জাবি সংবাদদাতা ॥ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীতে ভর্তির আবেদন ফরমের মূল্য বৃদ্ধি ও টাকা ভাগ-বাটোয়ারার প্রতিবাদ জানিয়েছে বেশ কয়েকটি ছাত্র সংগঠনের শিক্ষার্থীরা। কিন্তু এ বিষয়ে প্রশাসনের কোন ভ্রƒক্ষেপ নেই। প্রতিবছরই শিক্ষকরা নানান অজুহাতে বৃদ্ধি করছেন ভর্তি ফরমের মূল্য। ফলে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীকে মেধার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার আগে তাই অর্থনৈতিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়।
খরচ বৃদ্ধির কথা বলে রীতিমতো ফরম বাণিজ্যে নামেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা, এতে অধিক মূল্যে ফরম কিনতে বাধ্য হন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। আবার চড়া মূল্যে ফরম কিনতে না পেরে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন দরিদ্র শিক্ষার্থীরা।
বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের শিক্ষার্থীরা ভর্তি ফরমের বর্ধিত মূল্য কমানোর দাবি করে বলেন, এর আগে ২০১২ সালে ফরমের বর্ধিত মূল্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সময় স্পষ্ট করে দেখানো হয়েছিল যে প্রতিটি আবেদন ফরমের দাম ৩০ টাকা করে ধরলে ভর্তি পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অতিরিক্ত পারিশ্রমিক দেয়ার পরও টাকা বেচে যায়। তারা আরও উল্লেখ করেন, এ বছর গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদ (এ-ইউনিট), সমাজবিজ্ঞান অনুষদ (বি-ইউনিট), জীববিজ্ঞান অনুষদ (ডি-ইউনিট), বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ (ই-ইউনিট) এই ৫টি অনুষদে ভর্তি ফরমের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫২৫ টাকা, যা গত বছর ছিল ৫০০ টাকা। এছাড়া কলা ও মানবিকী অনুষদে (সি-ইউনিট) বিভাগভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রতি বিভাগে আবেদন ফরমের মূল্য ১৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৭৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, এতে এই অনুষদে পৃথকভাবে ৯ বিভাগে পরীক্ষা দিতে হলে একজন ভর্তিচ্ছুকে গুনতে হবে ১৫৭৫ টাকা, যা অযৌক্তিক। ভর্তি পরীক্ষার ফরমের এই মূল্য বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষার ফরমের মূল্য পরীক্ষা কমিটি নির্র্ধারণ করেছে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতিসহ সামগ্রিক দিক বিবেচনায় এই মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে।’ প্রতিবছর ভর্তি পরীক্ষা বাবদ কয়েক কোটি টাকা আয় করে বিশ্ববিদ্যালয়।
ভর্তি পরীক্ষা থেকে এই আয়ের একটি নির্দিষ্ট অংশ বিশ্ববিদ্যালয় কোষাগারে জমা দেয়ার নিয়ম থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবরই সেই নিয়মের তোয়াক্কা না করে নিজেদের মাঝে টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করে নেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতি শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষার ফরম বিক্রি বাবদ আদায়কৃত টাকা শিক্ষকদের মাঝে ভাগাভাগি করে নেয়ার এই চিত্র দীর্ঘদিনের। এ নিয়ে বারবার বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হলেও প্রশাসন বা শিক্ষকরা এ দিকে ভ্রƒক্ষেপ করেন না।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: