ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এক শিক্ষানুরাগীর কথা

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫

এক শিক্ষানুরাগীর কথা

স্টাফ রিপোর্টার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ কুতুবুদ্দিন আহম্মেদ। জ্ঞানী, গুণী, শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবক। তাকে দানবীর বললেও অত্যুক্তি হবে না। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসার পাশাপাশি গ্রাস করা দারিদ্র্যকে হটিয়ে ছুটে যান কুতুবুদ্দিন আহম্মেদ, সঙ্গে স্ত্রী শামিমা আহম্মেদ। তিনি কোন মনীষী কিংবা দার্শনিক নন। অতি সাধারণ একজন মানুষ। তবে তিনি আছেন সর্বদা গরিব অসহায়, দুস্থ, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পাশে। একেবারে নিঃস্বার্থ এই মহান ব্যক্তির সহযোগিতায় একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বহুমুখী উন্নয়ন হয়েছে। গরিব শিক্ষার্থীদের প্রদান করে থাকেন বই, খাতা, স্কুলের পোশাক ও স্কুল ব্যাগ। মেধাবীদের লেখাপড়ার যাবতীয় খরচ বহন উচ্চশিক্ষায় সহযোগিতা দিতে গরিব মেধাবীদের দিয়েছেন মাসিক বরাদ্দ। পাশাপাশি কোন মেধাবী শিক্ষার্থী অসুস্থ হলে কিংবা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের প্রয়োজন পড়লে, এমনকি বিদেশে যেতে হলেও তাদের সব খরচ বহন করা কর্তব্যের মধ্যে রেখেছেন তিনি। সব মিলিয়ে অর্ধ শতাধিক মেধাবী শিক্ষার্থী নিয়মিত শিক্ষা খরচ ও চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে। সেই সঙ্গে উন্নয়ন করেছেন শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের। সাধারণ মানুষের মৌলিক চাহিদার অন্যতম বাসস্থান। যাদের বাড়িঘর নেই কিংবা ভাসমান অবস্থার মধ্যে রয়েছেন তাদেরও তিনি বাড়িঘর করে দেন। কোথাও প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে তিনি গিয়ে হাজিন হন। সিডরে ক্ষতিগ্রস্তদেরও বাড়িঘর করে দিয়েছেন। বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যাপারেও রয়েছে তার বড় ধরনের অবদান। বিভিন্ন এলাকাতে টিউবওয়েল বসিয়ে গরিব মানুষের বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করে কুতুবুদ্দিন আহম্মেদ স্থাপন করেছেন মানব সেবার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। পাশাপাশি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান করেছেন একাধিক। গরিব অসহায় মানুষের জন্য প্রায় প্রতি বছর সহস্রাধিক পরিবারের সদস্যদের নানা ধরনের বস্ত্র বিতরণ করেন। কিছু এলাকা বেছে নিয়ে তিনি স্বল্প আয়ের লোকদের অন্নসংস্থান করছেন। সম্প্রতি তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের পলশা হাইস্কুলের উন্নয়নে ব্যয় করেছেন প্রায় ২০ লাখ টাকা। তিনি বানিয়ে দিয়েছেন বিশাল ভবন। এখানে এক সঙ্গে শতাধিক ছাত্রী বিনোদন করতে পারবে এমন শেডও নির্মাণ করেছেন। সঙ্গে একাধিক ক্লাস রুম। এখানে আধুনিক সংযুক্ত বাথ ল্যাট্রিন করেছেন। সঙ্গে মাথার ওপর ঘুরছে ৫০-এর অধিক ফ্যান। ছাত্রদের জন্য বানিয়েছেন শেডওয়ালা বিশাল সাইকেল গ্যারেজ। একই সঙ্গে সহস্রাধিক সাইকেল রাখা যাবে। আনুষ্ঠানিকভাবে বৃহস্পতিবার পলশা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসব নতুন ভবনের উদ্বোধন করেন প্রয়াত শিক্ষার্থী সোহেলের মা আয়েশা বেগম ও রুকাইয়া খাতুনের মা নাসরিন। এই দুই মেধাবী শিক্ষার্থী ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে তাদের চিকিৎসায় ৩০ লক্ষাধিক টাকা ব্যয় করেন কুতুবুদ্দিন আহম্মেদ। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। সেসব প্রয়াত মেধাবীর নামে নামকরণ করা হয়েছে নতুন ভবন ও সাইকেল শেডের এবং তাদের মাকে দিয়ে উদ্বোধন করেন নতুন ভবনের। এই মহানদানবীরের বাড়ি খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলার প্রায়গ্রাম কসবাতে। বর্তমানে তিনি ওভারসিস মার্কেটিং কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক। দীর্ঘদিন তিনি অস্ট্রেলিয়াতে কাটিয়েছেন। এখন তিনি ব্যবসা আর মানবসেবা প্রধান ধর্ম ও কর্তব্য হিসেবে বেছে নিয়েছেন।
×