ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জাতীয় ক্রিকেট লীগের চার ম্যাচই ড্র

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৫

জাতীয় ক্রিকেট লীগের চার ম্যাচই ড্র

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জাতীয় ক্রিকেট লীগে তৃতীয় দিনের পর চতুর্থ দিনেও দাপট দেখিয়েছে বৃষ্টি। এর ফলে ১৭তম আসরের প্রথম রাউন্ডের সব ম্যাচই ড্র হয়েছে। সোমবার বগুড়া ও রাজশাহীতে বৃষ্টির কারণে বল মাঠে না গড়ালেও ফতুল্লা ও খুলনায় ম্যাচ শুরু হয়। আর ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে এবং খুলনার আবু নাসের স্টেডিয়ামে খেলা শুরুর আগে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি জগমোহন ডালমিয়ার মৃত্যুতে শোক জানাতে ১ মিনিট নীরবতা পালন করেন ক্রিকেটার ও ম্যাচ অফিসিয়ালরা। বগুড়া ও রাজশাহীতে খেলা মাঠে না গোড়ানোয় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আগে ১ মিনিট নীরবতা পালন করেন ক্রিকেটার ও ম্যাচ অফিসিয়ালরা। বগুড়ায় ঢাকা মেট্রো ও রংপুর ম্যাচের প্রথম দুই দিনের খেলা বেশ ভালভাবেই শেষ হয়েছিল। কিন্তু তৃতীয় দিনের পর চতুর্থ দিনেও বাদসাধে বৃষ্টি। এর ফলে লীগের প্রথম টায়ারে রংপুর বিভাগ ও ঢাকা মেট্রোর ম্যাচটি অমীমাংসিতভাবেই শেষ হয়। প্রথম ইনিংসে ঢাকা মেট্রোর ২৩৮ রানের জবাবে দ্বিতীয় দিন শেষে রংপুরের সংগ্রহ ছিল ৫ উইকেটে ২৬৬ রান। ধীমান ঘোষ ৮৫ ও আরিফুল হক ৪৮ রানে অপরাজিত ছিলেন। কিন্তু রবিবার ভোর থেকেই বৃষ্টি হওয়ায় তৃতীয় দিনে একটি বলও মাঠে গড়ায়নি। সোমবার চতুর্থ দিনেও বৃষ্টি বাগড়া দিলে নির্ধারিত সময়ে খেলা শুরু হয়নি। কিন্তু বেলা সাড়ে ১১টায় শেষদিনের খেলাও পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন আম্পায়াররা। ফলে ড্র হয় রংপুর-ঢাকা মেট্রোর ম্যাচ। প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট পাওয়ায় ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন রংপুরের স্পিনার মাহমুদুল হাসান। এই ম্যাচ থেকে রংপুর বিভাগের পয়েন্ট ৮ আর ঢাকা মেট্রোর ৪। ঢাকা-খুলনার ম্যাচেও কেউ জেতেনি। ওয়ালটন ১৭তম জাতীয় ক্রিকেট লীগের প্রথম রাউন্ডের ম্যাচে খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় ঢাকা ও খুলনা বিভাগ। বৃষ্টির কারণে তৃতীয় দিন একটি বলও মাঠে গড়ায়নি। বৃষ্টির বাগড়া ছিল চতুর্থ দিনেও। তারপরও কিছুটা খেলার সুযোগ হয়। প্রথম ইনিংসে ঢাকা বিভাগের ১৮৭ রানের জবাবে খুলনা প্রথম ইনিংসে সংগ্রহ করে ৩৪০ রান। আর তাতে স্বাগতিকরা লিড পায় ১৫৩ রানের। তবে ঢাকা বিভাগ দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে বিনা উইকেটে ১৫ রান করতে সক্ষম হয়। সোমবার চতুর্থ দিনের খেলা একটু আগেই শুরুর কথা ছিল। কিন্তু বৃষ্টিতে মাঠ ভেজা থাকায় শুরু হয় সকাল ১০টায়। কিন্তু ১ ওভার ৫ বল মাঠে গড়াতেই আবার বৃষ্টি হানা দেয়। এর ফলে বৃষ্টি বিঘিœত চতুর্থ দিনে ঢাকা বিভাগ তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে বিনা উইকেটে ১৫ রান তোলার মধ্য দিয়েই দিনের খেলা শেষ করে। মাইশিকুর ৬ রানে ও আব্দুল মাজিদ ৯ রানে অপরাজিত থাকেন। ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন খুলনার মুস্তাফিজুর রহমান। ১৫ ওভার বল করে ২৯ রানের বিনিময়ে প্রতিপক্ষের ৪ উইকেট লাভ করেন তিনি। বৃষ্টিতে রক্ষা পেল মুশফিকের রাজশাহী। কেননা রাজশাহী বিভাগের প্রথম ইনিংস গুটিয়ে গিয়েছিল মাত্র ৯৩ রানেই। বরিশাল বিভাগের দেয়া ৩৭০ রানের বড় লক্ষ্যে খেলতে নেমে যদিও বিনা উইকেটে ২৫ রান তুলে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছিল মুশফিকুর রহীমের নেতৃত্বাধীন দলটি। কিন্তু তখনও পুরো দুইদিনের খেলা বাকি। যে কারণে ম্যাচ বাঁচানোটা কঠিন ছিল তাদের জন্য। কিন্তু তৃতীয় ও চতুর্থ দিনের খেলা বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ায় ড্র নিয়েই সন্তুষ্ট মুশফিকুরের দল। সোমবার চতুর্থ ও শেষদিনের তিন সেশনের খেলা মাঠে গড়ালেও ফল হতে পারত। কিন্তু আউটফিল্ড ভেজা থাকায় এদিনও কোন বল মাঠে গড়ায়নি। বেলা সাড়ে ১১টায় ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করলে অমীমাংসিতভাবেই শেষ হয় বরিশাল-রাজশাহীর ম্যাচ। দুই দলেরই প্রথম ইনিংস শেষ হওয়ায় ড্রয়ের ৩ পয়েন্টের সঙ্গে অন্যান্য বোনাস পয়েন্টও পেয়েছে বরিশাল-রাজশাহী। সব মিলিয়ে বরিশাল পেয়েছে ১০ পয়েন্ট আর রাজশাহী ৬। ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন বরিশালের সেঞ্চুরিয়ান মোসাদ্দদেক হোসেন। চট্টগ্রাম আর সিলেটের ম্যাচটিও নি®প্রাণ ড্র হয়েছে। ফতুল্লায় দ্বিতীয় টায়ারে সিলেট বিভাগের সঙ্গে ম্যাচে চট্টগ্রাম বিভাগ ব্যাট করেছে মাত্র ৪ ওভার! ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম-সিলেট ম্যাচে প্রথম দিনেই শুধু ৯০ ওভার খেলা হয়েছিল। দ্বিতীয় দিনে বৃষ্টির কারণে খেলা হয় মাত্র ৩০.২ ওভার। সব মিলিয়ে ১২০.২ ওভারে প্রথম ইনিংসে সিলেট সংগ্রহ করে ৮ উইকেটে ৩৫২ রান। কিন্তু বৃষ্টির বাগড়ায় অন্য তিন ভেন্যুর মতো ফতুল্লাতেও তৃতীয় এবং চতুর্থ দিনে একটি বলও মাঠে গড়ায়নি। সিলেটের হয়ে প্রথম ইনিংসে ৮০ রানের ইনিংস খেলার সৌজন্যে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন রুমান আহমেদ ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন। স্কোর ॥ ঢাকা মেট্রো প্রথম ইনিংস : ২৩৮/১০ (মার্শাল ৬৫, শামসুর ৫৪, ইলিয়াস ৫২*; মাহমুদুল ৫/৪৪) রংপুর প্রথম ইনিংস : ২৬৬/৫ (ধীমান ৮৫*, আরিফুল ৪৮*, নাঈম ৪৬; শহীদ ২/৬৩)। ঢাকা-খুলনা ॥ ঢাকা বিভাগ প্রথম ইনিংস : ১৮৭/১০ (সাইফ ৬৮, নাদিফ ৩৬; মুস্তাফিজ ৪/২৯, রাজ্জাক ৪/৭২)। খুলনা বিভাগ প্রথম ইনিংস : ৩৪০/১০ (মিঠুন ৮৭, মেহেদী ৫৩, নুরুল ৫৩; মোশাররফ ১১৯/৭)। বরিশাল-রাজশাহী ॥ বরিশাল প্রথম ইনিংস : ৩০২/১০ (মোসাদ্দেক ১২২, শাহরিয়ার ৭৫, সোহাগ গাজী ৫২; সানজামুল ৬/১২৩)। দ্বিতীয় ইনিংস ১৬০/১০ (মোসাদ্দেক ৪০, ফজলে ৩৫; সানজামুল ৪/৪৯, ফরহাদ হোসেন ৩/২০, ফরহাদ রেজা ৩/৩১) রাজশাহী প্রথম ইনিংস : ৯৩/১০ (মুশফিক ৩২, মুক্তার ১৮; তৌহিদ ৬/৩১, কবির ৩/১১) দ্বিতীয় ইনিংস : ২৫/০ (নাজমুল ১৬*, জহুরুল ৯*) সিলেট-চট্টগ্রাম বিভাগ ॥ সিলেট প্রথম ইনিংস : ৩৫২/৮ ইনিংস ঘোষণা (রুমান ৮০, রাজিন ৭৪, রাহাতুল ৫৬*; নাবীল ৩/৭৮, মিরাজুল ২/৪২)। চট্টগ্রাম প্রথম ইনিংস : ৩৬/০ ( ইয়াসির ২৩*, তামিম ১৩*)।
×