দিন কাটানো প্রকল্পবাসীদের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কিছু করা যাচ্ছে না। একইভাবে রাঙ্গাবালী উপজেলা ত্রাণ দফতরের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তপন কুমার ঘোষ জানান, চরলতা আশ্রয়ণ প্রকল্প মেরামত ও সংস্কারের জন্য বহু আগেই কর্তৃপক্ষ বরাবরে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু পুরানো কোন আশ্রয়ণ প্রকল্পের জন্যই এ যাবত বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। যে কারণে এ আশ্রয়ণের জন্য কিছু করা যায়নি।
×