ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পশুরহাটে বুথ নয়, খোলা থাকবে ব্যাংকের শাখা

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫

পশুরহাটে বুথ নয়, খোলা থাকবে ব্যাংকের শাখা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পশু ব্যবসায়ীদের লেনদেনকৃত অর্থ নিরাপদ করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর দফতর অনুরোধ জানিয়েছিল গরুহাটে বুথ স্থাপনের। তবে বিভিন্ন ব্যাংকের বুথ স্থাপনের পরিবর্তে গরুর হাটগুলোর পাশের সকল ব্যাংকের শাখাগুলোকে লেনদেন সময় বাড়িয়ে খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা ও প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি গবর্নর নাজনীন সুলতানা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর নাজনীন সুলতানা বলেন, কোরবানির পশুর হাটসমূহের ব্যাংকের বুথ স্থাপনের মাধ্যমে পশু ব্যবসায়ীদের লেনদেনকৃত অর্থ নিরাপদ করার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সদর দফতরের অনুরোধের প্রেক্ষিতে হাটে আলাদাভাবে ব্যাংকিং বুথ স্থাপন না করে ঈদ-উল-আযহার পূর্বের তিন দিন (সাপ্তাহিক ও সরকারী ছুটির দিনসহ) হাটের নিকটবর্তী সকল শাখায় ব্যাংকিং লেনদেনের সময়সীমা বৃদ্ধি করে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু রাখার জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ সময় তিনি সারাদেশে কোরবানির পশুরহাটগুলোতে ব্যবহারের জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহকে (ডিএমপি, বিজিবি ও র‌্যাব) তাদের চাহিদার প্রেক্ষিতে মোট ৪৫০টি জালনোট শনাক্তকারী মেশিন সরবরাহ করা হয়েছে বলেও জানান। নাজনীন সুলতানা বলেন, সারাদেশে ৪৫০টি জালনোট শনাক্তকারী মেশিন দেয়া হচ্ছে। যার মধ্যে ১৭০টি ঢাকা অঞ্চলের জন্য এবং বাকি ২৮০টি ঢাকার বাইরের জন্য। আর দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যাংকগুলো তাদের নিজ খরচে মেশিন সংগ্রহ করে হাটে ব্যবহার করবেন। পশুরহাটে মোট ৩৯টি ব্যাংক জালটাকা রোধে কাজ করবে। তাদের পাশাপাশি সারাদেশে পশুরহাটগুলোতে জাল নোট চক্রের অপতৎপরতা রোধে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবিসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার কার্যক্রম জোরদার করার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা সংশ্লিষ্টদের প্রদানের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানান ডেপুটি গবর্নর। তিনি বলেন, জাল নোট প্রতিরোধে দেশের সব টিভি চ্যানেলে প্রাইম টাইমে আসল নোট চেনার উপায় সংবলিত ভিডিওচিত্র প্রচারে তথ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউব এবং টুইটারেও আসল নোটের ভিডিওচিত্র শেয়ার করতে কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অনুরোধ ছিল পশুরহাটে ব্যাংকের বুথ স্থাপন করার। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক সে ধরনের কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি। তার প্রেক্ষিতে পশুরহাটের নিকটবর্তী শাখা খোলা রেখে ব্যাংকগুলোকে গরুর হাটের নিকটবর্তী শাখা খোলার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান নাজনীন সুলতানা। একই অনুষ্ঠানে শুভঙ্কর সাহা ঘোষণা দেন নতুন টাকার। তিনি বলেন, মানুষের চাহিদার বিপরীতে বরাবরের মতোই এবারও নতুন টাকা বাজারে ছাড়ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এবার প্রস্তুতি মোতাবেক ২৫ হাজার কোটি টাকা বাজারে নতুন টাকা ছাড়তে পাড়বে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। শুভঙ্কর সাহা জানান, কোন একটি বিশেষ নোটের চাহিদা অস্বাভাবিক বেড়ে না গেলে আমাদের যে ২৫ হাজার কোটি টাকার প্রস্তুতি রয়েছে তাতে কোন সঙ্কট হবে না। কারণ গত বছর আমরা কোরবানির আগে বাজারে ছেড়েছিলাম ১৬ হাজার কোটি টাকা। ২৫ হাজার কোটি টাকার মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সকল অফিসের নতুন নোটের স্থিতি ১০ হাজার কোটি, এসপিসিবিএলের স্থিতি ৭ হাজার কোটি ও নতুন মুদ্রণ হবে ৮ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ মোট মজুদের পরিমাণ ২৫ হাজার কোটি টাকা। এবারে টাকা তুলতে হবে আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে উল্লেখ করে তিনি বলেন, একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ বিভিন্ন নোটের ৩ হাজার ৭শ’ টাকা নিতে পারবে। এর মধ্যে থাকবে ২০, ১০, ৫ ও ২ টাকার একটি করে বান্ডিল। তবে আমরা এবার টাকা দেয়ার যে পরীক্ষামূলক ব্যবস্থা হাতে নিয়েছি তাতে করে সপ্তাহে একবারের বেশি কেউ টাকা নিতে পারবে না। এটা আমরা গ্রাহকের আঙ্গুলের ছাপ থেকে বুঝে নিতে পারবো। বাংলাদেশ ব্যাংকের সকল শাখা ও বেসরকারী ২০ ব্যাংকের মাধ্যমে এ টাকা প্রদান করা হবে বলেও জানান তিনি। আগমীকাল বৃহস্পতিবার থেকেই এ টাকা প্রদান করা হবে বলেও জানান তিনি। এ সময় সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কারেন্সি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক হাবিবুর রহমানসহ বিভাগটির অন্য কর্মকর্তারা।
×