ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রূপসা ঘাটের দুর্ভোগ

সম্পাদক সমীপে

প্রকাশিত: ০৬:৪১, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৫

সম্পাদক সমীপে

প্রতিবছর আগস্ট থেকে অক্টোবর খুলনা শহর সংলগ্ন রূপসা ফেরিঘাট জোয়ারের সময় তলিয়ে যায় এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে। উভয় পারের ঘাটই পানির নিচে চলে যায়। সুতরাং রূপসা ঘাট পারাপারকারীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ট্রলারে (ইঞ্জিনচালিত নৌকা) ওঠার আগে এবং নামার পরে হাঁটু বা কোমর সমান জলের মধ্যদিয়ে তাদের হাঁটতে হয়। নিজের কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য আমাকে প্রতিদিনই এই নদী পার হতে হয়। তাই আমি প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন। জোয়ারের সময় কি ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এখানে তা আমি দেখি এক ভুক্তভোগী হয়ে। প্যান্ট ভাঁজ করে, জুতা হাতে নিয়ে নৌকায় ওঠা বা নামার দৃশ্য খুবই সাধারণ। যখন পানি কোমর অবধি ওঠে তখন আর প্যান্ট ভাঁজ করে কুলায় না। সবকিছু ভিজিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়। মহিলাদের কষ্ট আরও বেশি। তারা তাদের শাড়ি কাপড়-চোপড় ভিজে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে না। মাঝে মাঝে জলের মধ্যে পড়ে যায়। উভয়পাড়ের পন্টুন এত পুরনো আর জরাজীর্ণ, যে কোন মুহূর্তে ভেঙ্গে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। রূপসা নদীর ওপর খানজাহান আলী সেতু নির্মাণের পূর্বে এখানে ফেরি চলাচল করত। আর তখন এই পন্টুন বসানো হয়েছিল। তারপর সুদীর্ঘকাল মেরামত না করায় এগুলো এখন সম্পূর্ণ ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রূপসা ব্রিজ শহর থেকে প্রায় দুই কি.মি. দক্ষিণে হওয়ায় শহরে বসবাসকারী যারা নদী পারাপার হয় তাদের এটি কাজে আসে না। ওটা দিয়ে শুধু দূরপাল্লার গাড়ি চলে। সুতরাং রূপসার উভয় তীরের মানুষের একমাত্র অবলম্বন নৌকা পারাপার। কিন্তু ঘাট মেরামত না করায়, তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হচ্ছে। মানুষের কাছ থেকে টোল আদায় করা হয়। নৌকার মাঝিরাও আলাদা টাকা নেয়। একবার পারাপারে একজনকে গুনতে হয় আট টাকা অথচ ঘাট কর্তৃপক্ষ মানুষের দুর্ভোগের ব্যাপারে উদাসীন। তারা পন্টুন মেরামত করে না, ঘাট উঁচু করে না। তাদের একমাত্র লক্ষ্য অর্থ উপার্জন। আমরা চাই কর্তৃপক্ষ জনদুর্ভোগ লাঘবে অতি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করুক। সন্তোষ দাস খুলনা জলমহালের নামে খাজনা নেয়া বন্ধ কেন? ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান হওয়ার পর থেকে পুরান ঢাকার সূত্রাপুর থানা ভূমি অফিসের মাধ্যমে এলাকার জমির খাজনা বা ভূমি রাজস্ব কর দেয়া হয়। বর্তমানে আকস্মিকভাবে সূত্রাপুর এলাকার এক বিরাট অংশকে জলমহাল দেখিয়ে এসিল্যান্ড কোতোয়ালি ও ভূমি অফিস সূত্রাপুর এলাকার জনগণের সঙ্গে বিড়ম্বনা সৃষ্টির মাধ্যমে বাড়ি ঘরের খাজনা নেয়া বন্ধ করে দিয়েছে। পাশাপাশি নামজারিসহ জমির যত রকমের প্রয়োজনীয় কাজকর্ম স্থগিত রেখেছেন। আবার বিরাট অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে গোপনীয়ভাবে খাজনা ও নামজারি করা হচ্ছে। বিপদে পড়েছে ওয়ারিশগণ আর ডেভেলপার কোম্পানিগুলো। বাবা বা মার মৃত্যুর পর ওয়ারিশগণ বাড়ি-ঘরের ভাগাভাগি বা নামজারি এবং খাজনা দিতে পারছে না। দীর্ঘ ২-৩ বছর হতে খাস বা জলমহালের নামে সরকার এ পুরান ঢাকার সূত্রাপুর অঞ্চলের জমির মালিকদের সঙ্গে ঘুষের প্রবণতার মাধ্যমে এক রকম প্রতারণা সৃষ্টি করছে। ৬৮ বছর ধরে পুরান ঢাকার জমির মালিকরা যে পদ্ধতিতে বাড়িঘরের খাজনা দিয়ে আসছে বর্তমানে একশ্রেণীর আমলাদের সিন্ডিকেটের কাছে সরকার নিজেই পরাজিত এবং প্রতারিত। সরকার কবে এবং কখন বিনা ঘুষে খাজনা নেয়া শুরু করবে তা কেউই বলতে পারছে না। এতে দুর্ভোগ ও চরম অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে এসিল্যান্ড অফিসের সঙ্গে এলাকাবাসীর। এ ধরনের জটিলতা আবহমানকাল ধরে চলবে তা অপ্রত্যাশিত এবং এ বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যাপারে ভূমি আপীল বোর্ড নীরব ও নির্বিকার। তবে এ ব্যাপারে এলাকার জনগণ সরকারের এহেন কার্যকলাপে ক্ষুব্ধ। শুধু সূত্রাপুর ভূমি অফিস নয়, দেশের সকল ভূমি অফিসে ভূমি সেবার নামে চলছে হয়রানি ও দুর্ভোগ। দুর্নীতির ব্যাপারে অফিসের সবাই এক এবং ঐক্যবদ্ধ। সম্প্রতি ভূমি সেবার নামে ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি টিআইবির প্রতিবেদনে পরিষ্কারভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ভূমি সেবার নামে দেশের এসিল্যান্ড ভূমি অফিসগুলো রেজিস্ট্রি এবং ভূমি সংক্রান্ত সব অফিসে যে হারে ঘুষ লেনদেন হয় মূলত ভূমি সেবার নামে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের পেছনে সুশাসনের অনুপস্থিত। এছাড়া ভূমি জরিপের নামে জরিপকর্মী বা ভূমি অফিসের লোকজন কর্তৃক জায়গা-জমির পরিমাণ কম দেখানো এবং খতিয়ানে ভুল তথ্য লেখার ভয় দেখিয়ে ভূমি, জমি বা বাড়ির মালিকদের কাছ থেকে হতে যে যেভাবে পারছে ঘুষ নিচ্ছে। টাকা-পয়সার বিনিময়ে খাস জমি, অর্পিত সম্পত্তি ও কোর্ট অব ওয়ার্ডেসের সম্পত্তি এমনকি রেলওয়ে ও বন বিভাগের সম্পত্তি দখলকারী ক্ষমতাবান ও প্রভাবশালীদের নামে রেকর্ড প্রস্তুতের অহরহ ঘটনা ঘটছে যা দেখার কেউ নেই। মাহবুবউদ্দিন চৌধুরী ফরিদাবাদ, ঢাকা ঁহবংপড়পষঁননফ@ুধযড়ড়.পড়স
×