ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অপরাজিত সেঞ্চুরির পর বল হাতে ৫ উইকেট, দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ভারত ‘এ’ পরাজিত ৬৫ রানে, তিন ম্যাচের সিরিজে সমতা ১-১

নাসিরের নৈপুণ্যে সমতায় বাংলাদেশ ‘এ’

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫

নাসিরের নৈপুণ্যে সমতায় বাংলাদেশ ‘এ’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সময়মতোই ঘুরে দাঁড়িয়েছে ভারত সফরে থাকা বাংলাদেশ ‘এ’ দল। প্রথম ম্যাচে একেবারেই সুবিধা করতে পারেনি মুমিনুল হকের দল। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচেই পাল্টা জবাব দিয়েছে বাংলাদেশ ‘এ’। শুক্রবার ব্যাঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে স্বাগতিক ভারত ‘এ’ দলকে ৬৫ রানে হারিয়ে দিয়েছে। এর ফলে ৩ ম্যাচের সিরিজে এখন ১-১ সমতা। এ ম্যাচটি হারলেই সিরিজ হাতছাড়া হয়ে যেত। তাই জয় অপরিহার্য ছিল। দারুণ এ জয়ের পেছনে একমাত্র কারিগর ছিলেন নাসির হোসেন। তার অলরাউন্ডার নৈপুণ্যের সুবাদেই বড় ব্যবধানের এ জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ ‘এ’। ব্যাট হাতে ১০২ রানের হার না মানা একটি ইনিংস খেলার পর আবার বল হাতেও বিধ্বংসী ভূমিকা নেন নাসির। বাংলাদেশ ‘এ’ দলের করা ৮ উইকেটে ২৫২ রানের জবাবে নাসিরের ৩৬ রানে ৫ উইকেট শিকার স্বাগতিকদের গুটিয়ে দেয় ৪২.২ ওভারে ১৮৭ রানে। পেসার রুবেল হোসেনও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন, ৩৩ রানে নেন ৪ উইকেট। রবিবার একই ভেন্যুতে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে। প্রথম ম্যাচে মুমিনুলদের একাই ধসিয়ে দিয়েছিলেন অলরাউন্ডার গুরকিরাত সিং। অর্ধশতকের পাশাপাশি বল হাতে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। কিন্তু দ্বিতীয় ওয়ানডেতে তাকে কোন পাত্তাই দেননি বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানরা। যদিও টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটায় কোন উন্নতি দেখা যায়নি। প্রথম ম্যাচের মতোই বিপর্যয়ের শুরু প্রথম থেকেই। প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে ওপেনার রনি তালুকদার সাজঘরে ফিরে যান শূন্য রানে। অবশ্য এর আরেক ওপেনার সৌম্য সরকার বেশ ভালভাবেই এগিয়ে নিচ্ছিলেন দলকে এনামুল হক বিজয়কে সঙ্গে নিয়ে। সৌম্য স্বভাবসুলভ আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে থাকলেও এনামুল ছিলেন বেশ ধীরস্থির। দু’জন ৬০ রানের জুটি গড়ে দলকে প্রাথমিক বিপর্যয় থেকে বাঁচান। কিন্তু দ্রুতই ফিরে যান সৌম্য (২৪)। মাত্র ২২ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ ‘এ’ দল। প্রথম ম্যাচের পর এদিনও ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন অধিনায়ক মুমিনুল (৩) ও সাব্বির রহমান রুম্মান (১)। ভাল খেলতে থাকা এনামুলও ৫৩ বলে ৩৪ রান করে সাজঘরে ফিরে যান। লিটন দাস দারুণ খেলছিলেন। ষষ্ঠ উইকেটে লিটন-নাসির হাল ধরেন। দু’জনে ৭০ রানের জুটি গড়ে দলকে বিপর্যয় থেকে বাঁচান। তবে লিটন ৫৭ বলে ৬ চারে ৪৫ রান করে আউট হয়ে যাওয়ার পর একাই লড়েছেন নাসির। ঋষি ধাওয়ান ও করণ শর্মা যে ধস নামিয়েছিলেন তা ঠেকিয়ে দেন তিনি। দ্রুতগতিতে ব্যাট চালিয়ে দলকে একটি সম্মানজনক অবস্থানে পৌঁছে দেন। আর কেউ সেভাবে সঙ্গ দিতে না পারলেও শতক আদায় করেন নাসির। তিনি মাত্র ৯৬ বলে ১২ চার ও ১ ছক্কায় ১০২ রান করে অপরাজিত থাকেন। আরাফাত সানির সঙ্গে সপ্তম উইকেটে ৫০ ও রুবেলের সঙ্গে নবম উইকেটে ৪০ রান যোগ করেন তিনি। সানি ও রুবেল উইকেট আঁকড়ে থাকলেও স্বাগতিক বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে খেলেছেন নাসির। ৮ উইকেটে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৫২ রানের ফাইটিং স্কোর পায় বাংলাদেশ ‘এ’। শুরুটা দারুণ হয়েছিল জবাব দিতে নামা ভারত ‘এ’ দলের। ওপেনার ও অধিনায়ক উন্মুক্ত চাঁদের অর্ধশতকে ১ উইকেটে হারিয়ে ১১৯ রান তুলে ফেলেছিল স্বাগতিকরা। তবে নাসির আক্রমণে আসার পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়। তার অফস্পিনে একের পর এক উইকেট খোয়াতে থাকে ভারত ‘এ’। ৫৬ রান করা চাঁদকে ফিরিয়ে দিয়ে ধসের সূত্রপাত করেন তিনি। জাতীয় দলের মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান সুরেশ রায়না আবারও ব্যর্থ হন ১৭ রানে সাজঘরে ফিরে। নাসিরের সঙ্গে রুবেলও জ্বলে ওঠেন। এ দু’জনের ভয়ঙ্কর বোলিংয়ে মাত্র ৬৮ রানে বাকি ৯ উইকেট হারায় ভারত ‘এ’ দল। কিছুটা সময় লড়াই করতে পেরেছেন গুরকিরাত। তিনি একপ্রান্ত আগলে ৩০ বলে ৩৪ রান করার পর ফিরে যান পেসার আলআমিনের বলে বোল্ড হয়ে। এরপরই জিতে যায় বাংলাদেশ ‘এ’ দল। ৭ ওভার ৪ বল বাকি থাকতেই ১৮৭ রানেই থেমে যায় তাদের ইনিংস। স্কোরকার্ড ॥ বাংলাদেশ ‘এ’ ইনিংস- ২৫২/৮; ৫০ ওভার (রনি ০, সৌম্য ২৪, এনামুল ৩৪, মুমিনুল ৩, লিটন ৪৫, সাব্বির ১, নাসির ১০২*, আরাফাত ১৭, শফিউল ৪, রুবেল ৯*; ঋষি ৩/৪৪, করণ ২/৪৪, রায়না ১/২১, কালারিয়া ১/৩৫)। ভারত ‘এ’ ইনিংস- ১৮৭/১০; ৪২.২ ওভার (আগারওয়াল ২৪, চাঁদ ৫৬, পা-ে ৩৬, রায়না ১৭, নায়ার ৪, গুরকিরাত ৩৪, স্যামসন ০, ঋষি ০, করণ ২, কালারিয়া ৫, শ্রীনাথ ০*; নাসির ৫/৩৬, রুবেল ৪/৩৩, আলআমিন ১/৩৫)। ফল ॥ বাংলাদেশ ‘এ’ দল ৬৫ রানে জয়ী। সিরিজ ॥ তিন ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতা।
×