ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রূপগঞ্জে দুই লাখ মানুষ ঈদ আনন্দ বঞ্চিত

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

রূপগঞ্জে দুই লাখ মানুষ  ঈদ আনন্দ বঞ্চিত

মীর আব্দুল আলীম, রূপগঞ্জ ॥ জলাবদ্ধতার কারণে রূপগঞ্জের দুই লাখ মানুষ এবার ঈদ-উল-আযহার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হবে। দু’টি পৌর এলাকাসহ সাত ইউনিয়নের ২৫ গ্রামের মানুষ গত তিন মাস ধরে পানিবন্দী রয়েছে। জলাবদ্ধতায় এখানকার প্রায় দুই শতাধিক ক্ষুদ্র কুটির শিল্প কারখানা বন্ধ রয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে এদের অবস্থা এখন খুবই নাজুক। গত সপ্তাহ পর্যন্ত জলাবদ্ধতা কমলেও গত তিন দিনের বৃষ্টিতে অনেক এলাকাই আবার নতুন করে জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। টানা তিন মাসের স্থায়ী জলাবদ্ধতা নিরসনে নেই কোন পদক্ষেপ। বর্ষার শুরুতে টানা বর্ষণে পানি আটকে রূপগঞ্জ উপজেলার নিম্নœাঞ্চলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এখনও তারা পানিবন্দী অবস্থায় আছে। তাই এসব পরিবারে নেই ঈদের আনন্দ। অনেকেই এখন গাঁটের টাকা (পুঁজি) ভেঙ্গে খাচ্ছে। ছেলে মেয়েদের ঈদে জামা কাপড়তো দূরের কথা তাদের হাতে এখন কোরবানী কেনার টাকা নেই। তাই তারা এবার ঈদ আনন্দ বঞ্চিত হবে। গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন জানান, ‘জনগণের র্দুদশার কথা চিন্তা করে আমরা আটকেপড়া পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা করছি। আগে কোনদিন এলাকায় জলাবদ্ধতা ছিল না। অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা শিল্প কারখানার কারণে এখন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। প্রভাবশালীদের সেচপ্রকল্প দখলের কারণেই মানুষের এই দুর্ভোগ চলছে। আমরা ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে শিল্প কারখানার মালিকদের অনুরোধ করেছি বাঁধের ভেতরে পানি না ফেলার জন্য। যদি তারা এ ব্যাপারে কথা না শুনে তাহলে আমরা আইনীভাবে অগ্রসর হবো।’ এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লোকমান হোসেন বলেন, ঈদের পরে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ ও ভরাট ক্যানেল সংস্কার করা হবে। কেবল তারাব পৌরসভার অগ্রণী সেচ প্রকল্পের ভেতরেই এক লাখ মানুষ পানিবন্দী রয়েছে। এ ব্যাপারে পৌর মেয়র শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমরা রাত দিন পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা করছি, নতুন করে কয়েকটি পাম্পও বসানো হয়েছে। আবারও টানা বৃষ্টিতে নতুন করে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পৌর কাউন্সিলর মতিন ভুইয়া জানান, সেচ প্রকল্পের খাল ভরাট- সে সঙ্গে অনেক খাল দখল শিল্প মালিকরা ভরাট করে ফেলায় জলাবদ্ধ পানি নিষ্কাশন করা যাচ্ছে না। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ অনেক জনপ্রতিনিধি কারখানার মালিকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে চুপ থাকেন তাই জলাবদ্ধতা নিরসন হচ্ছে না। এখানে কারখানাগুলো গড়ে উঠায় খেলাধুলাতো দূরের কথা মানুষ পানিবন্দী হয়ে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। অন্যদিকে কারখানার বর্জ্যওে বিপর্যয় হচ্ছে পরিবেশ। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের এসবে মাথাব্যথা নেই। এদের কেউ কেউ কালেভদ্রে এলাকায় এলেও পানি নিষ্কাশনের কোন উদ্যোগ নেয়নি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
×