ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বিদেশে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে দু’বোনকে গণধর্ষণ ॥ ভারতের পতিতালয়ে বিক্রি

প্রকাশিত: ০৭:৪৫, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫

বিদেশে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে দু’বোনকে গণধর্ষণ ॥ ভারতের পতিতালয়ে বিক্রি

নিজস্ব সংবাদদাতা, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, ১৫ সেপ্টেম্বর ॥ জেলার আড়াইহাজারে বিদেশে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে দুই বোনকে গণধর্ষণ শেষে ভারতের পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার দেড় মাস পর স্থানীয় এক লোকের সহায়তায় কৌশলে দেশে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে এক বোন। অপর বোন পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে এখনও ভারতের কারাগারে আটক রয়েছে। পুলিশ এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানিয়েছে, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ভারতের পতিতালয় থেকে ফেরত আসা আড়াইহাজার উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের গহরদী মুল্লুকসাদী গ্রামের দরিদ্র কৃষকের মেয়ে তরুণী সাংবাদিকদের জানান, দেড় মাস আগে তাদের দুই বোনকে পার্শ¦বর্তী শালমদী গ্রামের মানবপাচারকারী রশিদ ও তার বোন আবেদা ইন্দোনেশিয়ায় ভাল বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখায়। গত জুলাই মাসের ২২ তারিখ সন্ধ্যায় রশিদ তাদের দুই বোনকে খবর দেয়, যে লোকের মাধ্যমে তাদের বিদেশে নিয়ে যাবে সে তাদের বাড়িতে এসেছে, তাদের সঙ্গে কথা বলতে চায়। এই খবরে ছোটবোন রাত ১০টার দিকে রশিদের বাড়িতে গেলে তাকে ঘরের দরজা বন্ধ করে রশিদ ও ঢাকা থেকে আগত ব্যক্তি পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ঘটনাটি কাউকে জানালে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। পরে তাদের দুই বোনকে বিনা পয়সায় ইন্দোনেশিয়া পাঠানোর আশ্বাস দেয়। গত ২৮ জুলাই মানবপাচারকারী ইন্দোনেশিয়া যাওয়ার কাগজপত্র তৈরি করার কথা বলে তাদের দুই বোনকে ঢাকার একটি বাসায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে ইমরান নামে এক লোক রাতে বাসে করে সাতক্ষীরা সীমান্তে নিয়ে দুই দিন একটি বাড়িতে আটক করে ইমরানসহ তিনজন মিলে তাদের দুইবোনকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ওই দিন রাতে ইমরান বাবলু নামে অপর একটি লোকের কাছে তাদের দুইবোনকে তুলে দেয়। বাবলু সীমান্ত পার করে তাদের দুইবোনকে একটি বাড়িতে নিয়ে চার দিন আটক রাখে। সেখানেও তাদের দুইবোন বাবলুসহ ৩ জন যুবকের দ্বারা গণধর্ষণের শিকার হয়। সেখান থেকে বাবলু রকি নামে এক যুবকের হাতে তাদের দুই বোনকে তুলে দেয়। ওই স্থান থেকে রকি তাদের ট্রেন যোগে ভারতের মুম্বাই নিয়ে যায় এবং তাদের একটি পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয়। সেই পতিতালয়ে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাদের দুইবোনের উপর চলতে থাকে অমানুষিক পাশবিক অত্যাচার। গত ১১ আগস্ট মুম্বাই পুলিশের একটি দল ওই পতিতালয়ে হানা দিয়ে বড়বোনকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে পুলিশ ছোট বোনকে খুঁজতে থাকলে সেখানের এক লোকের মাধ্যমে পালিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে গত ৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে আসতে সক্ষম হয় ছোট বোন। পরে বিভিন্ন লোকের সহযোগিতায় অসুস্থ অবস্থায় মেয়েটি তার বাড়িতে আসতে সক্ষম হয়। সুস্থ হওয়ার পর ছোটবোন গত ১৪ সেপ্টেম্বর বাদী হয়ে আড়াইহাজার থানায় আদমপাচারকারী রশিদ ও তার বোন আবেদার বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও আদমপাচারের অভিযোগ দায়ের করেন। এ ব্যাপারে আড়াইহাজার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ আরিফুর রহমান অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে জানান, ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
×