ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

কোরবানির পশু সঙ্কট নেই

মিয়ানমার থেকে আমদানি হয়ে আসছে প্রচুর গরু

প্রকাশিত: ০৬:০১, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫

মিয়ানমার থেকে আমদানি হয়ে আসছে প্রচুর গরু

এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার ॥ আসন্ন ঈদ-উল-আযহাকে সামনে রেখে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ করিডোর দিয়ে মিয়ানমার থেকে প্রচুর গবাদি পশু আসছে দেশে। মুনাফার আশায় কোরবানির শুরুর দিকের বাজার ধরে রাখতে টেকনাফের গরু ব্যবসায়িরা প্রত্যেহ শত শত গরু বোঝাই বোট নিয়ে আসছে মিয়ানমার থেকে। এতে সরকার কয়েক লাখ টাকা হারে রাজস্ব আয় করছে প্রতিদিন। সরকারের সহায়তায় আমদানিকারকগণ যে হারে মিয়ানমার থেকে গরু আমদানি করছেন-এতে এবারে কোরবানিতে গবাদি পশুর সঙ্কট হবে না বলে জানিয়েছেন টেকনাফের গরু ব্যবসায়ীরা। তাঁদের মতে বর্তমানে শাহপরীর দ্বীপ করিডোর দিয়ে আসা গরু কক্সবাজার জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে কোরবানি দাতাগণের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রচুর গরু সরবরাহ করা সম্ভব হবে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে মিয়ানমার থেকে অন্তত আরও ৪০ হাজার গরু-মহিষ আমদানি হয়ে দেশে আনার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে। টেকনাফের গরু ব্যবসায়ী আবু সৈয়দ জানান, মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পশু শুধু কক্সবাজার জেলাতে নয়- চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রেরণ করা হচ্ছে। ট্রাক বোঝাই করে টেকনাফ থেকে বিভিন্ন জেলায় নিয়ে যাচ্ছে ব্যবসায়ীরা। এছাড়াও টেকনাফ, সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপ, উখিয়া, চকরিয়া, মহেশখালী, পেকুয়া, রামু ও কুতুবদিয়ায় গৃহস্থলী ব্যক্তিদের কাছে প্রচুর সংখ্যক গবাদি পশু বিক্রির অপেক্ষায় মজুদ রয়েছে। তারাও আস্তে আস্তে ওইসব গৃহপালিত পশু বাজারে নিয়ে আসছে। কক্সবাজার জেলার কিছু কিছু এলাকায় কয়েকদিন আগে থেকে গরুর হাটে গবাদি পশু বিকিকিনি শুরু হয়ে গেছে। গরু ক্রেতাদের জানান দিতে ইজারাদারের পক্ষে মাইকিংও চলছে। কোরবানি দিতে আগ্রহী ক্রেতাদের অনেকে গরুর হাটে গিয়ে দেখছেন। অনেকে কিনেও নিয়ে যাচ্ছে সুন্দর মোটা-তাজা গরু। বুধবার বিকেলে কয়েকটি বাজার পরিদর্শন করে দেখা গেছে, ঈদ-উল-আযহাকে সামনে রেখে এবার ক্রেতা সমাগম যেমন বেশি, গবাদি পশু বিক্রেতার সংখ্যাও কম নয়। মিয়ানমার থেকে আমদানিকৃত গরু স্থানীয় ব্যবসায়ীরা কিনে এনে ভরে রেখেছে অধিকাংশ বাজার। গত এক সপ্তাহে মিয়ানমার থেকে প্রায় সাড়ে চার হাজার গরু আমদানি হয়ে এনেছেন ব্যবসায়ীরা। জেলার প্রায় গরু বাজারে মিয়ানমারের গরু চোখে পড়ার মতো দৃশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। দাম কম ও দেখতে সুন্দর হওয়ায় মিয়ানমারের গরুর চাহিদা বেড়ে গেছে। পেশাদারী গরু ব্যবসায়ীরা জানায়, মিয়ানমার থেকে গরু আমদানি কম হলে গরুর মূল্য আকাশ চুম্বি হয়ে পড়ত। কিন্তু প্রতিদিন শত শত গরুর চালান আমদানি হয়ে আসায় বাজারে গরুর দাম নিয়ন্ত্রণে মিয়ানমারের গবাদি পশু ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। অন্য বছরের তুলনায় এবারে মিয়ানমার থেকে গবাদি পশু আমদানি বেড়েছে। এসব পশু মোটা এবং তাজাও বেশি। তবে কয়েকদিনের মধ্যে পশুর দাম তুলনামূলকভাবে কম হবে বলে জানিয়েছেন তারা। একজন কসাই জানান, গরু ক্রেতারা আস্তা গরু কত মণ হবে ধারণায় বর্তমানে প্রতি মণ ১৬ হাজার টাকা হারে এক একটি গরু কিনে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, মিয়ানমার থেকে গরু আমদানি এভাবে অব্যাহত থাকলে এক সপ্তাহের মধ্যে ওইসব গরু ১৪ হাজার টাকায় মণ হিসেবে বিকিকিনি হতে পারে। অর্থাৎ একটি পাঁচ মণ ওজনের গরু ৭০ হাজার টাকায় পাওয়া যেতে পারে। বাজারে দেখা গেছে, সাইজে বড় গরুর দাম তুলনামূলকভাবে কম। তবে মাঝারি সাইজের গরুর দাম একটু বেশি। মিয়ানমারের পাঁচ মণ ওজনের একটি গরুর মূল্য ৭৫-৮০ হাজার টাকা। আর একই ওজনের দেশীয় গরুর দাম হাঁকা হচ্ছে ১ লাখ টাকারও বেশি। কোরবানি উপলক্ষে মিয়ানমার থেকে আমদানিকৃত গবাদি পশু চালানের মধ্যে গরুর পাশাপাশি মহিষও রয়েছে। তবে গরুর সংখ্যা বেশি।
×