দেশের বাড়ি ভাই ও বোন
মা-ও আছে,
ঈদের আগে যাওয়া দরকার
তাদের কাছে-
হয় না জোগাড়, হয়নি
জোগাড় টাকা,
বস্তির ছেলে আমি-
শুয়ে আছি ঢাকা ।
ছোট ছোট ছেলে-মেয়ে
গরু দেখে খুশি,
খর-কুটো খেতে দেয়
খেতে দেয় ভুসি।
আমারও তো সখ ছিল
ঈদে গাঁয়ে যাবো,
মা’র রাঁধা কতো কিছু
ভাই বোনে খাবো।
ঈদ উপহার
স.ম. শামসুল আলম
এবার ঈদে গেঞ্জি টুপি জামা জুতো সব পেয়েছিÑ
তারপর কি চাইতে আরও পারি?
তবু আমার একটি জিনিস খুব প্রয়োজন
এমন একটি ঈদ উপহার চাইতে ভীষণ লজ্জা করে
মুখ লুকিয়ে চুপিচুপি দীর্ঘশ্বাস ছাড়ি।
মা এসে কন, ‘কী নিতে চাস বল না রে বাপ শুনি-’
মিষ্টি হেসে মায়ের কাছে বললাম :
কেমন করে বলব আমি
না-ই হলো মা তেমন দামি
মহামূল্যবান উপহার - আমার মাথার ছই।
‘আমার মনের আকাশ জুড়ে’, ‘স্বাধীন স্বাধীন স্বপ্নগুলো’
‘নতুন রঙে আঁকা’ এবং ‘আমার দেশের মনের সঙ্গে’Ñ
এমন কিছু মজার মজার বই।
আনন্দে মা হেসে ফোটায় খই
আমি কি আর আমার মধ্যে রই?
এবার ঈদে
আইরীন নিয়াজী মান্না
কততো নতুন জামা-জুতো
কিনবে তোমরা ঈদে,
ওই শিশুটার বাঁচার লড়াই
পেটে যে তার খিদে।
তোমারা দেখ নতুন জামার
নানা রকম বাহার
ওই শিশুটার জোটে না তো
একটুখানি আহার।
এবার ঈদে চলো সবাই
ওদের পাশে দাঁড়াই
ভালবাসার হাত দু’খানা
ওদের দিকে বাড়াই।
ঈদ হোক সবার
ফারহানা মোবিন
সবার জন্য ঈদের খুশী,
ঈদ মানে অনাবিল হাসি।
ঈদ মানে সুন্দর উপহার,
ঈদ হোক, ছোট বড় সবার।
ঈদ মানে মজার সব খাবার,
এই খাবার হোক ধনী গরিব সবার।
গরু ছাগলে হোক ঈদের খুশী,
গরিবদের যেন ভালোবাসি বেশি।
এই ভালোবাসা থাকুক অটুট,
ঈদের আনন্দ ফুল হয়ে ফুটুক।
উড়ে উড়ে
রিফাত নিগার শাপলা
ঈদের ছড়া মিষ্টি কড়া
করছে শুধু নড়াচড়া
সেই ছড়ারই একটি, দু’টি
হাসি-খুশির বাদলা জুটি।
রংবেরঙের আনন্দেতে
ফুল পাখিরাও উঠলো মেতে
উড়ে-উড়ে, ঘুরে ঘুরে
ছন্দ ছড়ায় বাতাসজুড়ে।
সুখের ছোঁয়া রাশি রাশি
কোরবানি হয় গরু-খাসি।
এসো সবাই দু’হাত বাড়াই
পথকলির পাশে দাঁড়াই।
খলিল মিয়ার কুরবানি
ফারুক নওয়াজ
রহিমের গরু ছোট্ট-খাট্টো, করিমের গরু বেঁটে
জলিলের গরু পাঁজর-বেরুনোÑ দানাই পড়েনি পেটে।
ঠোঁট বাঁকা করে মৃদু হাসি হেসে খলিল বলল, তবেÑ
সবচেয়ে দামি গরুতে আমার কুরবানি দিতে হবে।
এই বলে সে যে দলবল নিয়ে গাবতলী হাটে গেলো;
হাজার হাজার গরু দেখে তার মাথা হলো এলোমেলো।
কোনোটার কাছে গেলেই গুঁতোয়, কোনোটা বিশাল মোটা
কোনোটার শিঙে কাগজের মালা, কারো বা কপালে ফোঁটা।
কোনোটা বিকট গর্জন করে, কোনোটা ভীষণ তেজীÑ
তেজী গরুটার শরীরে মাংস হবেই পাঁচ শ’ কেজি।
এমন গরুই চাই খলিলের; দামাদামি করে শেষেÑ
গরু বিক্রেতার হাতে তুলে দেয় দেড় লাখ টাকা হেসে।
এতে বড়ো গরু? বাপরে বাপরে, গরুর গলায় মালাÑ
কতো দাম চাচা? শুনতে শুনতে কান হলো ঝালাপালা।
এতো বড়ো গরু? পাড়ায় পাড়ায় শোরগোল-মাতামাতি
গরুর গর্বে খলিল মিয়ার ফুললো বুকের ছাতি।
আজ কুরবানিÑ খলিল মিয়ার পায়ে মচমচে জুতোÑ
সেই জুতো পরে গরুর শিয়রে যেতেই মারলো গুঁতো।
গুঁতো খেয়ে তার জুতো গেলো উড়ে, ভুঁড়ি গেলো ফেটেফুটেÑ
বাঁচাও বাঁচাওÑ চিৎকারে তার পড়শিরা আসে ছুটে।
ঢাকা মেডিকেলে চ্যাংদোলা করে নিয়ে যায় তাকে লোকে;
বাড়ির মানুষ কেঁদে জারেজার খলিল মিয়ার শোকে।
তাই বলি ভাই কুরবানি মানে পশুকুরবানি নয়;
সবচে আগে মনের পশুকে কুরবানি দিতে হয়।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: