ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দেশে প্রতিবছর দেড় লাখ মানুষ ক্যান্সারে মারা যায়

প্রকাশিত: ০৬:০৮, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫

দেশে প্রতিবছর দেড় লাখ মানুষ ক্যান্সারে মারা যায়

সংসদ রিপোর্টার ॥ প্রতিবছর দেশে দেড় লাখ মানুষ ক্যান্সারে মারা যাচ্ছে। বর্তমানে দেশে ১২ লাখ ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী রয়েছে। আর প্রতিবছর দুই লাখ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এই অবস্থায় ক্যান্সারসহ সকল অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন গঠনের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন সংসদ সদস্যরা। সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনের আইপিডি সম্মেলন কক্ষে এক মতবিনিময় সভায় সংসদ সদস্যরা এ মত প্রকাশ করেন। ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ, অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠায় করণীয়’ শীর্ষক এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট ও প্রটেক্ট জার্নালিস্ট। ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী মুক্তির সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া। আলোচনায় অংশ নেন হুইপ মোঃ শাহাব উদ্দিন, সংসদ সদস্য ডাঃ রুস্তম আলী ফরাজী, ইসরাফিল আলম, কবি কাজী রোজী ও উম্মে রাজিয়া কাজল, ন্যাশনাল এন্টি টিউবায়কুলোসিস এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নাটাব) সিনিয়র সহ-সভাপতি মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু, প্রটেক্ট জার্নালিস্ট-এর নির্বাহী পরিচালক নিখিল ভদ্র, ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের ন্যাশনাল এ্যাডভোকেসি অফিসার অনন্যা রহমান। সভায় গবেষণা প্রতিবেদন উত্থাপন করেন আন্তর্জাতিক সংস্থা দ্য ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক সৈয়দ মাহবুবুল আলম। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ফজলে রাব্বি মিয়া বলেন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ এদেশের কৃষি জমি নষ্ট করে মরণ ব্যাধির উপকরণ তামাক চাষকে উৎসাহিত করা হয়, যা দেশের বিকাশমান অর্থনীতিকে পঙ্গু করার ষড়যন্ত্রের অংশ। আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দিয়ে একটি মহল এই কাজটি করছে। যাদের বিরুদ্ধে সরকারী পদক্ষেপের পাশাপাশি জনমত গড়ে তোলা প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য সেবাকে জনগণের দরোজায় পৌঁছে দেয়ার জন্য হেলথ্ প্রমোশন ফাউন্ডেশন জরুরী। এই ফাউন্ডেশনের কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভিন্ন রোগের প্রতিকার ও প্রতিষেধক সম্পর্কে সমন্বিত প্রচার চালিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। তাছাড়া বিভিন্ন মরণব্যাধির বিস্তার রোধে গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি। সভায় জাতীয় সংসদের হুইপ শাহাব উদ্দিন বলেন, সমাজে ধূমপান যত বাড়বে মৃত্যুর মিছিল তত বড় হবে। ধূমপানের বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে পারলে ধূমপায়ীর সংখ্যা কমে আসবে। সংসদ সদস্য ডাঃ রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, সমাজে আজ ধূমপানের পাশাপাশি মাদকে গ্রাস করে ফেলেছে। স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েদের হাতে ব্যাপকভাবে মাদকের বিস্তার ঘটেছে। এ জন্য শুধু আইন দিয়ে ধূমপান নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। এ বিষয়ে হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন গঠন করে সকলকে সচেতন করতে হবে। সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম বলেন, মাদক ও ধূমপান সমাজের এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাদক ও ধূমপানমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠিত করতে না পারলে যতটুকু এগিয়েছে বাংলাদেশ ঠিক ততটুকু পিছিয়ে পড়বে। তাই এখনই এ নিয়ে ভাবতে হবে। মাদক ও ধূমপানের সর্বনাশা ক্ষতির বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সভায় উত্থাপিত মূল প্রবন্ধে বলা হয়, নেপাল, থাইল্যান্ড, ফিলিপিন্স, সুইজারল্যান্ড, আফ্রিকা, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াসহ পৃথিবীর ২৩ দেশে হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়েছে। যে ফাউন্ডেশন রোগ প্রতিরোধের পাশাপাশি জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নে গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা রাখছে।
×