ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পারলেন না ফেদেরার

জোকোভিচের শিরোপা

প্রকাশিত: ০৬:১০, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫

জোকোভিচের শিরোপা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ তীরে এসে আরও একবার তরী ডুবালেন রজার ফেদেরার। তিন বছর পর প্রথমবারের মতো শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখালেও শেষ পর্যন্ত ফাইনালেই হেরে গেলেন সুইজারল্যান্ডের এই জীবন্ত কিংবদন্তি। রবিবার ইউএস ওপেনের ফাইনালে রজার ফেদেরারকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করলেন নোভাক জোকোভিচ। ফাইনালের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে টুর্নামেন্টের শীর্ষ বাছাই জোকোভিচ ৬-৪, ৫-৭, ৬-৪ এবং ৬-৪ সেটে রজার ফেদেরারকে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা জয়ের আনন্দে মাতেন। এই আনন্দ-উৎসব থামার নয়। তাই ম্যাচ শেষেই ভক্তদের সঙ্গে মিশে গেলেন নোভাক জোকোভিচ। নিরাপত্তার নিয়ম ভঙ্গ করে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন। মাতলেন বাঁধনহারা আনন্দ-উল্লাসে। আর তখন শূন্য দৃষ্টি সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে সতেরো গ্র্যান্ডসøাম জয়ী ফেদেরার। কারণ, টেনিসের রাজা রজার ফেদেরারকে মাটিতে নামিয়ে ক্যারিয়ারে আরও একটি কঠিন লড়াইয়ের পর সার্বিয়ান জোকোভিচ নিজ অর্জনের মুকুটে যোগ করলেন নতুন একটি পালক। ১৭ গ্রান্ডসøাম জয়ী ফেদেরারকে হারিয়ে নিজের ক্যারিয়ারের দশম গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্ট জিতলেন জোকোভিচ। সেই সঙ্গে বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ তারকা ইউএস ওপেনের দ্বিতীয় শিরোপা নিজের শোকেসে তুলেন। আর এই বছরেরই তৃতীয় গ্র্যান্ডসøাম শিরোপা হাতে তুললেন জোকোভিচ। সার্বিয়ার এই শীর্ষ বাছাই শুধু চলতি মৌসুমের ফ্রেঞ্চ ওপেনের শিরোপা জিততে পারেননি। এছাড়া বছরের প্রথম গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্ট অস্ট্রেলিয়ান ওপেন, গত মাসে উইম্বল্ডন এবং রবিবার ইউএস ওপেন জিতে তৃতীয় মেজর শিরোপা জয়ের রেকর্ড গড়েন। এর আগে ২০১১ সালেও এই তিন ইভেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছিলেন তিনি। নোভাক জোকোভিচের ক্যারিয়ারে এটি দশম গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্ট জয়। টেনিসের উন্মুক্ত যুগে তার চেয়ে বেশি গ্র্যান্ডসøাম জয়ের স্বাদ পেয়েছেন মাত্র ছয়জন। ১৭ গ্র্যান্ডসøাম জিতে রজার ফেদেরার আছেন সবার উপরে। ১৪টি করে গ্র্যান্ডসøাম জয়ের তালিকায় আছেন রাফায়েল নাদাল ও পিট সাম্প্রাস। রয় এমারসনের সংখ্যাটা ১২। এছাড়া রোড লাভের, বিয়ন বর্গ দুজনেই ১১টি করে মেজর শিরোপা জয়ের স্বাদ পেয়েছেন। জোকোভিচের সামনে এখন তাদেরকেই ছুঁয়ে ফেলা কিংবা ছাড়িয়ে যাওয়ার হাতছানি। পারবেন কী সার্বিয়ান এই টেনিস তারকা? এ বিষয়ে ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনেই নিজের অনুভূতির কথা জানান বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নাম্বার এই তারকা। তার মতে, ‘আমি এখন দুই সংখ্যাফ পৌঁছেছি। এলিট গ্রুপে ঢুকে নিজেকে খুব সম্মানিত বোধ করছি। প্রকৃতপক্ষে তাদের মতো কিংবদন্তিদের গ্রুপে যাওয়াটা আসলেই বিশেষ কিছু।’ এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আমার বর্তমান বয়স ২৮। আমি সবসময়ই নিজের শরীর ও মনের যতœ নেই। আমি এ রকমভাবেই জীবন-যাপন করব। আশা করি এমনভাবে জীবনযাত্রা চালিয়ে যেতে পারলে টেনিসের ক্যারিয়ারটাও দীর্ঘায়িত করতে পারব। এর ফলে এমন শিরোপা লড়াইয়ের জন্য আরও অনেক বছর সময় এবং সুযোগ পাব।’ ২০১১ সালে একই বছরে তিন গ্র্যান্ডসøাম জিতেছিলেন জোকোভিচ। চলতি মৌসুমেও সেই একই চিত্রনাট্য। তবে এটা খুব কষ্টের বলে মন্তব্য করেছেন সার্বিয়ান তারকা, ‘একই কাজ পুনরায় করাটা অনেক কঠিন কাজ।’ এর কারণটাও জানালেন তিনি, ‘আমি এখন ভিন্ন একজন মানুষ। ২০১১ সালে যেমনটি ছিলাম এখন আর তেমন নেই। স্বামী এবং বাবা হিসেবে আমার জীবনটা এখন অনেক বৈচিত্র্যময়। এখন আমি অনেক পরিপূর্ণ। ২০১১ সালের চেয়ে এখন নিজেকে অনেক পরিপূর্ণ বলে মনে করি আমি।’ আরও একবার হতাশা নিয়ে ফাইনালের মঞ্চ থেকে বিদায় নিলেন রজার ফেদেরার। নিউইয়র্কের আর্থার এ্যাশ স্টেডিয়ামে প্রায় তিন বছর পর কোন গ্র্যান্ডসøাম জেতার স্বপ্ন নিয়ে কোর্টে নেমেছিলেন সুইজারল্যান্ডের এই টেনিস তারকার। তবে, এ বছর দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সার্বিয়ার জোকোভিচও প্রস্তুত ছিল ফেড এক্সপ্রেসক চ্যালেঞ্জ জানাতে। কেননা, হার্ড কোর্টে দু’জনের মুখোমুখি জয়ের পরিসংখ্যানে এগিয়ে ছিলে নোভাক জোকোভিচ। শেষ পর্যন্ত সেটাই হলো। উইম্বল্ডনের পর ইউএস ওপেনেও রজার ফেদেরারকে লজ্জা দিলেন সুইস তারকা। ২০১২ সালে শেষবারের মতো কোন গ্র্যান্ডসøাম জিতেছিলেন তিনি। এরপর গত তিন মৌসুম একেবারেই নিষ্প্রভ। একটিও মেজর শিরোপা নিজের করে নিতে পারেননি টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের বর্তমান দুই নাম্বার তারকা রজার ফেদেরার।
×