ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আদেশ ২১ সেপ্টেম্বর

যুদ্ধাপরাধী বিচার ॥ করিমগঞ্জের ৫ রাজাকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষ

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫

যুদ্ধাপরাধী বিচার ॥ করিমগঞ্জের ৫ রাজাকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের পাঁচ রাজাকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি রবিবার শেষ হয়েছে। আগামী ২১ সেপ্টেম্বর আদেশ দেয়ার দিন ধার্য করা হয়েছে। অন্যদিকে, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে নেত্রকোনার রাজাকার কমান্ডার মোঃ ওবায়দুল হক তাহের ও আতাউর রহমান ননীর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের ১৭তম সাক্ষী মোঃ আবুল কাশেম জবানবন্দী প্রদান করেছেন। জবানবন্দী শেষে আসামি পক্ষের আইনজীবী সাক্ষীকে জেরা করেছেন। পরবর্তী সাক্ষীর জন্য ১৫ সেপ্টেম্বর দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ রবিবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। ট্রাইব্যুনালে অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক। কিশোরগঞ্জের পাঁচ রাজাকারের বিরুদ্ধে অভিযোগের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। আদেশ অভিযোগ আমলে নিবে কি নিবে না সে বিষয়ে আদেশ প্রদান করা হবে ২১ সেপ্টেম্বর। ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। একই মামলার পাঁচ আসামির মধ্যে গ্রেফতার রয়েছেন এ্যাডভোকেট শামসুদ্দিন আহমেদ। পলাতক চারজন হচ্ছেন শামসুদ্দিনের সহোদর সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন মোঃ নাসিরউদ্দিন আহমেদ, গাজী আব্দুল মান্নান, হাফিজ উদ্দিন ও আজহারুল ইসলাম। রবিবার অভিযোগ গঠনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন। আসামিপক্ষে শুনানি করেন শামসুদ্দিনের আইনজীবী মোহাম্মদ আতিকুর রহমান ও পলাতক চার রাজাকারের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আব্দুস শুকুর খান। গত ১৩ মে পাঁচ রাজাকারের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, আটক, লুণ্ঠন, নির্যাতনসহ সাতটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। আসামিরা কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ থানার বিদ্যানগর, আয়লা, ফতেরগুপ বিল, পীরাতন বিল ও আশপাশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে এসব মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের বিষয়ে প্রসিকিউশনের পক্ষে ৪০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। ননী, তাহের ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে নেত্রকোনার রাজাকার কমান্ডার মোঃ ওবায়দুল হক তাহের ও আতাউর রহমান ননীর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের ১৭তম সাক্ষী মোঃ আবুল কাশেম জবানবন্দী প্রদান করেছেন। জবানবন্দী শেষে আসামি পক্ষের আইনজীবী সাক্ষীকে জেরা করেছেন। পরবর্তী সাক্ষীর জন্য ১৫ সেপ্টেম্বর দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। চেযারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আদেশ প্রদান করেছেন। জবানবন্দীতে সাক্ষী বলেন রাজাকাররা বদিউজজামানসহ আটককৃত পাঁচ জনকে ধরে নিয়ে নির্যাতন শেষে গুলি করে হত্যা করে। সাক্ষীকে জবানবন্দীতে সহায়তা করেন প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান বাদল। আর আসামি পক্ষের আইনজীবী আব্দুস সুবহান তরফদার সাক্ষীকে জেরা করেন। সাক্ষী তার জবানবন্দীতে বলেন, আমার নাম মোঃ আবুল কাশেম। আমার বর্তমান বয়স আনুমানিক ৫৫ বছর। আমার ঠিকানা গ্রাম জয়নগর, থানা ও জেলা নেত্রকোনা। আমি নেত্রকোনা শহরে প্যাথলজিক্যাল সরঞ্জামাদির ব্যবসা করতাম। ১৯৭১ সালে আমি নেত্রকোনার আঞ্জুমান হাই স্কুলের ষষ্ট শ্রেণীর ছাত্র ছিলাম। ১৯৭১ সালের ১৫ নবেম্বর আনুমানিক বেলা একটার দিকে আমি নেত্রকোনা শহরে আসি। শহরে ডাক-বাংলোর কাছে গিয়ে দেখি সেখানে কিছু লোককে ধরে এনে রাজাকাররা নির্যাতন করছে। আটক নির্যাতিত ৪Ñ৫ জনের মধ্যে একজন ছিলেন বদিউজ্জামান মুক্তা। তার শরীর থেকে রক্ত ঝরছিল। এবং সে জয়বাংলা বলে চিৎকার করছিল। রাজাকারদের মধ্যে একজনকে চিনতে পেরেছিলাম তার নাম আতাউর রহমান ননী। এই অত্যাচারের দৃশ্য দেখে আমি সহ্য করতে না পেরে বাড়িতে ফিরে আসি। রাতে গোলাগুলির আওয়াজ শুনতে পাই। পরদিন জানতে পারি আটককৃত ওই লোকজনকে গুলি করে মেরে ফেলা হয়েছে।
×