ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

লক্ষ্মীপুর-ভোলা-বরিশাল রুটে ফেরি সঙ্কট

ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় যাত্রা

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৫

ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় যাত্রা

নিজস্ব সংবাদদাতা, লক্ষ্মীপুর, ২০ সেপ্টেম্বর ॥ লক্ষ্মীপুর-ভোলা-বরিশাল রুটে ফেরি সঙ্কটে যানবাহন পারাপারসহ যাত্রী ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। আসন্ন ঈদ-উল-আযহা সামনে রেখে প্রিয়জনের কাছে পৌঁছাতে যাত্রীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছোট ছোট নৌকা ও ট্রলারযোগে প্রমত্তা মেঘনা পাড়ি জমাচ্ছে। ভোলার ইলিশা ফেরিঘাটটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর ঘাটটির স্থান পরিবর্তন করে গোদুড়িয়া যাওয়া ফেরি পারাপারে আট থেকে ১০ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। এতে রুটিনমাফিক ফেরি আবার লক্ষ্মীপুর মজুচৌধুরীহাট ফেরিঘাটে পৌঁছাতে পারছে না। সিডিউল ঠিক না থাকায় দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসা শত শত যাত্রীর এ ভোগান্তি আরো চরমে পৌঁছেছে। ভোর বেলায় ৫টা থেকে ছয়টার দিকে দু’টি ফেরি ছেড়ে যাওয়ার পর ফেরত আসে রাত একটা থেকে দেড়টার দিকে। এর পর রাতে ফেরি চলাচল থাকে বন্ধ। এতে হাতে গোনা কিছুসংখ্যক যান পারাপার করলেও যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী অসংখ্য যান পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে সদর উপজেলার মজুচৌধুরীহাট ফেরিঘাটে। উক্ত নৌরুটে দক্ষিণাঞ্চলসহ দেশের ২৩টি জেলার কম দূরত্বের কারণে এ রুটে যাতায়াত করছে। অপরদিকে এখান থেকে কোন প্রকার লঞ্চ না থাকায় যাত্রী ভোগান্তি বেড়ে যায়। এতে চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়িসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে যাত্রীবাহী বাস পারাপার না হওয়ায় যাত্রী ভোগান্তি চরমে পৌঁছে। নারী পুরুষ ও তাদের শিশু সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে নদী পারাপারের উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে প্রতিকূল আবহাওয়া উপেক্ষা করে ছোট ছোট নৌকা ও ট্রলারে প্রমত্তা মেঘনা পাড়ি দিয়ে ভোলা ও বরিশাল জেলাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ২৩টি জেলার লোক এ রুটে পাড়ি জমাচ্ছে। বর্তমান মেঘনার মোহনায় এ সময়ে ডেঞ্জার জোন বলে সরকার অনুমোদিত ব্যতীত যে কোন নৌযান চলাচলে সম্পূর্ণরূপে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এতে যে কোন বড় ধরনের দুর্ঘটনার সমূহ আশঙ্কা করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম থেকে আসা বরিশাল যাওয়ার যাত্রী নূর মোহাম্মদ বলেন, এক বছর পর দেশে যাচ্ছেন, কিছু না পেলে ঝুঁকি হলেও স্ত্রী-শিশু সন্তানকে নিয়ে মা-বাবার কাছে পৌঁছাতে হবে। এক বছরের শিশু সন্তান নিয়ে খাগড়াছড়ি থেকে আসা সুলতানা বলেন, জীবনের ঝুঁকি আছে, কিন্তু ফেরি লঞ্চ কিছুই না পেয়ে উপায় নেই। তাই যেভাবেই হোক ট্রলার বা নৌকা দিয়ে বরিশাল যেতে হবে। তাই কোন উপায় না পেয়ে নিরুপায় হয়ে অসহায় যাত্রী নৌপথে নৌকা এবং ট্রলারযোগে পাড়ি দিচ্ছে। এ সব নৌযানের কোন সরকারী অনুমোদন নেই। অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন এর লক্ষ্মীপর-ভোলা-বরিশাল ফেরি চলাচল, লক্ষ্মীপুর সদর মজুচৌধুরীহাট ফেরিঘাটের সহকারী ম্যানেজার মো. ফয়সাল বলেন, ফেরিঘাট স্থান পরিবর্তন হয়ে গেদুড়িয়া যাওয়ায় এ পারের ফেরি মজুচৌধুরী ফেরিঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়ার পর ঘাটে পৌঁছাতে আট থেকে ১০ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। অনুরূপভাবে সেখান থেকে লক্ষ্মীপুর ঘাটে পৌঁছাতে সমপরিমাণ সময় লেগে যায়। এতে নৌপথে যাতায়াতকারী যাত্রীদের কিছুটা ভোগান্তি হচ্ছে। একইভাবে আমরা যাত্রীবাহী বাসগুলো আগে পারাপারের চেষ্টা করি।
×